'যশ'মোকাবিলায় জরুরী বৈঠক মুখ্যমন্ত্রীর, তোপ দাগলেন অমিত শাহের বৈঠক নিয়েও

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 24/05/2021   শেষ আপডেট: 24/05/2021 6:01 p.m.
-

যশ ঘূর্ণিঝড়ে অযথা আতঙ্কিত হবেন না, কারেন্ট নেই, জল নেই বলে চিৎকার করবেন না, আমাদের সাথে একটু সহযোগিতা করবেন : মুখ্যমন্ত্রী

ভয়াবহ করোনা (Corona) পরিস্থিতির মাঝেই বঙ্গবাসীর কাছে নতুন উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড় যশ (Yaas Cyclone) বা ইয়াস। এই ঘূর্ণিঝড়টি ইতিমধ্যেই শক্তি বৃদ্ধি করে দীঘা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। ঘূর্ণিঝড়টি আগামী বুধবার দুপুরের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মাঝে আছড়ে পড়তে পারে। এই প্রসঙ্গে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আজ নবান্নে (Nabanna) যশ মোকাবিলার জন্য একটি জরুরি বৈঠক করেছেন। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে উপস্থিত থেকে তিনি বলেছেন, "আম্ফানের থেকে বড় ঝড় হতে পারে। ৭২ ঘন্টা অব্দি থাকতে পারে দুর্যোগ। তাই অযথা আতঙ্কিত হবেন না বা আতঙ্ক ছড়াবেন না।" এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, "ঝড়ের বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা পেতে ১০ লাখ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ের সরানোর কাজ শুরু হয়েছে।"

এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী আজ রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে সাংবাদিক বৈঠকে সাবধানবাণী জানিয়ে বলেছেন, "২০ টি জেলা-দুই মেদনীপুর, দুই ২৪ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা সহ একাধিক জেলা এই ঝড়ে বিপর্যস্ত হবে। এমনকি উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতেও ভারী বৃষ্টিপাত হবে। দয়া করে মৎস্যজীবীরা এই ঝড়ে সমুদ্রে যাবেন না। আপনাদের অনেক আগে থাকতেই সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। তবু কোথাও-না-কোথাও সমুদ্রে গিয়ে দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। আমফানের সময় আমরা অনেককে হারিয়েছি। আর এক ভুল করবেন না। সমুদ্রে যাতে একটাও না নৌকা থাকে নিশ্চিত করতে হবে।"

সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আর্জি জানিয়েছেন, "সংবাদমাধ্যমের বন্ধুদের বলবো আপনাদের কাছ থেকে পুরোপুরি সহযোগিতা চাই। ডিজাস্টার হয়ে যাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই যদি আপনারা চিৎকার করতে শুরু করেন, এই কারেন্ট নেই, এই জল নেই, সেটা কিন্তু সহযোগিতা হবে না। আমি আপনাদের সহযোগিতা চাইছি। ডিজাস্টার কি ধরনের তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করে। ডিজাস্টারের সময় একটু ধৈর্য্য ধরতে হবে। যদি একটা ল্যাম্পপোস্ট ভেঙে পড়ে, ডিজাস্টার এর সময় কেউ সেটা সারাতে গেলে সেও মারা পড়তে পারে। তাই আমি বলবো ডিজাস্টারের সময় এমন কিছু করবেন না যাতে সাধারণ মানুষ আতঙ্কিত হয়।"

অন্যদিকে আজ করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ভবানীপুরের কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল কোভিড চিকিৎসাকেন্দ্রে পরিণত করা হয়েছে। আজ অর্থাৎ সোমবার বিকেলে নবান্ন সভাঘর থেকে ভার্চুয়ালি হাসপাতালের উদ্বোধন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই হাসপাতলে আধুনিক ব্যবস্থা সম্পন্ন ৩০০ বেড আছে এবং চিকিৎসা করার দায়িত্বে থাকছে মেডিকা হাসপাতাল। এছাড়া এই চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরিতে সাহায্য করেছে বন্ধন ব্যাংক। ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী এই উদ্যোগের জন্য কলকাতা পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই হাসপাতালে পুলিশ ও হোমগার্ড ছাড়াও স্বাস্থ্য সাথী কার্ড নিয়ে গেলেই সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাবেন।

তবে এসবের মাঝেই এবার ঘূর্ণিঝড় ‘যশ’ (Cyclone Yaas) বাংলায় আছড়ে পড়ার আগেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ করলেন তিনি। অমিত শাহের সঙ্গে বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী জানান, "ওড়িশা এবং অন্ধ্রের জন্য আগাম ৬০০ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে বাংলা পাবে মাত্র ৪০০ কোটি টাকা। কেন কম পরিমাণ আর্থিক সাহায্যের সিদ্ধান্ত? কেন বৈষম্যের শিকার বাংলা?"