প্রথমে মারধর, তারপর গায়ে আগুন, পণের দাবিতে খুনের চেষ্টা ক্যানিং-এ

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 14/04/2022   শেষ আপডেট: 14/04/2022 9:20 a.m.

ঘটনার পর পলাতক স্বামী ও শাশুড়ি, দায়ের হয়েছে মামলা

না, প্রেম নয়, দেখাশোনা করেই বিয়ে হয়েছিল বছর পাঁচেক আগে। কিন্তু বিয়ের পর একটি দিনের জন্য শান্তি পায়নি তাঁদের বাড়ির কন্যা। বিয়ের পর থেকেই চলত অকথ্য অত্যাচার। বিয়ের সময় সাধ্যমত পণ দিয়েও মেয়ের শ্বশুরবাড়ির ক্ষুধা মেটানো যায়নি। তাই আরও পণের দাবিতে বিয়ের পর থেকেই অনবরত চলত অত্যাচার। কেবল মানসিক অত্যাচার নয়, চলত শারীরিক অত্যাচারও। কিন্তু তার পরিণতি যে এই হতে পারে কে তা জানত!

ঘটনাস্থল দক্ষিণ ২৪ পরগণার ক্যানিং (Canning) এলাকার। সূত্রে খবর, বছর পাঁচেক আগে ক্যানিংয়ের দাঁড়িয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের রণিয়া গ্রামের হালিমা শেখের সঙ্গে বিয়ে হয় শাহজামাল লস্করের। শাহজামালের বাড়ি একই থানার গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ধর্মতলা। হালিমা শেখের বাপের বাড়ির লোকজনদের দাবি, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে তাঁদের মেয়ের উপর অত্যাচার চালানো হত। বেশ কয়েকবার বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু পরিণাম যে এমন ভয়াবহ হতে পারে, কে তা জানত!

এরমধ্যেই বিয়ের বছর খানেকের মাথায় হালিমার একটি সন্তান হয়। সন্তান হলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের অত্যাচার কমে না। প্রথম প্রথম শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হালিমা বাপের বাড়িতে গিয়ে থাকত। আবার কিছুদিন পর মোটামুটি সবকিছু ঠিকঠাক হলে শ্বশুরবাড়িতে চলে আসত। ফের শুরু হত অত্যাচার, এমনটাই অভিযোগ হালিমার বাপের বাড়ির লোকজনদের। হালিমার দুই সন্তান হয়ে যাওয়ার পরেও শ্বশুরবাড়ির সেই অত্যাচার কমেনি।

এরমধ্যেই বুধবার হালিমার বাপের বাড়ির লোকজনদের কাছে খবর আসে তাঁদের বাড়ির মেয়ে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তড়িঘড়ি হালিমার বাবার বাড়ির লোকজন এসে সবকিছু দেখে তো থ। হালিমার সারা শরীর অগ্নিদগ্ধ। গায়ে মাথায় আঘাতের চিহ্ন। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় সারা শরীর ভেজা। সূত্রের খবর, হালিমাকে প্রথমে খুব মারধর করা হয়। তারপর গায়ে কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে হালিমা পুকুরে ঝাঁপ দেয়। তখন হালিমার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পুকুরে নেমে তাকে চুবিয়ে মারার চেষ্টা করে। ঘটনার খবর চাউর হতেই চম্পট দেয় শাহজামাল। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে হালিমাকে। ঘটনার পর থেকে শাহজামাল এবং হালিমার শাশুড়ি পলাতক। ক্যানিং থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজ শুরু হয়েছে বলে সূত্রের খবর।