স্বচ্ছ ভারত অভিযান এবং অম্রুত প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 01/10/2021   শেষ আপডেট: 01/10/2021 4:55 p.m.
- twitter

ভারতবর্ষে প্রত্যেকদিন ১ লক্ষ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, প্রধানমন্ত্রী

শুক্রবার দুপুরবেলা স্বচ্ছ ভারত অভিযান-আরবান (এসবিএম-ইউ) এবং অটল মিশন ফর রিজ্যুভেনেশন অ্যান্ড আরবান ট্রান্সফরমেশন (অম্রুত) প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শহরগুলিকে আবর্জনামুক্ত করা এবং জলসম্পদকে সুরক্ষিত করাই এই দুই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য।

দিল্লিতে ডঃ আম্বেদকর ইন্টারন্যাশনাল সেন্টারে এই দুই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা করার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডঃ ভীমরাও রামজি আম্বেদকরের স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করবে এসবিএম-ইউ ২.০ এবং অম্রুত ২.০। তিনি বলেন, আম্বেদকর বিশ্বাস করতেন, অসাম্যতা দূরীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে শহরের উন্নয়ন। সাথে তাঁর সংযুক্তি, পরিচ্ছনতা কর্মসূচীকে সাফল্যমণ্ডিত করার ক্ষেত্রে বড় ভুমিকা গ্রহন করেছে বর্তমান যুবসমাজ।

উদাহরন দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকাল টফি খেয়ে তার মোড়ক কেউ রাস্তায় ফেলে না। বরং তা পকেটে ঢুকিয়ে রাখে। নবীনরা, প্রবীণদের রাস্তায় আবর্জনা ফেলতে নিষেধ করে। তাঁর কথায়, আমাদের মনে রাখতে হবে, পরিচ্ছনতা কেবলমাত্র এক দিন বা এক পক্ষ বা এক বছরের জন্য না। এটি মুষ্টিবদ্ধ কিছু মানুষের জন্যেও না। এই প্রকল্প প্রতি দিন, প্রতি পক্ষ, প্রতি বছর পালন করার জন্য। প্রত্যেক মানুষকে এই কর্মসূচী চালিয়ে যেতে হবে। একটি প্রজন্ম থেকে পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চালিত করতে হবে পরিচ্ছনতার চিন্তাধারাকে।

তথ্য দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিন জানান, ভারতবর্ষে প্রত্যেকদিন ১ লক্ষ টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়। দুই প্রকল্পের নতুন এই পর্যায়ে শহর থেকে আবর্জনার পাহাড়কে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করে তা পুনর্ব্যবহারযোগ্য করে তোলা হবে। সাস্টনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল ২০৩০ পূরণ করার পথেও সাহাজ্য করবে এই দুই প্রকল্প, এমনটাই মত প্রধানমন্ত্রীর দফতরের।

প্রসঙ্গত, স্বচ্ছ ভারত অভিযান-আরবান প্রকল্পটির মূল লক্ষ্য দেশের শহরগুলিকে আবর্জনামুক্ত করা। তবে শুধু আবর্জনামুক্তই নয়, অম্রুত প্রকল্পের আওতায় না আসা শহরগুলির জল পরিশোধনও করা হয় এর প্রকল্পের মাধ্যমে। মুলত তিনটি ‘আর’-এর উপর ভিত্তি করে চলে পরিশোধন প্রক্রিয়া। প্রথমে কঠিন বর্জ্য খুঁজে বের করা হয়। তারপর রিডিউস অর্থাৎ কমানো, রিইউস অর্থাৎ পুনর্ব্যবহার এবং রিসাইকেল অর্থাৎ ব্যবহারযোগ্য করে তোলা – এই তিন নীতির উপর চলে পরিচ্ছনতা পর্ব। প্রধানমন্ত্রীর দফতর সূত্রে খবর, এসবিএম-ইউ ২.০-র জন্য ধার্য করা হয়েছে ১.৪১ লক্ষ কোটি টাকা। অপরদিকে অম্রুত ২.০ এর মাধ্যমে ৪৭০০ টি শহরের প্রায় ২.৬৮ কোটি গৃহস্থালিতে পৌঁছে দেওয়া হবে পানীয় জলের লাইন। শুধু তাই নয়, ৫০০ টি অম্রুত আওতাভুক্ত শহরে তৈরি হবে ১০০ শতাংশ নিকাশি ব্যবস্থা। যার ফলে উপকৃত হবেন প্রায় সাড়ে দশ কোটি মানুষ। অম্রুত ২.০-র জন্য ধার্য করা হয়েছে ২.৮৭ লক্ষ কোটি টাকা।

উল্লেখ্য, সাত বছর আগে পথ চলা শুরু করে এই দুই প্রকল্প। যা ধীরে ধীরে নেয় জনআন্দোলনের রুপ। বর্তমানে দেশের ৭০ শতাংশ কঠিন বর্জ্য পরিশোধিত হয়, এমনই তথ্য সামনে এনেছে প্রধানমন্ত্রীর দফতর। ইতিমধ্যেই অম্রুত প্রকল্পের মাধ্যমে ১.১ কোটি গৃহস্থালিতে পৌঁছে গেছে পানীয় জলের লাইন। ৮৫ লক্ষ গৃহস্থালি পেয়েছে নিকাশি ব্যবস্থার পরিষেবা। প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন চার কোটিরও বেশি দেশবাসী।