আমি ভালোবেসে রাজনীতিক নই, মন্ত্রিত্ব হারানোর পরেই স্বগতোক্তি বাবুলের

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 10/07/2021   শেষ আপডেট: 10/07/2021 10:42 p.m.
~ Twitter@BabulSupriyo

দিলীপ ঘোষের উপরে শ্লেষ বর্ষালেন ফেসবুকে

সদ্যই হলো মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়েছেন, কিন্তু তারপর থেকেই নেট মাধ্যমে প্রবলভাবে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন আসানসোলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়। ফেসবুক থেকে টুইটার সকল জায়গাতে তিনি তার নিদর্শন ছড়িয়ে গিয়েছেন। একটা সময় তিনি ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী কিন্তু এখন তিনি শুধুমাত্র একজন সাংসদ। তাই এই পদস্খলন হয়তো খুব একটা ভালো ভাবে মানতে পারছেন না বাবুল সুপ্রিয়। মন্ত্রিত্ব থেকে বাদ পড়ার পরেই সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি এই বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন। তারপর থেকে তার করা একের পর এক পোস্ট যেন বিজেপির বুকে একেবারে তীরের মত বিধঁতে শুরু করেছে। তার মধ্যেই এবার তিনি বদলে ফেলেছেন তার টুইটারের বায়ো।

এই বদলে যাওয়া নতুন টুইটারের বায়োতে বাবুল সুপ্রিয় লিখেছেন, "আমি ভালোবেসে রাজনৈতিক না। আমি রাজনীতিতে আছি কাজ করার জন্য। আমি সিঙ্গার বাই হার্ট, প্রাক্তন ব্যাংকার। ভারত সরকারের প্রাক্তন মন্ত্রী। আমি যা ভালোবাসি, তাতে আমি আমার হৃদয় এবং মস্তিষ্ক দুটোই দি। আমি রাজনীতিকে হৃদয় দিয়ে ভালোবাসি নি। বরং আমার ভালোবাসা হলো গাড়ি বাইক এবং পোষ্য।" শনিবার সকালে বাবুল সুপ্রিয় ফেসবুকে লিখেছেন, "কুচ তো লোগ কাহেঙ্গে... এই গানটা আমি ছোটবেলা থেকে ভালো গাই।" তার পাশাপাশি নিজের গাওয়া তোমরা যা বলো তাই বলো রবীন্দ্র সংগীত টি শেয়ার করেছেন বাবুল সুপ্রিয়। বেশ কয়েক দিনের মধ্যে একের পর এক পোস্ট করে তিনি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে কিছু বিশেষ বার্তা দিতে চাইছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ। একটা পোস্টে তিনি বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে আক্রমণ করছেন। আবার পুনরায় মন্ত্রিত্বে থাকার সময় তিনি কি কি করেছেন সেটা উল্লেখ করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে বাবুল সুপ্রিয় কে নিয়ে বেশ কিছুটা সমস্যার মধ্যে রয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি।

বুধবার সন্ধ্যেবেলা যখন বাবুল সুপ্রিয় মোদির মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে গেলেন তার পর থেকেই বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি কিছুটা খাপ্পা রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়। তার একাধিক ফেসবুক পোস্টে এই বিষয়টি একেবারে স্পষ্ট হয়ে গেছে। তিনি ফেসবুকে নিজেই জানিয়েছিলেন তাকে ইস্তফা দিতে বলা হয়েছে। এই মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে দিলীপ ঘোষ সরাসরি আক্রমণ করেন বাবুল সুপ্রিয় কে। তার বক্তব্যে খড়্গপুরের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, " তাকে যদি  বরখাস্ত করা হতো তাহলে কি ভালো হতো? ১২ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন কেউ তেমনটা লেখেননি।" দিলীপ ঘোষের এই কটাক্ষের পরে আবার বাবুল ফেসবুকে একের পর এক পোস্ট করতে শুরু করেছেন। সরাসরি দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষ করে বাবুল সুপ্রিয় লিখেছেন, " রাজ্য সভাপতি হিসেবে মনের আনন্দে দিলীপদা অনেক কিছু বলে থাকেন। উনি রাজ্য সভাপতি, আমাদের সকলের শ্রদ্ধার পাত্র। আমি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি প্রিয় দিলীপদাকে। "

যদি রাজ্য বিজেপির অন্দরে বাবুল সুপ্রিয় এবং দিলীপ ঘোষ এই দুজনের সম্পর্ক কিন্তু খুব একটা সুমধুর নয় এবং এই বিষয়টি মোটামুটি বিজেপির সকলেই জানেন। বাবুল ঘনিষ্ঠ শিবিরের লোকজন জানান তিনি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে অনেক বেশি স্বাচ্ছন্দ। আবার দিলীপ ঘোষের শিবিরের লোকজন বাবুলকে আবার খুব একটা পছন্দ করেন না। বিধানসভা ভোটের সময় প্রচারে দু'পক্ষের মধ্যে একটা টেনশনের চোরাস্রোত ছিল এবং এই বিষয়টি কারো নজর এড়ায়নি। বিধানসভা নির্বাচনে বাবুল সুপ্রিয় টালীগঞ্জের মত একটি কঠিন আসন থেকে হেরে গিয়েছেন। তারপর থেকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই দিলীপ শিবির যেন একেবারে চাঁচাছোলা আক্রমণ করতে শুরু করেছে বাবুল সুপ্রিয় কে।