হিমায়িত খাদ্য হিসেবে মটরের গুণাগুণ, জানেন কি?
হিমায়িত মটরের উপকারিতা নিয়ে, বিশেষজ্ঞদের মতামত
অনেকেই হিমায়িত খাবারের নাম শুনলেই অসন্তুষ্ট হবেন! কারণ হিমায়িত খাদ্য প্রস্তুত হল, কৃত্রিম উপায়ে খাদ্যকে নির্মাণ করা! যা প্রাকৃতিক নয়! সেই কারণে অনেকেই হিমায়িত খাদ্য এড়িয়ে যান। তবে বিশেষজ্ঞরা বিভিন্ন প্রতিবেদনে জানাচ্ছেন, মটরশুঁটি হিমায়িত অবস্থায়, যথেষ্ট খাদ্যগুণ বজায় রাখে। ফিলাডেলফিয়ার পুষ্টিবিদ, এমিলি উন্ডার (Emily Wunder) স্থানীয় প্রতিবেদনে এমন বক্তব্যই পেশ করেছেন যে, আপনি আপনার সংরক্ষণে, নিশ্চিন্তে মটরশুঁটি মজুত রাখতে পারেন। উন্ডার বলেছেন, হিমায়িত মটরশুঁটির যেমন নিজস্ব পুষ্টিগুণ আছে, সেরকমই এটি একটি ভালো উদ্ভিজ্জ প্রোটিনের উৎস।
হিমায়িত মটরশুঁটির উপকারিতা -
হিমায়িত মটরশুঁটির পুষ্টিগুণ - তাজা মটরকে সর্বোচ্চ পরিপক্ক অবস্থায় বাছাই করার পরে, ক্ষতিকর উৎসেচক গুলিকে অপসারণ করে (ব্লাঞ্চিং) হিমায়িত করা হয়। এর ফলে মটরগুলি নিরাপদ এবং সতেজ থাকে।হিমায়িত করার ফলে মটরগুলি, হিমায়িত নয় এমন মটর বা অন্যান্য শুষ্ক শাকসবজিগুলির তুলনায় অধিক পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হয়। উৎসেচকের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার ফলে, হিমায়িত মটরের রং, স্বাদ, স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পায়, এবং বলা বাহুল্য, এই মটর আমাদের শরীরে উন্নতি সাধন ঘটায়!
দীর্ঘস্থয়ী- হিমায়িত নয় যেই মটরশুঁটিগুলি, খুব বেশি হলেও পাঁচ থেকে সাত দিন ফ্রিজে 'টাটকা' ভাবে রাখা যেতে পারে। অন্যদিকে হিমায়িত মটর এক বছর ধরে সতেজ থাকে।
ফাইবার প্রদান - হিমায়িত মটর, উচ্চ পরিমাণে ফাইবার প্রদান করে। এটি হজমের সহায়তা যেমন করে, সেরকমই কোলেস্টেরল এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে পারে।
ভিটামিন এবং খনিজ লবণ - হিমায়িত মটর ভিটামিন এ (Vitamin A) , সি (Vitamin C), কে (Vitamin K), পটাশিয়াম (potassium), আয়রন (iron) এবং ম্যাগনেসিয়াম (magnesium) এর মত খনিজ গুলির দুর্দান্ত উৎস হিসেবে কাজ করে। অন্যান্য শাকসবজির তুলনায় মটরশুটিতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কম থাকে।
পুষ্টিগুণ অক্ষত রেখে, হিমায়িত মটর কীভাবে রান্না করবেন -
হিমায়িত মটরগুলি পুষ্টির একটি ভাল উৎস হলেও, কিছু রান্নার সময় নষ্ট হয়ে যেতে পারে। কিছু ভিটামিন জলে দ্রবণীয় এবং কিছু তাপের প্রতি সংবেদনশীল। খাদ্য বিজ্ঞান এবং জৈবপ্রযুক্তিবিদ্যায় ( Food Science and Biotechnology) ২০১৮ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, মটরের মতো সবজি সেদ্ধ করলে সবচেয়ে বেশি পুষ্টির ক্ষতি হয়।
পুষ্টিবিদ উন্ডার বলছেন, পুষ্টিগুণ অক্ষত রাখতে মটন রান্না করা সবচেয়ে উপাদেয় পদ্ধতিটি হলো 'স্টিমিং' অর্থাৎ ভাপে রান্না করা। এরপরে আপনি ওভেনে মটর সেঁকতে বা ভাজতে পারেন। সেঁকার সময় তেল বা মাখন ওভেনে ছড়িয়ে দিতে পারেন। কেবল এটুকু নিশ্চিত করুন, যেই রন্ধন প্রনালী আপনি নির্বাচন করবেন, তাতে কিন্তু অধিক জল প্রদান করা যাবেনা। স্বল্প পরিমাণ জলে সমস্ত কাজটি সাধন করতে হবে।
মটরশুঁটির পুষ্টিগুণ সংরক্ষণের জন্য, ওয়ান্ডার হিমায়িত মটর প্রস্তুত করার যে পরামর্শগুলি দেন তা হল- ১) মাশরুম দিয়ে স্টিমিং ২) তেল, লেবু সহযোগে সাঁতলানো পাস্তায় হিমায়িত মটরশুঁটি যোগ করুন। ৩)একটি সুস্বাদু পেস্টো (একপ্রকার সস, যা পাস্তায় প্রয়োগ করা হয়) তৈরি করুন, যার উপকরণে জলপাই তেল, লেবু, রসুন, বাদামের সঙ্গে মটরশুঁটিকে দোসর বানান। ৪)আপনার পছন্দের মশলাসহ 'স্নাক্স' তৈরি করতে এয়ার ফ্রায়ারে মটরশুঁটিরগুলি ভেজে নিন।