টলিপাড়ার 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম' আদলে চলছে 'শ্যুট ফ্রম হোম', টেকনিশিয়ান ও মেকাপ আর্টিস্টেদের ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 29/05/2021   শেষ আপডেট: 29/05/2021 1:45 p.m.
টেকশিয়ান স্টুডিও instagram.com/chowdhury_saheb_official

টলিপাড়ায় ফের ফেডারেশন এবং প্রযোজক সংস্থার সঙ্গে সংঘাতের পরিবেশ

লকডাউনের (Lockdown) জেরে টলিপাড়ায় 'ওয়ার্ক ফ্রম হোম'-এর মতোই চালু হয়েছে 'শ্যুট ফ্রম হোম'। এতে বাদ গেছেন টেকনিশিয়ান থেকে শুরু করে জুনিয়র আর্টিস্টরা। পরিচালকরা (Director) বাড়ি বসে নির্দেশ দিচ্ছেন, আর সেই মোতাবেক অভিনেতা-অভিনেত্রীরা (Artist) 'ওয়ান-টু অ্যাকশন' বলেই লেগে পড়ছেন অভিনয় করতে। সেগুলোই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে এডিটরের কাছে। সেখানে কাটছাটের পর সরাসরি চলে যাচ্ছে চ্যানেল গুলোতে। এরফলেই নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে টলিপাড়ায়। এইভাবে বিভিন্ন সিরিয়ালের কাজ চলছে বলে অভিযোগ। এতে কাজ হারাচ্ছেন টেকনিশিয়ান, মেকাপ আর্টিস্ট থেকে শুরু করে জুনিয়র আর্টিস্টরা।

রাজ্যে কোভিডের বাড়বাড়ন্তে লকডাউন চলছে। জরুরি পরিষেবা ছাড়া বাকি সমস্ত কাজ বন্ধ। লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়েছে টলিপাড়ার শ্যুটিং। কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এমন অবস্থায় শ্যুট ফ্রম হোম চলতে থাকলে কয়েক হাজার মানুষ বিপদে পড়বেন বলে আশঙ্কা করছেন একাংশ। যদিও ফেডারেশন হাত গুটিয়ে বসে নেই। ফেডারেশনের সভাপতি স্বরূপ বিশ্বাসের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই চিঠি গিয়েছে প্রযোজকদের কাছে। জানতে চাওয়া হচ্ছে, ফেডারেশনের অনুমতি ও আলোচনা ছাড়া কেন তাঁরা বাড়ি থেকে শ্যুটিং করছেন। চিঠি গিয়েছে 'কৃষ্ণকলি', 'রাণী রাসমণি' আর 'বরণ' ধারাবাহিকের নির্মাতাদের কাছে।

যদিও কলাকুশলীদের একাংশ মনে করছেন এই ভাবে পুরো শ্যুটিং প্রক্রিয়া বন্ধ থাকলে ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে কীভাবে! ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় তো এমন ধারা চলছে। তাতে প্রশ্ন উঠেছে টেকনিশিয়ান, মেকাপ আর্টিস্ট ও জুনিয়র আর্টিস্টেদের ভবিষ্যত তাহলে কি? এ প্রশ্নের কোন সদুত্তর মেলেনি। জনপ্রিয় ধারাবাহিক 'কৃষ্ণকলি'-র প্রযোজক সুশান্ত দাস সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তিনি এখনও সে চিঠি হাতে পাননি। বাড়িতে বসেই নতুন এপিসোড তৈরি করা গেলে অন্তত ইন্ডাস্ট্রি বাঁচবে। প্রযোজক টাকা না পেলে অভিনেতা বা টেকনিশিয়ানদের কীভাবে টাকা দেবে? ফেডারেশনও তো আলোচনা করতে পারে আমাদের সঙ্গে এই পরিস্থিতিতে কীভাবে শ্যুটিংয়ে টেকনিশিয়ানদের নেওয়া যায়। শহর থেকে বাইরে গিয়ে বায়ো বাবেল তৈরি করেও তো কাজ করা যায়! আমরা সেটাও ভেবেছি। প্রযোজকরা শ্যুটিং করতে না পারলে, যাঁদের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে, তাঁদের মাস মাইনে কোথা থেকে দেবে? শ্যুটিং ফ্লোরের ভাড়াও তো আমাদের দিতে হয়। সেই টাকাই বা কোথায় পাব?

এমনকী লেখিকা ও প্রযোজক লীনা গঙ্গোপাধ্যায় শ্যুট ফ্রম হোমের পক্ষপাতী। যদিও টেকনিশিয়ান, মেকাপ আর্টিস্টেদের দিকটিও ভেবে দেখার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছেন একাংশ। এমন অবস্থায় এই জটিলতার সমাধান না হলে ফেডারেশনের সঙ্গে প্রযোজক সংস্থার সংঘাত চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছানোর আশঙ্কা করছেন ওয়াকিবহাল মহল।