"কমিকস" বাংলা শিশু সাহিত্যের অন্যতম অঙ্গ। এর আক্ষরিক অর্থ হল—"চিত্রকথা"। অর্থাৎ,যেখানে চিত্র এবং লেখার দ্বারা কোনো ভাবনা প্রকাশ করা হয়। ফলে, লেখার পাশাপশি সামঞ্জস্যপূর্ণ ছবি এক্ষেত্রে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ, লেখা ও ছবি এখানে একে অন্যের পরিপূরক।
ইতিহাস জানাচ্ছে, "ইউরোপীয় কমিকসের যাত্রা শুরু হয় ১৮২৭ সালে সুইস কার্টুনিস্ট রোডলফ টোফারের মাধ্যমে এবং মার্কিন কমিকসের উৎপত্তি রিচার্ড এফ. আউটকল্টের ১৮৯০ এর দশকের পত্রিকার কার্টুন স্ট্রিপ দ্য ইয়েলো কিডের মাধ্যমে বিবেচনা করা হয়। বিংশ শতাব্দীর শেষের মধ্যভাগের আগেই কমিকস যুক্তরাষ্ট্র, পশ্চিম ইউরোপ (বিশেষ করে ফ্রান্স এবং বেলজিয়াম) এবং জাপানে জনপ্রিয়তা লাভ করে।"(সূত্র—উইকিপিডিয়া)
বাংলা সাহিত্যে কমিকস জনপ্রিয় হলেও চর্চা বিশেষ নেই। এই মুহূর্তে চটজলদি যদি বাঙালি পাঠককে বাংলা কমিকস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়, তবে, "নন্টে ফন্টে" বা "হাঁদা ভোঁদা" উচ্চারিত হতে পারে। কিন্তু, তারপর! আজ এই সমসাময়িককালে ঠিক কতজন বলতে পারবেন অতুল সেন এর কথা! কি, অবাক হলেন? হ্যাঁ, এ কথা বারংবার বলতে দ্বিধা নেই যে, বাংলা শিশু সাহিত্যের অন্যতম অংশ কমিকস, আর বর্তমানে "বেঙ্গল কমিকস কোম্পানি" সেই কমিকসের ধারাকেই সাবলীল ও জনপ্রিয় করে তুলতে এক আলোড়ন সৃষ্টি করছেন। এই কোম্পানির কর্ণধার শ্রী সৌরভ রায়চৌধুরী জানান, " বাংলা কমিকসের জগতে ধূমকেতুর মতো আবির্ভাব আমাদের। মাত্র একটি সংখ্যাই প্রকাশিত হয়েছে, কিন্তু মানুষের ভালোবাসা প্রমাণ করে দিয়েছে, বাঙালি নিজের ভাষাতে কমিকস পড়তে চান। তাদের অভূতপূর্ব সাড়া আমাদের প্রাণিত করছে।" এই কোম্পানির প্রথম বই "মহাকাশে বাঙালি"; গল্পের প্লট রচনা, ভাবনা,বুনন ও সৃষ্টিতে শ্রী সৌরভ রায়চৌধুরী আর অঙ্কনের দায়িত্বে রয়েছেন শ্রী অরুণাশিস সেন।
পাওয়া গেল দু’হাজার বছরের পুরনো দেহাবশেষ
নিজের উচ্চশিক্ষা ও কর্মক্ষেত্রের তাগিদে দীর্ঘদিন ফ্রান্সে থেকেছেন লেখক।ইউরোপীয় কমিকসের আতুঁড়ঘর ফ্রান্স তাঁর কমিকস রচনা করার ক্ষিদে বাড়িয়ে দিয়েছে আরও। উপলব্ধি করেছেন, চাচা চৌধুরী, বাঁটুল দি গ্রেট, অরণ্য দেব —এর মত সুপারম্যান আর শিশু মনোরঞ্জনের উপযোগী চরিত্র করার সময় এসেছে। সেই তাগিদ থেকেই সৃষ্টি এই বই। প্রচ্ছদটি রঙিন তবে সম্পূর্ণ বইটির লেখা ও আঁকা সাদা ও কালোতে। বাইন্ডিং ও পাতা খুবই ভালো। উপস্থাপনা, চরিত্র বুনন, সংলাপ ও ভাবনা স্বচ্ছ, প্রাঞ্জল ও পরিচ্ছন্ন। এক বাঙালি বিজ্ঞানীর আবিষ্কার করা "আলফা—২" গ্রহ ও সেখানে বসবাসকারী মানুষকে নিয়ে এই কাহিনির প্লট। অতুল সেন ও তার ভাই কৃষ্ণ সেনের মহাকাশে পারি আর নতুন গ্রহ আবিষ্কারের কাহিনি সত্যি আকর্ষণীয়। প্রথম অংশ ঊর্ধ্বশ্বাসে ১৫ মিনিটের মধ্যেই শেষ করে ফেলা যায়। তবে, পাঠকের চাহিদা থেকে যাবে পরবর্তী অংশের জন্য । কারণ, "যেন শেষ হয়েও হইল না শেষ....", ছোটগল্পের মতই হাজারো প্রশ্ন রেখে যায় প্রথম অংশটি।
প্লট ও চরিত্রের সংলাপের সঙ্গে ছবি ও চরিত্রের অভিব্যক্তিকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলেছেন শিল্পী অরুণাশিস সেন। সব মিলিয়ে টেনিস চ্যাম্পিয়ন ও শ্রীসংঘ এফ. সি এর ক্যাপ্টেন , এম.এস.এস. সি এর মহাকাশ যাত্রী অতুল সেনের এই কাহিনি শিশু মনোরঞ্জনের জন্য যথাযথ, তাদের কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটাতে ও বৈজ্ঞানিক তথা মহাকাশ জগৎ নিয়ে আগ্রহ বৃদ্ধিতে এ বই(সিরিজ) যে অন্যতম হাতিয়ার হতে পারে, এ কথা, নিঃসন্দেহে বলা যায়। এর দ্বিতীয় অংশ শীঘ্রই প্রকাশিত হবে ।
বি. দ্র— 9836526485 নাম্বারে Gpay এর মাধ্যমে মাত্র 45/- এর বিনিময়ে এই বই পাওয়া যাবে (কোনো শিপিং চার্জ নেই)। বইয়ের মূল্য পাঠানোর পর নিজের পোস্টাল অ্যাড্রেস 8335010584 নাম্বারে অবশ্যই পাঠাতে হবে।