সত্যি বলা অসংসদীয়? সংসদের 'শব্দচয়ন' নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে কড়া স‌ওয়াল বিরোধীদের

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 14/07/2022   শেষ আপডেট: 14/07/2022 6:21 p.m.
By A.Savin (Wikimedia Commons · WikiPhotoSpace) - Own work, FAL, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=49129197

১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে চলেছে লোকসভা বর্ষাকালীন অধিবেশন

লোকসভা সচিবালয় থেকে ব‌ই প্রকাশের একদিন পর দেখা গেল, "জুমলাজিভি", "বাল বুদ্ধি", "লজ্জিত", এবং "অপব্যবহার" এর মতো শব্দগুলিকে "অসংসদীয়" বলে অভিহিত করা হয়েছে। এর বিরোধিতা করে বিরোধী দল বৃহস্পতিবার পাল্টা আক্রমণ করে বলে যে এই নিষেধাজ্ঞাটি সম্পূর্ণ "অপ্রয়োজনীয়" এবং ভিত্তিহীন। কংগ্রেস সাংসদ অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি টুইট করে লেখেন, "আপনার সমালোচনা সৃজনশীল হতে না পারলে সংসদের লাভ কী? জুমলাজিভি কো জুমলাজিভি নহি বোলনগে কেয়া বোলেঙ্গে? শব্দ নিষিদ্ধ করা অপ্রয়োজনীয়!"

লোকসভার সচিবালয় পুস্তিকায় অসংসদীয় শব্দ ও অভিব্যক্তির তালিকা উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮ জুলাই থেকে শুরু হতে চলা আসন্ন বর্ষাকালীন অধিবেশনের আগে 'নৈরাজ্যবাদী', 'শকুনি', 'স্বৈরাচারী', 'তানাশাহ', 'তানাশাহি', 'জয়চাঁদ', 'ভিনাশ পুরুষ', 'খালিস্তানি' এবং 'খুন সে খেতি'র মতো শব্দের ব্যবহার বাদ দেওয়া হবে। বিতর্কে এই শদগুলি একেবারেই ব্যবহার করা যাবে না। পুস্তিকায় আরও বলা হয়েছে, লোকসভা সচিবালয় 'দোহরা চরিত্রা', 'নিকাম্মা', 'নটাঙ্কি', 'ধিন্ডোরা পিতনা' এবং 'বেহরি সরকার'-এর মতো শব্দগুলিকে অসংসদীয় অভিব্যক্তি হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে।"

এই পদক্ষেপের সমালোচনা করে কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, "মোদী সরকারের বাস্তবতা বর্ণনা করার জন্য বিরোধীরা যে সমস্ত শব্দ ব্যবহার করেছে তা এখন 'অসংসদীয়' হিসাবে বিবেচিত হবে। এর পরে কী হবে বিশ্বগুরু!!" কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী টুইট করে বলেন, "সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে, যখন তারা দুর্নীতিতে লিপ্ত হয়, তখন তারা চায় না যে কেউ এটাকে দুর্নীতি বলুক, বরং এটাকে মাস্টারস্ট্রোক হিসেবে চিহ্নিত করুক জনগন।"

এর প্রতিক্রিয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মহুয়া মৈত্র প্রশ্ন তোলেন, "লোকসভা ও রাজ্যসভার জন্য সংসদীয় শব্দের তালিকায় কেন 'সাংঘি' শব্দটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি?" সরকারের এই সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করে তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন বলেছেন, তিনি নিশ্চিতভাবে এই ধরনের 'মৌলিক' শব্দ ব্যবহার করবেন। তাঁকে সাসপেন্ড করার জন্য স্পিকারকে চ্যালেঞ্জও করেন তিনি। তিনি বলেন, "কয়েক দিনের মধ্যেই অধিবেশন শুরু হবে। এই সাংসদদের উপর গ্যাগ আদেশ জারি করা হয়েছে। এখন, সংসদে বক্তৃতা দেওয়ার সময় আমাদের এই মৌলিক শব্দগুলি ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হবে না! এতে লজ্জিত, নির্যাতিত, বিশ্বাসঘাতকতা করেছে, দূষিত, ভণ্ডামি, অযোগ্য আমি এই সব শব্দ ব্যবহার করব। আমি গনতন্ত্রের জন্য লড়াই করব, আমায় সাসপেন্ড করে দেখাক!"