সমস্ত বাধা বিপত্তিকে দূরে সরিয়ে ১৫ বছরের রিকশাচালকের কন্যা বর্তমানে একজন ইন্টারনেট সেন্সেশন

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 12/12/2021   শেষ আপডেট: 12/12/2021 11:07 p.m.
সানিয়া মিস্ত্রি https://instagram.com/saniya_mq

কিভাবে নিজের সকল স্বপ্ন সফল করল এই ৱ্যাপার জানুন

১৫ বছরের একটি ছোট্ট মেয়ের সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় একজন ৱ্যাপার হয়ে ওঠার জার্নি রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছে সকলের মনে। মুম্বাইয়ের গভান্দি এলাকার এক গরিব রিকশাচালকের কন্যা সানিয়া মিস্ত্রি সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের একটা আলাদা পরিচয় তৈরি করে ফেলেছে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই। বর্তমানে সানিয়া একাদশ শ্রেণীতে পড়াশোনা করছে এবং গত তিন বছর ধরে সে ৱ্যাপ সঙ্গীতের চর্চা করে আসছে। তার বাবা একজন রিকশাচালক এবং মা বিভিন্ন বাড়িতে কাজ করে সংসার চালান। এই মেয়েটির কাছে নিজস্ব কোন স্মার্টফোন অবধি নেই। বন্ধুদের সাহায্য নিয়ে তাদের ফোন ব্যবহার করেই চলে তার ইউটিউবের সফর।

তবে তার ৱ্যাপার হয়ে ওঠার যাত্রাটাকে আরও বড় করে তোলে তার অদম্য জেদ এবং সমস্ত সমস্যাকে দূরে ঠেলে দিয়ে তার এগিয়ে যাওয়ার ক্ষমতা। অত্যন্ত গরীব একটি পরিবারের কন্যা হলেও কোনদিন দারিদ্রকে নিজের যাত্রাপথের অসুবিধা হিসেবে মনে করেনা সানিয়া। সব সময় মুখে হাসি নিয়ে তার কথায়, "হ্যা, আমি আরো অনেক বড় হতে চাই। আমার স্বপ্ন অনেক বড়ো হবার। এবং আমি আশা করি, ভগবানের কৃপায় আমার স্বপ্নগুলো পূরণ হবে।" সানিয়া জানিয়েছে, তার বাবা-মা দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে জানতেনই না তার মেয়ে কী করছে।

সানিয়ার কথায়, " ভারতের অনেকেই জানেন না এই ৱ্যাপ সঙ্গীত আসলে কি। তাই আমি ঠিক করি আমি সকলকে এই ৱ্যাপ সঙ্গীতের ব্যাপারে জানাবো। আমি এই ধরনের ৱ্যাপ সংগীতের চর্চা করে সকলকে জানাতে চেয়েছিলাম এই ধরনের সংগীত আসলে কি, পশ্চিমে এই ধরনের সংগীতকে কেন এতটা সমীহ করা হয় এবং আমি কেন এই ধরনের সংগীত বেশি পছন্দ করে থাকি। তবে পরবর্তীতে শুধু আমি নই, আমার মা-ও এই সংগীতের একজন ভক্ত হয়ে উঠেছেন। কিন্তু তারপরে আমার মাথায় চিন্তা আসে, দুনিয়া আমার এই সংগীতের চর্চাকে ভালোভাবে নেবে নাকি না?"

সানিয়া আরো বলছে, " বর্তমানে শুধুমাত্র আমার মা বাবা নন, আমার স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারা, বন্ধুরাও এই ধরনের সংগীত খুব পছন্দ করে থাকে।" ইনস্টাগ্রামে 'Saniya_mq' ইউজারনেম ব্যবহার করে সানিয়া তার মায়ের ফোনে একটা ইন্সটাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলেছে, যেখানে ফলোয়ার সংখ্যা বাড়ছে রীতিমতো হু হু করে। ইনস্টাগ্রামে তার মেয়ের জনপ্রিয়তা দেখে সানিয়ার মা অত্যন্ত খুশি। সানিয়ার সব থেকে ভালো বন্ধু নাসরিন আনসারী জানাচ্ছে, "যখন সানিয়া প্রথমবারের জন্য স্টেজে পারফরম্যান্স দিল তখন আমি ওর মাকে ওর পারফরম্যানসের ব্যাপারে জানিয়েছিলাম। প্রথম প্রথম চারিদিকের ভিড় দেখে ওর মা অত্যন্ত ঘাবড়ে গিয়েছিলেন। কয়েকজন কিছু বাঁকা মন্তব্যও করেছিলেন। কিন্তু যখন সানিয়া গান গাওয়া শুরু করলো তখন অনেকেই বুঝতে শুরু করলেন ধারাভী এলাকা থেকে আরো একজন ৱ্যাপার এসেছেন। পরবর্তীতে সানিয়া সকলকে নিজের গানের মাধ্যমে মুগ্ধ করে।"