লিফট দেওয়ার নাম করে তরুণীর শ্লীলতাহানি, অভিযুক্ত পুলিশের এএসআই, সিভিক ভলেন্টিয়ার

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 12/12/2021   শেষ আপডেট: 12/12/2021 6:46 p.m.

গ্রেফতার করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে

যাঁদের হাতে সমাজের ন্যায়দণ্ড থাকার কথা, তাঁরাই জড়িত অন্যায়ের সঙ্গে! এমনই ঘটনার সাক্ষী রাতের কলকাতা। বাইপাসের ধারে তরুণীকে শ্লীলতাহানির ঘটনায় নাম জড়াল দুই পুলিশকর্মীর। যাঁদের মধ্যে একজন বিধাননগর (Bidhannagar) ট্রাফিক গার্ডের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর (ASI) পদে কর্মরত। অপরজন সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic volunteer)। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। চাকরি থেকে বরখাস্তও হয়েছেন দুজনই।

জানা গিয়েছে, শনিবার রাত ১ টা নাগাদ আসানসোল (Asansol) থেকে চাকরির পরীক্ষা দিতে আসা বছর ২৫-এর এক তরুণী করুণাময়ী (Korunamoyi) বাসস্ট্যান্ডে এসে নামেন। সাথে তাঁর বেশ কয়েকজন সঙ্গীও ছিল। কিন্তু তাঁরা যে যার মতো ক্যাব (cab) বুক করে চলে গেলেও গাড়ি না পেয়ে বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করতে থাকেন তরুণী। সেসময়েই রাস্তা দিয়েই দুটি বাইকে করে যাচ্ছিলেন অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা। এর মধ্যে সামনের বাইকে ছিলেন অভিযুক্ত সিভিক ভলেন্টিয়ার অভিষেক মালাকার। দ্বিতীয় বাইকটিতে ছিলেন সন্দীপ কুমার পাল নামক বিধাননগর ট্রাফিক গার্ডের এএসআই। যদিও সেই বাইকটি চালাচ্ছিলেন শম্ভু মণ্ডল নামক এক ব্যক্তি। সূত্রের খবর, সে সময় সিভিক ভলেন্টিয়ার উর্দি পড়ে থাকা সত্ত্বেও উর্দিতে ছিলেন না এএসআই।

অভিযোগ, বাইকে সওয়ার দুই পুলিশকে দেখে আশ্বস্ত হয়ে তাদের কাছে সাহায্য চান ওই তরুণী। পুলিশদের কাছে করুণাময়ী থেকে উল্টোডাঙা পর্যন্ত লিফট চান তিনি। তবে তাঁকে বাইকে নিয়ে যাওয়ার সময় মাঝপথেই তাঁকে শ্লীলতাহানি (molestation) করেন দুই অভিযুক্ত। জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার ছাড়িয়ে কিছুদূর যাওয়ার পরই অভিযুক্ত এএসআই সন্দীপ, শম্ভু মণ্ডলকে ফেরত পাঠিয়ে দেন এবং তরুণীকে নিয়ে যাওয়া সিভিক ভলেন্টিয়ার অভিষেকের বাইকে গিয়ে ওঠেন। এরপরেই চলন্ত বাইকে তরুণীর শ্লীলতাহানি করেন দুই অভিযুক্ত।

এরপর কাদাপাড়া ক্রসিংয়ের কাছে নিগৃহীতা তরুণীকে নামিয়ে দিয়ে চলে যায় অভিযুক্ত পুলিশকর্মীরা। গাড়ি থেকে নেমে বন্ধুদের ফোন করেন তিনি। বন্ধুদের সহায়তায় কসবা থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে নিগৃহীতাকে প্রথমে বিধাননগর মহিলা থানায় পাঠানো হয়। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় বিধাননগর উত্তর থানায়। সেখানেই অভিযোগ দায়ের হয় দুই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে।

এরপর অভিযোগের ভিত্তিতে শুরু হয় তদন্ত। তদন্তে অভিযুক্ত প্রমানিত হওয়ার পর রবিবার গ্রেফতার করা হয় সন্দীপ এবং অভিষেককে। দুজনকে চাকরি থেকে বরখাস্তও করা হয়েছে। একাধিক ধারায় তাঁদের নামে দায়ের হয়েছে মামলা। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তে নেমেছে পুলিশ।