৮৭তম জন্মবার্ষিকীতে স্মরণে কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

শ্রেয়া সাহা
প্রকাশিত: 19/01/2022   শেষ আপডেট: 19/01/2022 12:59 p.m.
-

আমি অভিনয় করছি বলেই তো সুস্থ আছি : সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

আজ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের ৮৭তম জন্মবার্ষিকী। টলিগঞ্জের মহীরুহ সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় (Soumitra Chatterjee) যে আর নেই, তা বোঝার উপায় নেই।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় - facebook

৬০ বছরের বেশি সময়ের অভিনয় জীবন, তিন শতাধিক সিনেমায় অভিনয়। 'উত্তম' সমসাময়িক যুগেও বাঙালির মনের দালানে বেশ পাকাপোক্ত জায়গা করে নিয়েছিলেন 'সৌমিত্র'। সে জায়গা যে আজও কতটা শক্ত, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জন্মগ্রহণ করেন কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। বিদ্যালয়ের পাঠ শেষ করে, কলকাতার সিটি কলেজ থেকে প্রথমে আইএসসি এবং পরে বিএ অনার্স(বাংলা) পাশ করার পর পোস্ট গ্র্যাজুয়েট করেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়।

সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় - youtube

তাঁর বাবা মোহিত কুমার চট্টোপাধ্যায় কলকাতা হাইকোর্টের নামকরা উকিল ছিলেন। তবে নাটকের চর্চা নিয়মিত ছিল পরিবারে, বাবা নাটকের দলে অভিনয় করতেন। কাজেই ছোট থেকেই সেই পরিবেশে বড় হওয়া তাঁর। তখন থেকেই অভিনয়ের প্রতি ছিল ভালোবাসা।

অপুর সংসার (১৯৫৯)

আর সেই টান থেকেই অভিনেতার রুপোলি সফর শুরু হয়, ১৯৫৯ সালে। ছবির নাম অপুর সংসার, যা পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন বিশ্ববরেণ্য চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়। সেই থেকে পথচলা শুরু এই জুটির।

সত্যজিৎ রায়ের সাথে শাখা প্রশাখায় (১৯৯০)

এরপর সত্যজিৎ পরিচালিত মোট ৩৪টি ছবির ১৪টিতেই ছবিতে অভিনয় করেছেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, যা বাংলা চলচ্চিত্রের পরম ও বিরল প্রাপ্তি।

সোনার কেল্লা (১৯৭৪)

পরবর্তীকালে তিনি মৃণাল সেন, তপন সিংহ, অজয় কর, তরুণ মজুমদার থেকে শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়-নন্দিতা রায়, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অতনু ঘোষ, সুমন ঘোষ সহ একাধিক পরিচালকদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি।

"বেলাশেষে" ছবির একটি দৃশ্যে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ও স্বাতীলেখা সেনগুপ্ত

শুধু যে অভিনয়, তা নয়। বলতে পারেন বহুমুখী প্রতিভার সম্ভার ছিলেন তিনি। একাধারে নাট্যকার, কবি, পরিচালক, পত্রিকা সম্পাদক হিসেবেও দক্ষ ছিলেন সৌমিত্রবাবু। আবার সাহিত্য জগতেও ছিল তাঁর অনায়াস পদচারণ, আঁকতেন ছবিও। সে সব পেন্টিং, স্কেচের প্রদর্শনীও হয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশন্সে। তবে এসবের মাঝেও অভিনয় ছিল তাঁর জীবনের অক্সিজেন। তিনি বলতেন, "আমি অভিনয় করছি বলেই তো সুস্থ আছি।"

কালপুরুষ ছবির একটি দৃশ্য (১৯৬৫)

পদ্মভূষণ থেকে সংগীত নাটক একাডেমি, দাদা সাহেব ফালকে সহ একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।