শৌখিন জীবনযাপন করেও, করতে পারেন নগদ সঞ্চয়
অর্থ সঞ্চয় মানে, অনাড়ম্বর জীবন নয়, বরং করতে হবে নিয়ন্ত্রিত ব্যয়
আপনারা অনেকেই আছেন যাঁরা, অর্থ সঞ্চয়ের ব্যাপারে উদাসীন থাকেন! অহেতুক এদিক ওদিক বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করে ফেলেন! আবার এমনও আছেন, যাঁরা অর্থ বিনিয়োগ করার ব্যাপারে খুবই কঠোর! কিছুতেই খরচমুখী হননা তাঁরা! কিন্তু আড়ম্বরহীন জীবনযাপন করেও, আপনি যথাযথ ভাবেই আপনার অর্থ সঞ্চিত করতে পারবেন।
১) বিনিয়োগের ব্যাপারে নিয়ন্ত্রণ রাখুন - অনেক সময় দেখা যায় আমরা দামি পণ্যের দিকে বেশি ঝুঁকি। যেখানে কম মূল্যেও সেই একই পণ্য আমরা কিনতে পারি এবং এমনও হয়, কম দামেও উচ্চমানের জিনিসটি পাওয়া যায়। সেই দিকে নজর রাখতে হবে। যেখানে কম খরচেও আমার লক্ষ্য পূরণ সাধিত হচ্ছে, সেদিকে যেন বেশি দাম দিয়ে আমি না এগোই। এ ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
২) বিবেচনামূলক ব্যয় মূল্যায়ন - অনেক সময় দেখা যায়, আমরা যে যার নিজের এমন কিছু ব্যক্তিগত খাতে বিনিয়োগ করে থাকি, যা হয়তো অন্যের কাছে ব্যভিচারীতা মনে হতে পারে! যেমন ধরা যাক, আমরা অনেক সময়েই মাসের শেষে, বা কোনো বিশেষ দিনে বাইরে পরিবারের সঙ্গে দ্বিপ্রাহরিক ভোজ বা নৈশভোজে যাই! এই ঘটনাটি অন্যদের কাছে মনে হয়, অহেতুক খরচ করা! কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে, অনাড়ম্বর জীবন মানেই সঞ্চয় নয়! সবকিছু করেও নির্দিষ্ট খাতে টাকা জমানো যেতে পারে। ডাল-ভাত জীবনই যে অর্থ সঞ্চয়ের উৎস, এমনটা নয়!
৩) গ্যাজেট কেনার ব্যাপারে সঞ্চয়ী হন - অনেকের প্রবণতা থাকে, নতুন কোন গ্যাজেট বাজারে এলেই, সেটি কিনে ফেলা! কিন্তু আপনার কাছে যদি সেই গোত্রের একটি অক্ষত গ্যাজেট থেকে থাকে, তবে আপনার নতুন গ্যাজেট কেনাটা অযৌক্তিক এবং অপচয়! তার চেয়ে অপেক্ষা করুন! যতদিন না আপনার আগের গ্যাজেটটি সম্পূর্ন অব্যবহার-যোগ্য হচ্ছে, ততদিন আপনাকে ধৈর্য রাখতেই হবে। এর ফলে আপনার যথাযথ অর্থ সঞ্চিত হতে পারে।
৪) কেনার আগে দর কষাকষি - মাথায় রাখতে হবে, বিক্রেতারা প্রায়শই ক্রয়মূল্য বাড়িয়ে বলে থাকেন। সেই ব্যাপারে আমাদের তৎপর হতে হবে! দর কষাকষি করে তবেই সেই পণ্য কেনা উচিত। এছাড়াও, সেকেন্ড হ্যান্ড জিনিস কেনার ব্যাপারেও অগ্রসর হতে পারেন। যা চলতি বাজারের ক্রয়মূল্যের তুলনায় অনেক সস্তা হয়।
৫) সময়মত বিল মেটান - বাড়ির ইলেকট্রিক বিল সময় মত মিটিয়ে দিন। মাসের পর মাস দেরি করলে, একেবারে অনেক পরিমাণে নগদ ব্যয় হয়ে যায়। সেই কারণে উচিত সময়ে বিল মিটিয়ে দিলে, কোন চিন্তার কারণ থাকে না।
৬) কেনাকাটার ব্যাপারে দীর্ঘ সময় ধরে সঞ্চয় - ধরুন আপনি এক বছরের মধ্যে একটি ফ্ল্যাট কিনতে চান ২৪ লাখ টাকা দিয়ে, কিন্তু আপনি এ ব্যাপারেও নিশ্চিত, এক বছরে এই পরিমাণ অর্থ আপনি সঞ্চয় করে উঠতে পারবেন না। তাই সেক্ষেত্রে আপনার সময় সীমাকে বৃদ্ধি করুন! অন্তত দু বছর হিসেবে হাতে ধরুন! এর ফলে আপনার সঞ্চিত অর্থের পরিমাণও বাড়বে, এবং আপনি আপনার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতেই সক্ষম হবেন।
কিন্তু সর্বোপরি মনে রাখতে হবে ত্যাগ না করেও, অর্থ সঞ্চয় করা যায়। উপরিক্ত উপায়গুলি মাথায় রেখে এগিয়ে গেলে, যেমন শখ শৈখীনময় জীবনও কাটাতে পারবেন, সেরকম অর্থ সঞ্চয়েও পারদর্শী হবেন।