বাতিল হচ্ছে করোনা গাইডলাইন, ফ্লুরোনা নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, জানালো ICMR

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 23/03/2022   শেষ আপডেট: 23/03/2022 6:12 p.m.

৩১ মার্চ থেকে আর করোনাবিধি আইন বহাল থাকবে না দেশে

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলাকালীন ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের সাথে SARS-CoV-2-এর সহ-সংক্রমণকে অগুনতি মৃত্যুহার এবং ICU ভর্তির সম্ভাব্য কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে এই ধরনের ঘটনা বেশিরভাগই কম ঝুঁকিপূর্ণ। নয়াদিল্লি এবং পুনে-ভিত্তিক ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজির বিশেষজ্ঞদের দ্বারা করা এই সমীক্ষাটি থেকে দেখা গিয়েছে ইনফ্লুয়েঞ্জা- SARS-CoV-2 সংক্রমণে ১৩,৪৬৭ জনের মধ্যে কেবল ৫ জনের ক্ষেত্রে দেখা গেছে এবং ২০২১ থেকে ২০২২ জানুয়ারি পর্যন্ত এর বিস্তার কেবল ০.০৪%।

বেশ কিছু জনৈক সংবাদমাধ্যম কোভিড-ফ্লু সহ-সংক্রমণকে বর্ণনা করার জন্য 'ফ্লুরোনা' শব্দটি ব্যবহার করেছিল। আর এর ফলে সাধারণ মানুষের মনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। অনেকে ভেবে নিয়েছিল যে এটি একটি নতুন রোগ যা করোনার থেকেও মারাত্মক। এই প্রসঙ্গে আইসিএমআর-নিউ দিল্লির ভাইরোলজি বিভাগে প্রধান ডাঃ নিবেদিতা গুপ্ত জানান, " আমাদের গবেষণায় দেখা গেছে যে সহ-সংক্রমণের তীব্রতা, জটিলতা তুলনামূলক কম এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের বেশীরভাগের‌ই বয়সজনিত সমস্যা ছিল, ফলত সংক্রামক ভাইরাসের স্ট্রেনের পরিবর্তে সেই সমস্যাই গুরুতর হয়ে ওঠে।" তাঁর সংযোজন, "কোভিড এবং ফ্লু সহ সংক্রমণ ছিল এমন কোনো রোগীর মৃত্যুর ঘটনার রেকর্ড পাওয়া যায়নি।"

তিনি এও জানান, পাঁচটি সহ-সংক্রমণের ক্ষেত্রে দুটির মধ্যে SARS-COV-2 এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা A সাবটাইপ H3N2 ছিল। বাকি তিনটিতে SARS CoV-2 এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা বি ভিক্টোরিয়া ভাইরাস ছিল। পাঁচটি কেসের মধ্যে তিনটি ছিল এক থেকে আট বছর বয়সী শিশু। অপরদিকে দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক ছিলেন, যাদের বয়স ১৮ এবং ৭৪ বছর। বয়স্ক রোগী সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) এবং সিকেডি (ক্রনিক কিডনি ডিজিজ) তে ভুক্তভোগী ছিলেন।

প্রথম চারটি কেস মহারাষ্ট্র ও আসামের, পঞ্চম ঘটনাটি কেরালার। রোগীরা জ্বর, কাশি, সর্দি, এবং শ্বাসকষ্টের কথা জানিয়েছেন। অন্যদিকে আট বছর বয়সী শিশুটির লক্ষণ শুরু হওয়ার তিন দিন পর ইনফ্লুয়েঞ্জা A H3N2 এবং SARS-Cov 2-এর পজিটিভ রিপোর্ট আসে। তবে বাড়িতেই সুস্থ হয়ে উঠেছে শিশুটি। ডাঃ গুপ্তা জানান, "দুই দিনের মধ্যে শিশুটির অসুস্থতার সমাধান হয়ে গেছে। এই গ্রুপের একটি ১৮ মাস বয়সী মেয়ে কোভিড এবং ইনফ্লুয়েঞ্জা বি এর জন্য পরীক্ষা করেছিল এবং তার জ্বরজনিত খিঁচুনির রেকর্ড ছিল। কিন্তু তার কোনো শ্বাসকষ্টের লক্ষণ দেখা যায়নি এবং ভর্তির একদিনের মধ্যেই তার জ্বর চলে যায়।"

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশ ধীরে ধীরে করোনার প্রতিবন্ধকতা ভেঙ্গে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে। স্বাভাবিক হচ্ছে জনজীবন। গত সাত সপ্তাহ ধরে করোনা সংক্রমিতের দৈনিক সংখ্যা ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে। এইমর্মে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত অঞ্চলকে চিঠি লিখে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনের বিধান প্রত্যাহারের কথা জানান। ৩১ মার্চ থেকে আর করোনাবিধি আইন আর লাগু থাকবে না দেশে। তবে ফেসমাস্ক আপাতত বহাল থাকছে।