"সনাতনী পূজা ও সংস্কৃতি, বার্লিন" - এর প্রথম দুর্গাপূজোর পরিকল্পনা
কলা বউ স্নান থেকে মাস্ক এবং সানিটাইজার, পূজোর নিয়মরীতির সাথে করোনার সতর্কতা মেনেই জার্মানির বার্লিনে হতে চলেছে প্রবাসী বাঙালিদের পূজো
বাঙালির কাছে দুর্গাপূজো শুধুমাত্র উৎসব নয়, এটি একটি আবেগের মুহূর্তও বটে। তা সে পূজো পূজো গন্ধই হোক বা কাশফুলের নির্মল দৃশ্যই হোক। ষষ্ঠীর বোধন থেকে অষ্টমীর অঞ্জলি দিয়ে বিজয়া দশমী পর্যন্ত, বাঙালির কাছে এটি বছরের সর্বাধিক প্রতীক্ষিত সময়। কিন্তু এমন অনেক বাঙালিই আছেন যারা এই সময়টায় তাদের বাড়ি ফিরে গিয়ে এই উৎসব উদযাপন করতে পারেননা। কিন্তু কথাতেই আছে ‘Adversity is the mother of invention’, তাই বহু প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সনাতনী পূজা ও সংস্কৃতি, বার্লিন, জার্মানি এবছর তাদের প্রথম দুর্গাপূজো পালন করতে চলেছে।
এই ক্লাবের অর্থ সম্পাদক কণিকা সরকারের কথায়, "সনাতনী পূজা ও সংস্কৃতির প্রধান উদ্দেশ্য আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশীয় সংস্কৃতিকে বহির্বিশ্ব এবং বর্তমান প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা। ধর্ম এবং শিক্ষার সমন্বয়ে যে প্রাচীন সংস্কৃতির আমরা ধারক ও বাহক তা যেন কোনো ভাবেই বিলুপ্ত না হয়ে যায়।"
ক্লাবের সভাপতি অন্নেষা লাহিড়ীর বক্তব্য অনুযায়ী, "জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য উন্মুক্ত আমাদের অনুষ্ঠান, এবং এর মাধ্যমে সকলের মাঝে কুসংস্কার মুক্ত মানবতার বিকাশ হোক এই আমাদের লক্ষ।" এছাড়া ক্লাবের অন্য দুই উপদেষ্টা হলেন পংকজ রায় এবং প্রদ্যোৎ কুমার তালুকদার।
যদিও বর্তমান করোনা আবহে সব প্রতিকূলতা পেরিয়ে দুর্গাপূজোর আয়োজন করা কার্যতই একটি চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক গোবিন্দ চন্দ্র পাল জানান "এবছর করোনার কারণে স্বল্প পরিসরে হলেও পূজোর কোনো নিয়ম রীতিতে ত্রুটি থাকবেনা।" মা এর বোধন থেকে শুরু করে সপ্তমীর সকালে নবপত্রিকা স্নান, অষ্টমীর সন্ধিপূজো, পুষ্পাঞ্জলি, এবং ভোগের প্রসাদ বিতরণ সবই পঞ্জিকা অনুসারেই মেনে চলা হবে। এছাড়াও পূজোর অন্যতম আকর্ষণ হিসেবে দশমীতে মা’কে বরণ, সিঁদুর খেলা এবং ধুনুচি নাচের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু এই সব কিছুই সোশ্যাল ডিস্টেন্সিং কে মাথায় রেখেই মেনে চলা হবে বলে জানায় পূজো কর্তৃপক্ষ। শুধু তাই নয়, পূজো প্রাঙ্গনে সকলের জন্য মাস্ক এবং সানিটাইজার এরও ব্যাবস্থা থাকবে বলে তারা জানান।
শুধু দুর্গাপূজোই না, সনাতনী পূজা ও সংস্কৃতি, বার্লিন লক্ষীপূজা, সরস্বতীপূজা, পয়লা বৈশাখ, রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তীর মতো বিভিন্ন ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান গুলিরও উদ্যোক্তা তারা।