বৃদ্ধ তন্ত্রের উপর ভরসা সিপিএমের, কৃষক সংগঠনে পক্বকেশের প্রাধান্য নিয়ে প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 24/10/2021   শেষ আপডেট: 24/10/2021 11:09 p.m.
facebook.com/cpimcc

তিনদিনের টালবাহানার পরে আজকেই হাওড়া জেলা কৃষক সংগঠনের উচ্চপদে আসীন হলেন দুই সত্তরোর্ধ্ব নেতা, যা নিয়ে বিতর্ক দানা বেঁধেছে দলের অন্দরে

এতদিন পর্যন্ত প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের রেওয়াজ হলো গিয়ে প্রথমে গণ সংগঠনের দায়িত্ব সামলে তারপরে পার্টি দায়িত্ব সামলানো। কিন্তু কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা হচ্ছে একেবারে উল্টো। বৃদ্ধ তন্ত্রের কারণে রীতিমতো বাদ পড়ে যাওয়া সমস্ত নেতারা এবার ধীরে ধীরে গণসংগঠনের দায়িত্ব নিয়ে শুরু করেছেন যার ফলে ঘুরপথে বৃদ্ধ তন্ত্র শুরু হচ্ছে সিপিআইএম এর ক্ষেত্রে। প্রথমে সিটু এবং এবারে কৃষক সভার ক্ষেত্রেও এই একই বিষয় কাজ করতে শুরু করলো এবারে। এখনো পর্যন্ত কমিউনিস্ট পার্টি কোনভাবেই বৃদ্ধ তন্ত্র থেকে বের হতে পারল না। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া এক প্রাক্তন এবং বর্তমান জেলা সম্পাদক হয়ে গেলেন কৃষক সভার রাজ্য সম্পাদক এবং সভাপতি। এবং এর কারণে নতুন করে বিতর্কের মুখে পড়েছে সিপিএম।

উর্দ্ধতন নেতৃত্বের এরকম একটি ভূমিকার কারণে রীতিমতো বিতর্কের মুখে পড়েছে সিপিআইএম। প্রশ্ন উঠছে, দলীয় রীতিনীতিকে অমান্য করে শুধুমাত্র বৃদ্ধ নেতারা কেন দলীয় সংগঠনের উচ্চপদে আসীন হচ্ছেন? হাওড়া শরৎ সদনে তিনদিনের কৃষক সভা শেষ দিনে আলোচনা করা থেকে অনেকটা যেন বড় হয়ে উঠল এই সংগঠনের পদে থাকার দিকটা। তিন দিন ধরে চরম লবি বাজির কারণে সিপিআইএমের দলীয় সংগঠন প্রশ্নের মুখে পড়ল। শেষ পর্যন্ত হাওড়া জেলার কৃষক সভার সভাপতি হলেন সিপিআইএম সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার। সম্পাদক হলেন পার্টির বর্ধমান জেলার প্রাক্তন সম্পাদক যাদের দুজনের বয়স মোটামুটি ৭০ বছরের ওপরে।

অন্যদিকে, কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া আগেই জানিয়েছিল এবার থেকে পার্টি নেতৃত্বে ৭০ বছরের বেশি বয়সী কেউ আর থাকতে পারবেন না। কিন্তু, প্রশ্নটা উঠল এই হাওড়া জেলার কৃষকসভার পদে থাকা নিয়ে। পার্টি সিদ্ধান্তকে কোনরকম মান্যতা না দিয়ে সংগঠনের উচ্চপদে আসীন হয়ে গেলেন দুজন সত্তরোর্ধ্ব নেতা। পার্টির বৃদ্ধ নেতাদের ক্ষমতা দখলের ইচ্ছা দেখে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে পার্টির অন্যান্য নেতাদের মধ্যে। পার্টির অন্দরে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। অনেকের মতে, ছাত্র এবং যুব সংগঠনের জন্য কোনরকম সীমানা না থাকার কারণে বৃদ্ধরা এখনো পর্যন্ত দলের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিজেদের স্থান ধরে রেখেছেন। এর কারণে প্রভাব পড়েছে সিপিআইএমের সংগঠনের মধ্যেও। জানা যাচ্ছে এই বৃদ্ধ তন্ত্রের কারণে ইতিমধ্যেই দলের কর্মী সংখ্যা ১ কোটির কাছাকাছি কমে গিয়েছে। যার ফলে, আরো সমস্যার মধ্যে আসতে শুরু করেছে সিপিআইএম।