১৩০০ জন রোগী আর ডাক্তার মাত্র ১, কঙ্কালসার চেহারা দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 15/05/2021   শেষ আপডেট: 15/05/2021 8:04 a.m.

বাংলায় বর্তমানে ডাক্তার এবং রোগীর অনুপাত খুবই খারাপ জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে

করোনাভাইরাস ইতিমধ্যেই ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করেছে সারা ভারতে। করোনাভাইরাস এর বিরুদ্ধে সবথেকে কঠিন সংগ্রামের মধ্যে পড়েছেন হয়তো ডাক্তার কমিউনিটি। স্টেথোস্কোপ গলায় ঝুলিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা পিপিই কিট পরে এই দুর্ধর্ষ গরমের মধ্যেও তারা মানুষের সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, এত সতর্কতার পরেও শনিবারে ডাক্তার মৃত্যুর সংখ্যাটা গিয়ে দাঁড়ালো ১২৬ এ। ইতিমধ্যেই গত ২৪ ঘন্টায় এই ভাইরাসের মরণ কামড়ে মারা গিয়েছেন আরো চারজন ডাক্তার। এর ফলে দেশের চিকিৎসকরা এখন অত্যন্ত চিন্তিত হয়ে পড়েছেন এই ভাইরাস কে নিয়ে। সম্প্রতি দেশে একটি চিত্র উঠে আসছে যেখানে ১১,০৮২ জন রোগীর জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র ১ জন ডাক্তার।

এই ছবিটাই প্রমাণ করে দিচ্ছে, ডাক্তারদের উপর ঠিক কতটা চাপ পড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও প্রায় একই অবস্থা, এখানে প্রতি ১৩৩০ জন রোগীর জন্য বরাদ্দ রয়েছে মাত্র একজন ডাক্তার। অন্যান্য রোগে চিকিৎসকেরা বর্তমানে চিকিৎসা করছে না রোগীদের। করোনা ভাইরাস একের পর এক ডাক্তারের প্রাণ কেড়ে নিচ্ছে। এই পরিস্থিতে অন্যান্য যে অসুখ রয়েছে তার ডাক্তার পাওয়া যাবে তো? এই প্রশ্ন করেছে জনগণের মনে। এ প্রসঙ্গে ওয়েস্টবেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ডাক্তার কৌশিক চাকি জানিয়েছেন, "পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ কিন্তু গত পাঁচ সাত বছরের মধ্যে রাজ্যে ডাক্তারের আসন সংখ্যা তিনগুণ বেড়ে গিয়েছে। ডাক্তার অনেক বেশি তৈরি হচ্ছে কিন্তু রোগীর সংখ্যাও কিন্তু লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করেছেন। প্রত্যেকটা সরকারি হাসপাতালে প্রচুর রোগী নিজেদের সমস্যা নিয়ে আসেন। সেখানে মাত্র একজন ডাক্তারকে দীর্ঘ সময় ধরে রোগী দেখতে হয়।"

আর যেভাবে ডাক্তার মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে তাহলে অন্যান্য ডাক্তারের ক্ষেত্রে কিন্তু এই চাপটা একেবারে পাহাড়প্রমাণ হয়ে যাবে আর কিছুদিনের মধ্যে। স্বনামধন্য প্যাথলজিস্ট সুবীর দত্ত শুক্রবার করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন। তারপরেই প্রশ্ন উঠছে, যারা আমাদের সুরক্ষা দিতে প্রাণপাত করছেন, তারা নিজেরা সুরক্ষিত তো? ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের জনঘনত্ব তালিকার একদম শিখরে। তাই এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের ডাক্তার এবং রোগীর অনুপাতটা অত্যন্ত খারাপ। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে একের পর এক ডাক্তারের মৃত্যু চিকিৎসক মহলের ক্ষেত্রে অশনি সংকেতের বার্তাই বহন করছে।