জেলা ভেঙে মুর্শিদাবাদ নাম সরানো যাবে না, শাসকদলকে হুঁশিয়ারি কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীর

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 02/08/2022   শেষ আপডেট: 02/08/2022 4:54 p.m.
কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী ছবি সংগৃহীত

কংগ্রেসের পাশাপাশি বিজেপিও শাসকদলের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে

গতকালই নবান্নের (Nabanna) মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সাতটি নতুন জেলা বাড়বে বাংলায়। সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ঘোষণা করেছেন, উত্তর ২৪ পরগনা ভেঙে হবে দুটি নতুন জেলা বসিরহাট এবং বনগাঁ বাগদা নিয়ে ইছামতি। অন্যদিকে দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবন। মুর্শিদাবাদ (Murshidabad) ভেঙে আলাদা হচ্ছে বহরমপুর (Beharampur) এবং কান্দি (Kandi)। অন্যদিকে বাঁকুড়া ভেঙে বিষ্ণুপুর এবং নদিয়া ভেঙে রানাঘাট তৈরি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর বহুদিনের পরিকল্পনা ছিল উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার মত বড় জেলা অপভ্রংশ করার কিন্তু পাশাপাশি বাঁকুড়া মুর্শিদাবাদ এর মত জেলাগুলি ভাঙ্গার তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছে না বিরোধী দলের নেতারা। তাই নতুন সাত জেলার ঘোষণা হতেই শাসকদলকে বিঁধতে শুরু করেছেন সকলে।

এরমধ্যে মুর্শিদাবাদের কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী আক্রমণ করে বলেন, "মুর্শিদাবাদ জেলা ভাঙতে পারেন, কিন্তু মুর্শিদাবাদ জেলার নামটা, তার অস্তিত্বকে কেউ মুছে দিতে পারেন না। এ মুর্শিদাবাদ তথা বাংলার মানুষ কোনওদিন মেনে নেবে না, এর বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলন চলবে, যতদূর যেতে হয় আমরা যাব।" মুর্শিদাবাদের ঐতিহাসিক তাৎপর্য উল্লেখ করে একটি ভিডিও বার্তা দিয়েছেন অধীর বাবু। সেখানে তাকে বলতে শোনা যায়, "মুর্শিদাবাদ শুধু একটা জেলার নাম নয়। পশ্চিমবঙ্গ তথা গোটা ভারতবর্ষের ঐতিহাসিক ভূখণ্ডের নাম। এই মুর্শিদাবাদ জেলা এক সময় ছিল বাংলা বিহার উড়িষ্যার রাজধানী। এই মুর্শিদাবাদ জেলাকে দেখে লর্ড ক্লাইভ বলেছিলেন, ‘লন্ডনের থেকেও মুর্শিদাবাদ জেলায় অনেক বেশি ধনী মানুষের বসবাস’। জেলার নাম পরিবর্তন হবে কেন? উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর পশ্চিম মেদিনীপুর হয়েছে। তা হলে মুর্শিদাবাদ কেন হতে পারে না? মুর্শিদাবাদ থাকল, সঙ্গে পূর্ব পশ্চিম উত্তর দক্ষিণ যা খুশি রাখুন। কিন্তু মুর্শিদাবাদ নামটা সরিয়ে দিলে প্রতিবাদ হবেই।"

আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি‌ও। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী শাসকদলকে কটাক্ষ করে বলেন, "এটা করা হল, কারণ আইপিএস, আইএসদের যাতে ছাড়তে না হয়। খুব কৌশলগত ভাবে এটা করা হয়েছে। যাতে তাবেদারদের দিল্লি নিতে না পারে।" চুপ নেই সিপিএম‌ও। বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী জানালেন, "পুলিশ জেলা তিনটে, স্বাস্থ্য জেলা ২টো, এখন আবার জেলার নাম বলছেন আরেকরকম। মানে জেলা একরকম, পুলিশ জেলা একরকম, স্বাস্থ্য জেলা একরকম। এত সমস্ত তালগোল করে দিলে লুটেপুটে খেতে সুবিধা হয়।" প্রসঙ্গত, জেলা ভাঙা সত্যিই একটি বড় সিদ্ধান্ত। ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ব হয়ে পড়েছে রাজ্যবাসী। যে সকল এলাকাগুলিকে জেলা হিসেবে বিভক্ত করা হচ্ছে, সেই অঞ্চলনিবাসীরাও অনেকাংশেই খুশী নন এই সিদ্ধান্তে।