২৬ এপ্রিল, ২০২৪
শিক্ষা

দ্বি-শতবর্ষে ঈশ্বর!

তাঁর সাদামাটা জীবন তার কাজকে প্রভাবিত করেনি। নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন আজীবন ইতিবাচক কাজের মধ্যে।
Ishwar Chandra Vidyasagar Bengali News
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর Von Künstler/-in unbekannt - Scanned from Vidyasagar University Prospectus, Gemeinfrei, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=42468887
prithwish
পৃথ্বীশ ব্যানার্জী
প্রকাশিত: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০
শেষ আপডেট: ৪ এপ্রিল ২০২১ ৬:২৭

কবিগুরু যার সম্পর্কে বলেছেন- 'দয়া নহে, বিদ্যা নহে, তার চরিত্রের প্রধান গৌরব ছিল তাঁর অজেয় পৌরুষ, তাহার আশ্চর্য মনুষ্যত্ব'। হ্যাঁ, তিনি বাংলার গর্ব পন্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। ১৮২০ খ্রীস্টাব্দের ২৬শে সেপ্টেম্বর মেদিনীপুরের বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র জন্মগ্রহণ করেন। এই বছর অর্থাৎ ২০২০ সাল হল এই মহামানবের দ্বি-শততম জন্ম বার্ষিকী।

কবি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের, 'বিদ্যাসাগর' কবিতায় তিনি লিখেছেন-

"অ আ ক খ লিখেই যিনি
অমর বঙ্গদেশে
তিনি যেতেন সবখানেতে
ধুতি চাদর বেশে।"

তাঁর এই সাদামাটা জীবন তার কাজকে প্রভাবিত করেনি। নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন আজীবন ইতিবাচক কাজের মধ্যে। সব থেকে উল্লেখযোগ্য হল শিক্ষা ব্যবস্থা। তাঁর পরিকল্পিত শিক্ষা ব্যবস্থার দুটি দিক-

  • প্রাথমিক শিক্ষার বিকাশ
  • স্ত্রী শিক্ষার প্রসার

প্রাথমিক শিক্ষা বিকাশের জন্য যেসব সুপারিশ তিনি করেছিলেন তা হল-

  • শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন; সমাজ-বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানের বিভিন্ন বিষয়গুলোর ওপর জোর দিয়েছিলেন;
  • মডেল স্কুল স্থাপনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন, যেখানে একজন প্রধান শিক্ষক ও দুজন করে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের প্রস্তাব রেখেছিলেন। বিদ্যালয়গুলোর অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য প্রতি দুটি করে জেলার জন্য একজন করে পরিদর্শক নিয়োগের কথাও তিনি বলেন এবং তিনি এও বলেন সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ অবৈতনিক ভাবে পরিদর্শকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করবেন।
  • বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজকর্মের জন্যে তিনি সার্কেল ব্যবস্থার সুপারিশ করেন; দেশে ভালো শিক্ষকের অভাবকে অনুভব করে, তিনি শিক্ষক-শিক্ষনের জন্য নর্মাল স্কুল স্থাপনের প্রস্তাব রেখেছিলেন।
Ishwar Chandra Vidyasagar House Bengali News
বীরসিংহ গ্রামে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের জন্মস্থান Sumasa - নিজের কাজ কর্তৃক, সিসি বাই-এসএ ৪.০, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=92311443

নারী শিক্ষা বিস্তারে বিদ্যসাগর যে অবদান রেখে গেছেন তা স্মরণ করতে গিয়ে বলতে হয়- তাঁর সহায়তায় বেথুন সাহেব ১৮৪৯ খ্রীস্টাব্দের ৭ই মে বিনা বেতনের একটি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন। পরবর্তী কালে বিদ্যাসাগর সেই বিদ্যালয়েরই অবৈতনিক সম্পাদক হয়েছিলেন এবং পরিচিতদের কাছে তাদের কন্যা সন্তানদের সেই বিদ্যালয়ে ভর্তির অনুরোধ জানান। বিদ্যসাগরই প্রথম বলেছিলেন- "কন্যা পেবং পালনীয়া, শিক্ষানীয়াতি যত্নতে।"- যার অর্থ কন্যাকেও পুত্রের মতো পালন এবং শিক্ষাদান করবে। তিনি শহরের মধ্যবিত্ত সমাজেই নয়, গ্রাম বাংলায় স্ত্রী শিক্ষা বিস্তারের জন্য নিজেকে নিয়োজিত রেখেছিলেন। তার উদ্যোগেই ১৮৫৭ খ্রীস্টাব্দে জৌ-গ্রামে মেয়েদের জন্য বিদ্যালয় স্থাপিত হয় এবং তিনি বাংলায় সর্বমোট ৩৮ টি বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন।

