৮ বছরে সর্বোচ্চ, এপ্রিলে দেশের খুচরা মূল্য বৃদ্ধির পরিমাণ দাঁড়ালো ৭.৭৯%

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 12/05/2022   শেষ আপডেট: 12/05/2022 9:26 p.m.

এই মূল্যবৃদ্ধিকে আটকাতে রিজার্ভ ব্যাংক কি পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেটাই এখন দেখার

মাত্রাহীন মূল্যস্ফীতির জেরে নাভিশ্বাস উঠেছে মধ্যবিত্ত সাধারণ মানুষের। লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছে জিনিসপত্রের দাম। তার মধ্যেই একটি নতুন পরিসংখ্যান সামনে এসেছে যা ভারতের বর্তমান পরিস্থিতির চিত্রটাকে আরও খারাপ ভাবে সামনে আনছে। নতুন পরিসংখ্যানে জানা যাচ্ছে, শুধুমাত্র এপ্রিল মাসেই ভারতের খুচরা মূল্য বৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৭৯%। চার বছরে এটি এখনো পর্যন্ত সবথেকে বড় রেকর্ড। এই রেকর্ড দেখে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরাও। এতদিন পর্যন্ত আরবি আইএর কনজ্যুমার প্রাইস বেস বা CP নির্ভর মূল্যস্ফীতির যে হিসাব তা বিপদসীমার ঊর্ধ্বে উঠে গিয়েছিল। আর এবারে পাল্টা অস্বস্তি বাড়তে শুরু করেছে খুচরা মূল্যবৃদ্ধি। সমীক্ষাতে জানা যাচ্ছে, বিগত মার্চ মাসের তুলনায় মূল্যস্ফীতি এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ১ শতাংশের কাছাকাছি। গত মার্চ মাসে মূল্যস্ফীতি পরিমাণ ছিল ৬.৯৫ শতাংশ। অন্যদিকে এপ্রিল মাসে এই মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৭৯ শতাংশে। মূল্যবৃদ্ধি দেখা গিয়েছে খুচরো এবং পাইকারি বাজারেও।

দেশের সর্বোচ্চ ব্যাংকের সংস্থার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (RBI) সাম্প্রতিককালে মূল্যস্ফীতিকে সামাল দিতে বৃদ্ধি করেছে রেপো রেট। কিন্তু তাতে মূল্যস্ফীতি আটকানোর কোনো লক্ষণ দেখা যাবে কি? আরবিআই-এর সাংবাদিক সম্মেলনে গভর্নর শক্তিকান্ত দাস (Shaktikanta Das) মূল্যস্ফীতির কথা স্বীকার করে নিয়েছিলেন। সেই মূল্যস্ফীতিকে আটকাতেই রেপো রেট বৃদ্ধি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর বি আই। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া নির্ধারিত মুদ্রাস্ফীতির বিপদসীমা যে অনেকটা ছাড়িয়ে গিয়েছে, সেটাও নতুন পরিসংখ্যানে স্পষ্ট।

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত এবং নানা রাজনৈতিক কারণে মুদ্রাস্ফীতির হার ত্বরান্বিত হয়েছে বলে স্বীকার করেছিলেন আর বি আই গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। বাস্তবেই রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের কারণে দেশের আর্থিক এবং বাণিজ্যিক বেশ কিছু ক্ষতি হয়েছে। কিন্তু সেই ক্ষতি থেকে দেশ কিভাবে ঘুরে দাঁড়ায় সেটাই এখন দেখার। তবে, মুদ্রাস্ফীতি প্রকোপ খুব একটা সহজে কাটবে না বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। দেশে একদিকে টাকার দাম কমতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে এক ডলারের তুলনায় টাকার দাম প্রায় ৭৭ টাকার নিচে চলে গেছে। এর ফলে একদিকে যেমন বৃদ্ধি পাবে জ্বালানির দাম, তেমনি কিন্তু বৃদ্ধি পাবে আমদানিকৃত কাঁচামালের ভিত্তিতে প্রস্তুত সামগ্রীর দাম। সব মিলিয়ে সাধারণ মানুষের জন্য জীবনটা খুব একটা সহজ হবে বলে মনে হচ্ছে না।