আজ ২২ শে শ্রাবণ, রবিঠাকুরের ৮১ তম প্রয়াণ দিবসে কিছু কথা...

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 08/08/2022   শেষ আপডেট: 08/08/2022 6:08 p.m.
By Unknown author - State Archive, Public Domain, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=47866012

১৯৪১ সালের ৭ অগস্ট অমৃতলোকে বিলীন হয়ে যান বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

পঁচিশে বৈশাখ আর বাইশে শ্রাবণ - বাঙালির বাংলা ক্যালেন্ডার এবং বাঙালির মনে বিশেষ স্থান রাখে। একটি দিন জন্মের আর একটি মৃত্যুর। আর এ দু’টো দিন মানেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আজ ২২ শ্রাবণ। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৮১ তম প্রয়াণ দিবস। বাংলা সাহিত্য ও কাব্যগীতির শ্রেষ্ঠ স্রষ্টা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আর এই বাইশে শ্রাবণ বিশ্বব্যাপী রবীন্দ্র ভক্তদের কাছে একটি শূন্য হবার দিন। রবীন্দ্র কাব্য-সাহিত্যের বিশাল একটি অংশে যে পরমার্থের সন্ধান করেছিলেন সেই পরমার্থের সঙ্গে তিনি লীন হয়েছিলেন এইদিন। মৃত্যুর দিন সাতেক আগে মুখে মুখে ডিক্টেশন দেওয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়েছিল তাঁর শেষ লেখা-

'তোমার সৃষ্টির পথ রেখেছ/ আকীর্ণ করি বিচিত্র ছলনাজালে/ হে ছলনাময়ী...'

'মরণ রে তুহু মম শ্যাম সমান', ভানুসিংহের পদাবলীতে মৃত্যুকে এভাবেই বন্দনা করে গিয়েছিলেন তিনি। ১৯৪১ সালের ৭ অগস্ট, বাংলায় ১৩৪৮ সালের ২২ শে শ্রাবণ অমৃতলোকে বিলীন হ‌ওয়ার দিন, আর দুকূল ছাপিয়ে বর্ষা আসার দিন রবীন্দ্রপ্রেমীদের চোখে। ১২৬৮ সনের ২৫ বৈশাখ (ইংরেজিতে ১৮৬১ সালের ৭ মে) পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার জোড়াসাঁকোর ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর ও মা সারদাসুন্দরী দেবী। প্রথাগত শিক্ষায় বিশ্বাস ছিল না তাঁর। বাড়িতেই গ্রহণ করেছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা। একাধারে কবি, ঔপন্যাসিক, গল্পকার, নাট্যকার, সংগীতজ্ঞ, প্রাবন্ধিক, দার্শনিক, ভাষাবিদ ও চিত্রশিল্পী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য প্রতিভার উন্মেষ ঘটে শৈশবেই।

তাঁর গুণের গন্ডী রাজ্য, দেশ ছাপিয়ে পৌঁছেছিল আন্তর্জাতিক মহলেও। উপন্যাস, নাটক, সংগীত, প্রবন্ধ, চিত্রকলা বা দর্শন— সাহিত্যের এমন কোনো শাখা নেই যেখানে বিচরণ করেননি রবীন্দ্রনাথ। ১৮৭৪ সালে ‘তত্ববোধিনী পত্রিকা’য় তাঁর প্রথম লেখা কবিতা ‘অভিলাষ’ প্রকাশিত হয়। ১৯১০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর কাব্যগ্রন্থ ‘গীতাঞ্জলি’। এরজন্য ১৯১৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। কথিত আছে, রবীন্দ্রনাথের লেখার প্রধান উপজীব্য ছিল জীবনানুভূতি। তিনি মুক্ত শিক্ষায় বিশ্বাসী ছিলেন, প্রতিষ্ঠা করেছিলেন বিশ্বভারতী। জীবদ্দশায় রচনা করেছিলেন দুই হাজারের বেশি গান। তাঁর রচিত 'জনগনমন' ভারতের জাতীয় সঙ্গীত এবং 'আমার সোনার বাংলা' বাংলাদেশের। যথাযোগ্য মর্যাদায় দুই দেশের‌ই নানান প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন কর্মসূচি গ্রহণ করে থাকে প্রতিবছর।

জানিয়ে রাখি, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রকাশিত মৌলিক কবিতাগ্রন্থ হচ্ছে ৫২টি, উপন্যাস ১৩ টি, ছোটগল্পের বই ৯৫ টি, প্রবন্ধ ও গদ্যগ্রন্থ ৩৬ টি, নাটকের বই ৩৮ টি। কবির মৃত্যুর পর ৩৬ খণ্ডে ‘রবীন্দ্র রচনাবলী ’ প্রকাশ পায়। এছাড়াও ১৯ খণ্ডের রয়েছে ‘রবীন্দ্র চিঠিপত্র।’ ১৯২৮ থেকে ১৯৩৯ পর্যন্ত কবির আঁকা চিত্রকর্ম’র সংখ্যা আড়াই হাজারেরও বেশি। এর মধ্যে ১৫৭৪ টি চিত্রকর্ম শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্রভবনে সংরক্ষিত আছে।