পরিস্থিতি ভয়াবহ, স্কুল-কলেজ বন্ধ, শ্রীলঙ্কায় ফের ফিরছে ওয়ার্ক-ফ্রম-হোম

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 27/06/2022   শেষ আপডেট: 27/06/2022 4:55 p.m.
https://twitter.com/Welikumbura

শ্রীলংকার এই মুহূর্তে যেরকম আর্থিক পরিস্থিতি, তাদের স্কুল-কলেজ বন্ধ রেখে বাড়ি থেকে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলংকার সরকার

করোনাভাইরাস এর প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্বে যখন পুরো বিশ্ব দেখেছিল একটি নতুন কর্মসংস্কৃতি, সেই কর্মসংস্কৃতি আবার ফিরতে চলেছে শ্রীলঙ্কায়। দেশের যে আর্থিক পরিস্থিতি, সেই কথা বিচার করে এবারে স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলঙ্কা সরকার। পাশাপাশি খরচ বাঁচানোর জন্য ফিরিয়ে আনা হচ্ছে বাড়ি থেকে কাজ করার সংস্কৃতি, অর্থাৎ ওয়ার্ক ফ্রম হোম। শ্রীলঙ্কায় আবার এই বাড়ি থেকে কাজ করার সংস্কৃতি ফিরতেই মানুষের মধ্যে ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে।

সরকারের তরফ থেকে খুব শীঘ্রই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সকলের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে কাজ করার অনুরোধ করা হবে। অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত সাত দশকের শ্রীলংকা এরকম ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়েনি। পরিস্থিতি কতটা ভয়ংকর সেটা এক ভুক্তভোগীর কথা শুনলেই বোঝা যাবে। ৬৭ বছর বয়সি অটোরিকশাচালক শেলডন জানিয়েছেন, শুধুমাত্র তেল করার জন্য বাড়ি থেকে ৫ কিলোমিটার হেঁটে তাকে প্রত্যেকদিন পাম্পে আসতে হচ্ছে। লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছেন গত চারদিন ধরে। তার আগে রয়েছেন এখনো ২৩ জন। তেল যে পাওয়া যাবে না, সে ব্যাপারে তিনি সম্পূর্ণ নিশ্চিত। তবুও লাইন ছেড়ে বাড়ি ফেরার কোনো সম্ভাবনা নেই বলেই তিনি জানাচ্ছেন।

শেলডন আরো বলছেন, 'আমি গত চারদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়ে রয়েছি। বাড়ি থেকে পাম্প এর দূরত্ব ৫ কিলোমিটার। এতটা রাস্তা আমি শুধুমাত্র হেঁটে এসেছি। পাম্পে এসে দেখি আমার আগে আরো ২৩ জন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তেল পাব না এটা আমি নিশ্চিত। কিন্তু বাড়ি ফেরার কোনো পরিকল্পনা নেই। দরকার হলে আরো কয়েকটা দিন পাম্পের সামনে রাত কাটাবো। তেল না কিনতে পারলে আমি অটো চালাতে পারব না।'

একদিকে জ্বালানি সংকট দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে আবার দেশের অর্থভাণ্ডার এর বিদেশি মুদ্রা কমতে শুরু করেছে। সব মিলিয়ে অত্যন্ত ভয়ঙ্কর অবস্থা শ্রীলংকার অর্থনীতির। তাই অতো খরচ বাঁচানোর জন্য সরকার এই মুহূর্তে বাড়ি থেকে কাজ করানোটাই ভালো বলে মনে করছে। এমনিতেই কাগজের অভাবে শ্রীলঙ্কায় স্কুল কলেজের পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। আর এবারে পুরোপুরি বন্ধ হলো স্কুল। সরকারি কর্মীরা ও নিজেদের মাইনে পারেন কিনা সেই ব্যাপারে কোনো নিশ্চয়তা নেই। খুব শীঘ্রই যদি এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয়, তাহলে আরো দুর্দিন আসতে চলেছে শ্রীলঙ্কায়, এমনটাই মনে করছেন বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।