শিশুদের অত্যধিক স্থূলতার সমস্যার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে পারিবারিক পরিবেশের

শ্রীরূপা বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশিত: 25/03/2022   শেষ আপডেট: 25/03/2022 9:23 p.m.

আমেরিকার গবেষকরা আলো ফেললেন অজানা তথ্যে

স্বাস্থ্যবান (healthy), মোটাসোটা বাচ্চা কোন বাবা–মা না চান? কিন্তু শিশু (child) যদি হয় অত্যধিক স্থূলতার (obesity) শিকার? অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়ার জন্য যদি ব্যাহত হতে থাকে তাদের শারীরবৃত্তীয় কাজকর্ম? তাহলে তো বিপদ। ইদানীং এমন বিপদে পড়তে হচ্ছে অনেককেই৷ ইউরোপ, আমেরিকার ধনী দেশগুলোতে তো বটেই, আজকাল শিশুদের অত্যধিক স্থূলতার সমস্যা ভারতের (India) মতো দেশেও বড়সড় আকার নিয়েছে৷ সম্প্রতি এই সমস্যা রুখতে সম্পূর্ণ নতুন একটি দিকে আলোকপাত করলেন আমেরিকার বিজ্ঞানীরা৷

পেনসিলভানিয়ার রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন ক্যাম্পাস যেটি ‘ইউনিভার্সিটি পার্ক’ নামে পরিচিত, সেখানকার গবেষকরা সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখিয়েছেন, জন্মের পর থেকেই শিশু যদি সুন্দর পারিবারিক পরিবেশে বড় হওয়ার সুযোগ পায়, তাহলে তার অত্যধিক মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে৷

সেখানকার ‘পেডিয়াট্রিক্স’ পত্রিকায় গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে ‘ফ্যামিলি সাইকোসোশ্যাল অ্যাসেট্স, চাইল্ড বিহেভিয়োরাল রেগুলেশন অ্যান্ড ওবেসিটি’ নামে একটি প্রবন্ধ৷ ব্র্যান্ডি রলিন্স ও লরি ফ্রান্সিস নামে দু’জন অধ্যাপক–গবেষক এক হাজার জোড়া মা ও শিশুর ওপর পরীক্ষা–নিরীক্ষা চালিয়ে দেখেছেন, সুষ্ঠু পারিবারিক পরিবেশ, মায়ের কাছ থেকে পাওয়া স্নেহের উষ্ণতা এবং শিশুর নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা– এই বিষয়গুলি বাচ্চাদের অত্যধিক মোটা হয়ে পড়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়৷

প্রবন্ধটিতে তাঁরা লিখেছেন, শিশুদের পালন করার পদ্ধতি নিয়ে যে সব গবেষণা হয়েছে তাতে জানা গেছে, সুন্দর পারিবারিক পরিবেশ (positive parenting) থেকে ছোট্ট ছোট্ট মণিমুক্তোর মতো আবেগজাত যেসব সম্পদ শিশুরা পায় তা শুধু তাদের আচার–আচরণের ওপর প্রভাব ফেলে তাই নয়, পড়াশোনা (education) ও কেরিয়ারে সাফল্য ইত্যাদিও সেগুলির ওপর নির্ভর করে৷ এবং অবাক লাগলেও সত্য, ওই পারিবারিক সম্পদগুলি শিশুদের স্বাস্থ্যও নিয়ন্ত্রণ করে৷ রলিন্স ও ফ্রান্সিসের মতে, পরিবারে দারিদ্র্যের মতো সমস্যা থাকলে তা হয়তো সহজে দূর করা যায় না, কিন্তু মা–বাবারা যদি সত্যিই চান, তাহলে বাড়ির পরিবেশ তাঁরা সুস্থ ও সুন্দর করে গড়ে তুলতে পারেন৷ চাইলে স্নেহ–ভালোবাসা, আবেগের ওম দিয়ে ঘিরে রাখতে পারেন সন্তানদের৷ কিন্তু তার জন্য চাই সঠিক প্রস্তুতি৷

গবেষকরা (researchers) বলেছেন, কীভাবে ভালো মা–বাবা হওয়া যায়, সুন্দর করে তোলা যায় বাড়ির পরিবেশ, সেটাও একটা শেখার বিষয়৷ তাই এঁদের মতে, স্বাস্থ্য নিয়ে কাজ করেন যে সব মানুষ, ভালো বাবা–মা গড়ে তোলার কাজে পরিবারগুলিকে তাঁদের সাহায্য করা উচিত৷ এতে শুধু অত্যধিক স্থূলতার মতো সমস্যা কমবে তাই নয়, শিশুরা একটা সুন্দর জীবনের খোঁজও পাবে যা তাদের পরিপূর্ণ বিকাশে সাহায্য করবে৷