শিক্ষা প্রসারের সঙ্গে সঙ্গে বাংলা সাহিত্যেকেও সমৃদ্ধ করেছেন ঈশ্বর। তিনি অনুবাদমূলক যেসব গ্রন্থ রচনা করেছেন, সেগুলি হল- 'বেতাল পঞ্চবিংশতি' ও 'শকুন্তলা'। তার মৌলিক গ্রন্থগুলো হল- 'বর্ণপরিচয়', 'বোধদয়', 'কথামালা'। সামাজিক বিষয়গুলো নিয়ে তিনি যে বইগুলি লিখেছেন সেগুলো হল- 'বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব', 'বিধবা বিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা এতদ্বিষয়ক প্রস্তাব।'

ishwar-chandra-vidyasagar-Barnaparichay Bengali News
১৯৩৫ সংবৎ (১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দ)-এ প্রকাশিত বর্ণপরিচয় গ্রন্থের ৫৩তম সংস্করণ মূল আপলোডকারী ছিলেন বাংলা উইকিপিডিয়া-এর Jonoikobangali - bn.wikipedia থেকে কমন্সে স্থানান্তরিত করা হয়েছে Jayantanth কর্তৃক CommonsHelper ব্যবহার করে। কর্তৃক, পাবলিক ডোমেইন, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=9072034

কবি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্য তাঁর কবিতায় বলেছেন, 'দান-ধ্যানেতেও কম তিনি নন, দয়ার সাগর প্রাণে'- অর্থাৎ এই প্রসঙ্গে বলা হয় বিদ্যাসাগরের অপার পান্ডিত্য ও সমাজ কল্যাণমূলক কাজকর্ম ছাড়াও তিনি যে অনন্য পরিচিতি বহন করেন তা হল "দয়ার সাগর" রূপে। বাংলার প্রবাদ প্রতিম সাহিত্যিক মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রবাসে অর্থকষ্টের সময়ে বন্ধু হয়ে অর্থ সাহায্য করে গেছেন ঈশ্বর চন্দ্র। কৃতজ্ঞতা স্বীকার করে তাই মধুসূদন কবি বিদ্যাসাগরের উদ্দেশ্যে লিখেছিলেন-

"নমি পায়ে কব কানে,অতি মৃদুস্বরে,
বেঁচে আছে আজু দাস তোমার প্রাসাদে।
অচিরে ফিরিব পুন হস্তিনানগরে
কেড়ে লব রাজ্যপদ তব আশীর্বাদে।"


কৃতজ্ঞতা স্বীকার:

  • মিঠুন রায়, প্রয়াস পত্রিকা
  • উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বিজ্ঞান
    • ড. দেবাশিস পাল
    • ড. সুশান্ত রায়
  • সুকন্যা রায়, সাহিত্যিক ও শিক্ষক

আরও খবর

বিজ্ঞাপন দিন

[email protected]

১৯ এপ্রিল

চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল প্রায় ৯ লক্ষ ২৩ হাজার

Student books
৬ ফেব্রুয়ারি

১৬ ফেব্রুয়ারি থেকে চলতি বছরের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে

High school students
৩ নভেম্বর

'ফিল্ম স্টাডিজ' বিষয়ে আগ্রহী হলে জানুন এই কোর্স সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য

Nsou
১ নভেম্বর

নিরাপত্তা বেষ্টনীতে হতে চলেছে জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা

Examination
৭ অক্টোবর

ঢাঁকে কাঠি পড়তে আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। তার আগেই এমসিকেভির এমন সৃষ্টিশীল আয়োজন, মন মাতিয়ে তুলল "যুব"দের। সাক্ষী থাকল পরিদর্শক।

mckv-howrah-admission
১৫ আগস্ট

হাওড়ার লিলুয়ার একটি জনপ্রিয় স্কুল এমসিকেভি। সেই স্কুলেই সাড়ম্বরে পালিত হল দেশের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস।

MCKV School Howrah Liluah
৯ আগস্ট

ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে শিক্ষা দফতরের সঙ্গে বৈঠক করে ফেলেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ

High school students
৮ আগস্ট

প্রথম ভাষা ও দ্বিতীয় ভাষা হিসাবে বাংলা ও ইংরেজি নিতেই হবে

Junior school student
৩০ জুলাই

শুধু সাংবাদিকতা নয়, অন্য দুটি বিষয়েও হবে নিয়োগ, জানুন শীঘ্রই

Rabindra Bharati University
১৯ মে

মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে যুগ্ম তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে মাহির হাসান

High school students
১৫ মে

আজ থেকেই শুরু হল জুলাই ২০২৩ বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া

Student books
১৫ মে

চলতি বছর পরীক্ষায় বসেছে ৮ লক্ষ ৬০ হাজারেরও বেশি পড়ুয়া

High school students
১৪ মার্চ

বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে

office desk job