আবির্ভূত হয়েছে করোনাভাইরাসের আরও মারাত্মক রুপ : উহানের গবেষকদল

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 28/01/2022   শেষ আপডেট: 28/01/2022 8:28 p.m.

নতুন রুপ ‘নিওকোভ’-এর মারনক্ষমতা প্রতি তিনজনে এক জন

২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর চিনের উহান (Wuhan) শহরে প্রথম দেখা মিলেছিল করোনা ভাইরাস SARS-CoV-2-এর, যা দ্রুত অতিমারির (pandemic) রুপ নিয়ে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। ভয়ঙ্কর এই ভাইরাসের জেরে যে কেবল প্রাণহানি হয়েছে, তা নয়, ভেঙে পড়েছে প্রায় সমস্ত দেশের অর্থব্যবস্থা, শিক্ষাব্যবস্থা। ভাইরাসের খোঁজ মেলার দু’বছর অতিক্রান্ত হলেও এখনও তার প্রকোপ থেকে মুক্তি পায়নি বিশ্ববাসী। এহেন পরিস্থিতির মাঝেই আবারও ভয়াবহ দিনগুলির স্মৃতি উসকে দিয়ে আশঙ্কার কথা শোনালেন সেই উহানেরই গবেষকরা। জানালেন, দক্ষিণ আফ্রিকায় (South Africa) আবির্ভূত হয়েছে করোনা ভাইরাসের নতুন রুপ ‘নিওকোভ’ (NeoCoV), যার প্রকোপে মৃত্যুহার হতে পারে আকাশছোঁয়া।

গবেষকরা জানিয়েছেন, করোনা ভাইরাসের নতুন স্ট্রেন ‘নিওকোভ’ বর্তমান করোনা স্ট্রেনগুলির থেকে অনেক দ্রুতহারে এক দেহ থেকে অন্য দেহে সংক্রমিত হয়। ‘নিওকোভ’-এর মারণক্ষমতাও করোনার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের থেকে বেশি। প্রতি তিন জন সংক্রামিতের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে এক জনের, এমনই জানিয়েছেন উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের (Wuhan University) গবেষকরা।

কিন্তু কি এই ‘নিওকোভ’? গবেষকরা জানিয়েছেন, ‘নিওকোভ’ নামটা নতুন হলেও তা কিন্তু আমাদের পূর্বপরিচিত। ২০১২ এবং ২০১৫ সালে SARS-CoV-2-এর (Severe Acute Respiratory Syndrome Coronavirus 2) অনুরূপ এক ভাইরাস MERS-CoV-2 (Middle East Respiratory Syndrome Coronavirus 2) ছড়িয়ে পড়েছিল মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলিতে। সেই MERS-CoV-2-এর সাথেই যুক্ত এই ‘নিওকোভ’।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাদুড়ের শরীরে খোঁজ পাওয়া গিয়েছে এই ‘নিওকোভ’ ভাইরাসের। এতদিন পর্যন্ত ধারণা ছিল, কেবলমাত্র এক বাদুড়ের দেহ থেকে অন্য বাদুড়ের দেহেই ছড়াতে পারে এই ভাইরাস, তবে সম্প্রতি এক গবেষণাপত্র সেই ধারণাকে নস্যাৎ করে তাদের রিপোর্টে জানিয়েছে, বাদুড়ের পাশাপাশি মানুষের শরীরেও সংক্রমিত হতে পারে ‘নিওকোভ’ এবং তার আরও একটি নিকটাত্মীয় PDF-2180-CoV। উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োফিজিক্স বিভাগের বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ‘নিওকোভ’ ভাইরাসের শরীরে একটিমাত্র মিউটেশন হলেই তা মানব কোষে অনুপ্রবেশ করতে পারবে।

চিনা গবেষকরা এও জানিয়েছেন, ‘নিওকোভ’ ভাইরাস SARS-CoV-2 এবং MERS-CoV-2, দুই ভাইরাসেরই ক্ষমতা বহন করে। এটি যেমন SARS-CoV-2-এর মতো অতি দ্রুত সংক্রমিত হতে পারে, তেমনই এর মারণক্ষমতা MERS-CoV-2-এর মতো অত্যন্ত বেশি। তাই নতুন এই ভাইরাসটি একবার বাদুড়ের থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে পড়লে তা যে অত্যন্ত আশঙ্কাজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে, সে কথা বলার অপেক্ষা রাখে না।