শিক্ষা ও চাকরীক্ষেত্রে আর কত প্রজন্ম ধরে সংরক্ষণ চলবে? প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 20/03/2021   শেষ আপডেট: 20/03/2021 12:17 p.m.
Supreme Court of India By Subhashish Panigrahi - Own work, CC BY-SA 4.0, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=84

স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও কোনো অনগ্রসর শ্রেণী অগ্রসর হয়নি, এটা মেনে নেওয়া যায়না : সুপ্রিম কোর্ট

শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে সংরক্ষণ নিয়ে আজ আলোকপাত করল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অশোক ভূষণের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ থেকে একইসাথে উঠে এল একাধিক প্রশ্ন। উপরিউক্ত দুই ক্ষেত্রে আর কত প্রজন্ম ধরে সংরক্ষণ চলবে? প্রশ্ন ওঠে। সংরক্ষণের সর্বোচ্চ সীমা অর্থাৎ ৫০ শতাংশের সংরক্ষণ যদি বাতিল করা হয়, তবে সমানাধিকার কতটা রক্ষিত হবে? সে নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ঠিক কীসের থেকে এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়াল? মহারাষ্ট্র সরকারের তত্ত্বাবধানে মারাঠাদের জন্য ১৬% সংরক্ষণের দাবিতে বিল পাশ করা হয়। এই বিলকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানালে অবশেষে সুপ্রিম কোর্টে ওঠে মামলা। ১৯৯৩ সালের ইন্দিরা সহায় মামলার রায় অনুযায়ী সংরক্ষণের উর্দ্ধসীমা ৫০ শতাংশ ধার্য হয়। কিন্তু ১৬% মারাঠাদের যুক্ত করলে তা ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। এ প্রসঙ্গে মহারাষ্ট্র সরকারের আইনজীবী মুকুল রোহতগি দাবি করেন, ১৯৩১ সালের জনগণনার ভিত্তিতে আগের রায়টি দেওয়া হয়েছিল। তাই বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কোর্টের এগুলি পুনর্বিবেচনা করা উচিত। মুকুল রোহতগি আরও বলেন, আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য যে ১০% সংরক্ষণ ধার্য হয়েছিল, বর্তমানে তাও পেরিয়ে যাবে ৫০ শতাংশ। একইসাথে তার মত, সংরক্ষণের নীতি নির্ধারণের দায়িত্ব রাজ্যগুলির ওপর দেওয়া উচিত।

সবকিছু দেখে শুনে সুপ্রিম কোর্ট বেঞ্চে উপস্থিত অশোক ভূষণ সহ বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাও, বিচারপতি এস আব্দুল নাজ়ির, বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি এস রবীন্দ্র ভট্টদের থেকে স্পষ্ট প্রশ্ন আসে, "স্বাধীনতার পরে ৭০ বছর কেটে গিয়েছে। বিভিন্ন রাজ্য উন্নয়নমূলক প্রকল্প চালাচ্ছে। আমাদের কি মানতে হবে, কোনও উন্নয়ন হয়নি এবং অনগ্রসর কোনও শ্রেণিই অগ্রসর হয়নি?" শিক্ষা ও চাকরির ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ সংরক্ষণ মৌলিক অধিকারের পর্যায়ে পড়েনা, কারণ এই ক্ষেত্রগুলিতে মেধাই শেষ মাপকাঠি। তাই আর কত প্রজন্ম ধরে এই সংরক্ষণ প্রথা চলবে সে প্রশ্নও উঠেছে বেঞ্চ থেকে। রোহতগি অবশ্য জানিয়েছেন, উন্নয়ন হলেও অনগ্রসর শ্রেণীর সংখ্যা ৫০ শতাংশ থেকে কমে ২০ শতাংশ হয়নি। বিগত ৩০ বছরে এই শ্রেণীর পরিমাণ বেড়েছে এবং এখনো অনাহারে মৃত্যু হচ্ছে।