"কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভাঙাতে ডুবল কত ঘর" নেটমাধ্যমে ভাইরাল এই ব্যক্তির গান

রাজকুমার গিরি
প্রকাশিত: 26/09/2021   শেষ আপডেট: 26/09/2021 12:13 p.m.
বন্যা পরিস্থিতি https://www.facebook.com/jayanta.sardar.39108

কেলেঘাইয়ের বন্যা, ডুবে গেল ঘরবাড়ি, খোঁজ নিলেন না কেউ, দাবি এলাকাবাসীদের

ডুবেছে একের পর এক বাড়ি। ঘরবাড়ি ছেড়ে মানুষের আশ্রয় এখন উঁচু রাস্তা কিংবা ভিন্ গাঁয়ে আত্মীয়ের ঘর। সঙ্গে গেছে গরু-ছাগল কিংবা বাড়ির পোষা পশু-পাখি। সরকারি সাহায্য কেবল প্রতিশ্রুতির আওতায়! কিছু স্থানীয় ক্লাব কিংবা সাধারণ স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে মিলছে খিচুড়ি কিংবা পানীয় জল। কিন্তু এইভাবে আর কতদিন? দীর্ঘদিন গোটা এলাকায় বন্ধ বিদ্যুৎ পরিষেবা। গ্রামের পর গ্রাম ঘোর অন্ধকারে কাটাচ্ছে দিনের পর দিন। এই দুঃখের কথা, জলযন্ত্রনার কথা উঠে এল এক সাধারণ ব্যক্তির গানের কথায়। ভারাক্রান্ত মনে গেয়ে শোনালেন সেই মর্মস্পর্শী কথাগুলি।

পূর্ব মেদিনীপুরের কেলেঘাই নদী। এমনি সময় শান্ত, ধীর-স্থির হলেও বর্ষা এলেই ফুলে ওঠে, ফুঁসে ওঠে। প্রায় প্রতি বছর বর্ষার সময় দেখা যায় তার রুদ্র রূপ। এবারেও সে শান্ত থাকেনি। দিন কয়েকের ভারি বর্ষণে ফের উত্তাল হয়েছে, ভেঙেছে তার নদীর পাড়। ভেসে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। নষ্ট হয়েছে ধান জমি, পুকুর ডোবা, ঘরবাড়ি। সেই মর্মান্তিক দৃশ্য ইতিমধ্যেই স্যোসাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রত্যক্ষ করেছে গোটা দেশের মানুষ। এবার এই 'অখ্যাত' এক ব্যক্তির গানেও উঠে এল এমন করুণ ছবি। জলের উপর বসে গেয়ে শোনালেন সেই গান। গানের কথায় এলাকার দুর্ভোগের ছবি, সঙ্গে আক্ষেপের কথা শোনালেন, "কেউ এসে বানভাসীদের নিল না খবর"।

ভগবানপুরের বছিপুরের বাসিন্দা সফিউল্লা শেখ এখন নেটমাধ্যমে ভাইরাল। তাঁর মর্মস্পর্শী গানের ভিডিও দেখে চোখের জল ফেলছেন নেটিজেনদের একাংশ। গানের কথায় একের পর এক এলাকার জলযন্ত্রনার কথা আছে, আছে মানুষের অসহায় কাতর আবেদন। কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভাঙায় কত মানুষ আজ ঘরছাড়া তার ইয়ত্তা নেই। তার সঙ্গে শুরু হয়েছে কালোবাজারির দুষ্ট চক্র। মানুষের পাশে থাকা দূরে থাকুক রান্নার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে বিপুল দামে। এই গানের কথায় ফুটে উঠেছে সেই করুণ ছবি।

ভগবানপুরের বাসিন্দা আশিস প্রামাণিক জানাচ্ছেন, "ভিডিওটি দেখেছি। এলাকার অবস্থা ভয়াবহ। সেই করুণ, মর্মস্পর্শী চিত্র তুলে ধরেছেন এই ব্যক্তি। এলাকার চারপাশ জলের তলায়। একতলার ঘরগুলো বসবাসের অনুপযুক্ত। সঙ্গে শুরু হয়েছে কালোবাজারির চক্র। বাড়ির মহিলাদের বড় সমস্যা। রাস্তার পাশে আশ্রয় নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু না আছে স্নানের ব্যবস্থা, না আছে প্রাতঃকর্ম সারার কোন স্থান। জলযন্ত্রনা তো আছেই, সঙ্গে জুড়েছে অসহায় কাতর অবস্থা। তার সঙ্গে শুনছি ঘূর্ণিঝড় গুলাব আসছে। মানুষ বাঁচবে কীভাবে?"