খাওয়ার পর মরণ-ঘুম, সেই ফাঁকে সর্বস্ব লুঠ, তদন্তে নেমে ধরা পড়ল গুণধর কবিরাজের কীর্তি

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 04/09/2022   শেষ আপডেট: 04/09/2022 9:50 a.m.
https://unsplash.com

ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার ঘুমের ওষুধ, নানান জড়িবটি

রাতে খাওয়ার পরে মরণ-ঘুম। সকাল হলেও ভাঙছে না। আর সেই ফাঁকে বাড়ির সর্বস্ব লুঠ করে পগারপার গুণধর চোর। এলাকার পরপর কয়েকটি চুরির অভিযোগ। এদিকে কোন গৃহকর্তাই চুরির আগে বিন্দুবিসর্গ টের পান না। তদন্তে নেমে পুলিশের নাকানি-চোবানি অবস্থা। অবশেষে চুরির কিনারা। আর তারপরেই তো চক্ষু চড়কগাছ সকলের। এমনও ঘটে? যা ছিল ধারণার বাইরে।

জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ি এলাকায় পরপর কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটে। চলতি বছরের জুন মাসে এমনই একটি চুরির ঘটনায় সকলেই হতবাক। এলাকায় একটি পরিবার খাওয়া-দাওয়ার পর ঘুমিয়ে পড়েন। সকালে কেউই ঘুম থেকে ওঠেননি। এদিকে পাড়ার লোকজনদের হাঁকডাকের পরও কোন সাড়া মেলেনি। ঘরে গিয়ে দেখা যায় বাড়ির লোকজন অকাতরে ঘুমাচ্ছেন। এদিকে ঘর খোলা, ঘরে কোন জিনিসপত্র নেই। তড়িঘড়ি তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকরা জানান তাঁদের ঘুমের ওষুধ খাওয়া হয়েছিল। সুস্থ হয়ে তাঁরা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার পর থেকেই সন্দেহ তৈরি হয়। সেই পরিবারের লোকজন কীভাবে ঘুমের ওষুধ খেলেন কেউই বুঝতে পারছিলেন না। কয়েকদিন আগে নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পেয়ে জোড় পাকড়ি এলাকা থেকে তপন রায় নামে একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাকে আদালতে তুলে হেফাজতে নেওয়া হয়। জেরা করতেই উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ময়নাগুড়ি দক্ষিণ মৌয়ামারি এলাকা থেকে এরপর পুলিশের জালে ধরা পড়ে সোনা মহম্মদ নামে এক কবিরাজও। চুরির ঘটনাগুলির সঙ্গে এই কবিরাজের ছিল ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র।

কীভাবে চলত এই কারসাজি? তদন্তে জানা গেছে, এই কবিরাজ বিভিন্ন পরিবারে গিয়ে সমস্যার সমাধান করতেন। বিনিময়ে কিছু জড়িবটি খেতে দিতেন। এমনকী বলা থাকত, রাতেই সেই ওষুধ খেতে হবে। আর ওষুধ খেলেই ঘুম। তার ফাঁকেই চুরির কাজ সমাপ্ত। ইতিমধ্যেই জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সেই কবিরাজকে গ্রেফতার করেছে। তার কাছ থেকে ঘুমের ওষুধ, ডিপ্রেশনের ওষুধ-সহ আরও কিছু পাউডার পাওয়া গিয়েছে।