কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডে মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রকে চেনেন না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 16/04/2021   শেষ আপডেট: 16/04/2021 3:29 p.m.
twitter.com/BanglarGorboMB

"এইসব নাম তুলে কথা বলার কোন মানে হয় না। এইরকম কাউকে চিনি না।" মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

কয়লা ও গরুপাচার কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্রকে চেনেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গতকাল একটি টিভি চ্যানেলে সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, "এইসব নাম তুলে কথা বলার কোন মানে হয় না। এইরকম কাউকে চিনি না।" তৃণমূল নেত্রীর এই কথায় কার্যত রাজ্যজুড়ে শাসক-বিরোধী মহলে চাপানউতোর শুরু হয়েছে। কয়লা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বিনয় মিশ্র তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সে কথা প্রায় নিশ্চিত। দীর্ঘদিন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। স্বাভাবিকভাবে বিরোধীপক্ষ তাই প্রশ্ন তুলেছেন কিভাবে তৃণমূল নেত্রী একথা বলেন যে তিনি বিনয় মিশ্র কে চেনেন না? ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই বিনয় মিশ্রের বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করেছে। শুধু তাই নয়, যুব তৃনমূলের সম্পাদক থাকাকালীন তৃণমূলের সঙ্গে তার কি কি যোগাযোগ ছিল সে বিষয়ে খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এমন অবস্থায় তৃণমূল নেত্রীর এই মন্তব্যে রীতিমতো রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে।

অন্যদিকে, এদিন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য এক সাক্ষাতকারে কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন যে বিনয় মিশ্র তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমানে বিনয় মিশ্র কয়লা ও গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সাফ জানিয়েছেন, তার অর্থ এই নয় যে বিনয়কে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। তার যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছেন মুকুল রায়ের মতো অসংখ্য বিজেপি নেতারা নানা মামলায় অভিযুক্ত হয়েও যদি বিজেপির বিভিন্ন কেন্দ্রীয় পদ সামলাতে পারে, তাহলে বিনয় মিশ্রই বা কেন এই পদ সামলাতে পারেনা। তাই বিজেপির এই বক্তব্যকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

এবারের নির্বাচনে বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে মূলত কয়লা গরুপাচার নিয়ে বারবার সরব হয়েছেন। শুধু নয় তার, পাশাপাশি নির্বাচনের প্রতিটি দফার শুরুতে কিংবা শেষে নানান অডিও টেপ প্রকাশ পেয়েছে। তাতে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে। অডিও টেপ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেত্রী বলেছেন, "এটা একেবারেই অনৈতিক। কারো কথা রেকর্ড করে ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয়।" তিনি আরো অভিযোগ করেছেন কেন্দ্র সরকার তার মোবাইল ট্যাপ করার চেষ্টা করছে এবং তার দলকে নানান দিক থেকে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছে। তাছাড়া কয়লা কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্পষ্ট যুক্তি যে বিষয়টি সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যাপার। এর সঙ্গে রাজ্য সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই। যদি কয়লা কাণ্ডে কোনো দুর্নীতি হয়ে থাকে, তার দায় সম্পূর্ণরূপে কেন্দ্রীয় সরকারের। সব মিলিয়ে কয়লা, গরু পাচার কাণ্ড নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম।