কমলা লেবু থেকে শুরু করে জলপাই, শীতের দুপুরে সঙ্গী হোক মরশুমি ফল

সৃজিতা ব্যানার্জী
প্রকাশিত: 18/12/2023   শেষ আপডেট: 18/12/2023 10 a.m.
unsplash.com

কোন কোন ফল রাখবেন শীতের খাদ্যতালিকায়?

শীতকাল মানেই নানারকম শাক সবজি, ফলের সমাহার। গরম কালের মতই এই সময়ও বেশ কিছু ফলের প্রাচুর্য প্রকট হয়ে ওঠে, যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিশেষ উপকারী। আজকের বিশেষ প্রতিবেদনে আমরা জানব, শীতকালে কোন কোন ফল খাওয়া যেতে পারে, এবং কী তাদের তাদের গুণাগুণ।

কমলা লেবু - গরমকালে আম যেমন ফলের রাজা, তেমনই শীতকালে কমলা লেবুকেও ফলের রাজা হিসেবে গণ্য করা হয়। এই ফল খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনই কার্যেও বেশ দক্ষ। কমলা লেবুতে রয়েছে ভিটামিন-এ, ভিটামিন-সি, ভিটামিন-বি কমপ্লেক্স, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার সঙ্গে দাঁত ও হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সক্ষম এই ফল। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও হার্ট ভালো রাখা থেকে শুরু করে ক্যান্সার প্রতিরোধের মত ক্ষমতাও আছে এই ফলে।

জলপাই - শীতকালে খাওয়ার মত অন্যতম একটি উপকারী ফল হল জলপাই। এই সময় আমাদের হজম প্রক্রিয়া অন্যান্য সময়ের তুলনায় বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। কারণ এই সময় আমাদের শারীরিক পরিশ্রমের মাত্রা তুলনামূলকভাবে কম থাকে, ফলে ক্লান্তিও কম অনুভূত হয়। যার ফলে হজম ক্ষমতা হ্রাস পায়। জলপাইয়ের খোসার আঁশ আমাদের হজম প্রক্রিয়াকে বেশ সক্রিয় করে তোলে। জলপাই খেলে বাড়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র, কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায় এই ফল। চুল ও ত্বককে মসৃণ রাখতে, হাড় মজবুত রাখতেও এই ফলের জুড়ি মেলা ভার। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, এই ফলের তেলও স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ উপকারী।

বেদানা - বেদানা যেকোনও মরশুমেই খাওয়া উপকারী। রসালো, মিষ্টি এই ফলে আছে প্রচুর পরিমাণে খনিজ এবং উপকারী পুষ্টি উপাদান। আমাইনো অ্যাসিড, ফলিক অ্যাসিড, পটাসিয়াম, অ্যান্টি অক্সিডেন্টসহ ভিটামিন এ, সি, ই প্রভৃতি পুষ্টি উপাদান আমাদের শরীরকে যেকোনও রোগের হাত থেকে রক্ষা করে। দাঁত ও হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য বেদানা গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করে। এছাড়া রক্ত সঞ্চালনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে এই ফল।

বরই - ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট-সমৃদ্ধ বরই ফল বা কুল হল হজম সহায়ক। ফ্লু, হাঁপানি, কোলন ক্যান্সারের মত রোগ প্রতিরোধ করে এই ফল। এই ফল গ্রহণে অবসাদ হয় দূর। টনসিলাইটিস, ঠোঁটের ঘা, চামড়া উঠে যাওয়ার মত সমস্যা নিরাময় করে এই বরই। এমনকী লিউকোমিয়া প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা আছে এই ফলের। তবে অত্যধিক পরিমাণে চিনি থাকার দরুন, ডায়াবেটিক রোগীর জন্য এটি উপকারী নয়। এবং রোজ কুল খেলেও পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

আপেল - সারা বছর আপেল পাওয়া গেলেও, শীতেও এই ফলের কদর হয় বেশ ভালো। ফাইবার সমৃদ্ধ এই ফল থাকে পুষ্টিগুণে ভরা। ডায়রিয়া ও কোষ্ঠকাঠিন্যের মত সমস্যাকে প্রতিরোধ করে আপেল। এছাড়াও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতে, হৃদযন্ত্র ভালো রাখতে, এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে আপেলের গুরুত্ব অপরিসীম।

[বিঃ দ্রঃ - এই প্রতিবেদনটিই শেষ কথা নয়। এই প্রতিবেদনে উল্লেখিত ফল এবং তার কার্যগুণ সকলের জন্য সমান কার্যকারী নাও হতে পারে। তাই অবশ্যই ফলগুলি খাওয়ার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ শ্রেয়।]