রাজ্যপালকে কড়া চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর, সরকারি আধিকারিকদের তলব নিয়ে সংঘাত তুঙ্গে

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 09/10/2021   শেষ আপডেট: 09/10/2021 1:48 p.m.
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জগদীপ ধনকর ~

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তাকে বেশ কড়া বার্তা দিয়েছেন যা নিয়ে চাপে পড়ে গেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের মধ্যে যে খুব একটা সুসম্পর্ক নেই সেটা সকলেই জানেন। রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে একটা যে সংঘাত রয়েছে সেটা শুধুমাত্র রাজ্য নয় রাজ্যের বাইরের অনেকের কাছেই জানা। সদ্য ভবানীপুর উপনির্বাচনে জয়ী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথ নিয়েও কিন্তু খুব একটা কম জল ঘোলা হয়নি। তবে শেষ পর্যন্ত বিধানসভায় গিয়ে তাকে শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবারে তাকে একটি কড়া বার্তা দিয়েছেন, যা নিয়ে রীতিমতো চাপে পড়ে গেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন, এবার থেকে তাকে না জানিয়ে রাজ্য প্রশাসনের কোন আধিকারিককে তলব করতে পারবেন না রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। আজকের এই কড়া চিঠিতে এই বার্তাটি তিনি একেবারে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। এই নিয়ে বেশ চাপে পড়ে গেছেন রাজ্যপাল। এমনকি রাজভবনের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকেও বসতে চলেছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর এই চিঠির বিষয়টি নিয়ে। তবে নবান্ন সূত্রে খবর, সম্প্রতি করোনাভাইরাস নিয়ে রাজ্যের কাছে তথ্য জানতে চাইছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এমনকি রাজ্যের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদিকে তিনি ডেকে পাঠিয়েছেন বলেও খবর। শুধু তাই নয়, তার ওই তলবে সাড়া না দিলে মুখ্যসচিবের উপরে দায় চাপানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।

তারপরেই এই বিষয়টি নিয়ে মাঠে নামলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সরাসরি একটি চিঠি লিখে মুখ্যমন্ত্রী মনে করিয়ে দিলেন, এরকম কাজ কিন্তু রাজ্যপাল করতে পারেন না। ফলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজভবন এবং নবান্নের মধ্যে যে টানাপোড়েন চলছিল সেটা আরো দীর্ঘ হতে চলেছে। রাজ্যপাল আজকে আরো একবার চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদিকে। বারবার চিঠি পাঠানো নিয়ে রীতিমতো বিরক্ত হয়ে উঠেছে নবান্ন কর্তৃপক্ষ। কারণ এই চিঠির কোন ভিত্তি নেই। এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, "রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের ডেকে পাঠানো রাজ্যপালের এক্তিয়ারভুক্ত নয়। তিনি চাইলে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যে কোন তথ্য জানতে চাইতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধান্ত নেবেন কোন আধিকারিককে পাঠাবেন রাজ্যপালের কাছে। রাজ্যপালের সম্মান রক্ষায় মাসে একবার রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে আধিকারিকরা তার কাছে গিয়ে কথা বলে আসতে পারেন। তবে রাজ্যপালের তলবের প্রেক্ষিতে তা হবে না।" মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছ থেকে এরকম একটি কড়া চিঠি পেয়ে চাপে পড়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এখন দেখা যাক, এই চিঠি চালাচালির পরে রাজ্যপাল এবং নবান্নের সম্পর্ক কি রকম দিকে এগোয়।