১০ বছর পর সুপ্রিম কোর্টে রায়ঘোষণা, দেখা গেল মুক্তি পেয়েছেন যাবজ্জীবন কারাপ্রাপ্ত আসামী

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 02/03/2022   শেষ আপডেট: 02/03/2022 10:31 a.m.
Supreme Court of India By Subhashish Panigrahi - Own work, CC BY-SA 4.0, https://commons.wikimedia.org/w/index.php?curid=84

২০০৪ সালে প্রেমিকাকে খুন করে জেলে যান সুরেশ

ভারতীয় বিচারব্যবস্থা যে শম্বুকগতিতে চলে, ফের পাওয়া গেল তার প্রমান। খুনের আসামীর করা আবেদনের রায় নির্ধারণ করতে দেশের সর্বোচ্চ আদালত (Supreme Court of India) লাগিয়ে দিল দশটি বছর। শেষপর্যন্ত রায়দানের পর দেখা গেল, প্রায় ১৬ বছর জেল খেটে ২০১৯ সালেই মুক্তি পেয়ে গিয়েছেন ‘আসামী’।

২০০৪ সালে অন্য পুরুষের সাথে কথা বলতে দেখে ক্রোধের বশে প্রেমিকাকে খুন করেন ছত্তিসগড়ের সুরেশ যাদব। ২১ সেন্টিমিটারের ধারালো ছুরি দিয়ে প্রেমিকাকে ১২ বার কোপান ‘অন্ধ প্রেমিক’। ঘটনাস্থলেই মারা যান ঐ মহিলা।

২০০৬ সালে সুরেশের বিরুদ্ধে রায়দান করে দুর্গের ট্রায়াল কোর্ট জানায়, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারা অনুযায়ী যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন তিনি। এছাড়াও ভারতীয় অস্ত্র আইনের ২৫ এবং ২৭ নম্বর ধারা অনুযায়ী একাধিক সাজা শোনানো হয় ব্যক্তিকে। উল্লেখ্য, ততদিনে ২ বছর ধরে জেলেরই ভাত খাচ্ছেন সুরেশ।

সাজাপ্রাপ্ত সুরেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন ছত্তিসগড় হাইকোর্টে। তবে ২০১০ সালে নিজেদের রায়ে একই সাজা বহাল রাখে হাইকোর্ট। অতঃপর সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন ঐ ব্যক্তি। ২০১২ সালের ২ জুলাই ছত্তিসগড় সরকারকে নোটিশ পাঠিয়ে রঞ্জিত কুমার শর্মা নামক এক উকিলকে সুরেশের আইনজীবী নিয়োগ করে। এরপর প্রায় একবছর ধরে চলে ‘হিয়ারিং’-এর খেলা। যদিও ২০১৪ সালের পর থেকে ফাইল চাপা পড়ে যায় সুরেশের আবেদন।

এখানেই শেষ নয়। গত সপ্তাহে আচমকাই সুরেশের করা আবেদনের রায়দান করে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারকের বেঞ্চ। তাঁরাও ট্রায়াল কোর্ট এবং হাইকোর্টের সুরে সুর মিলিয়ে বহাল রাখে সুরেশের যাবজ্জীবন সাজা। এদিকে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ছাড়া পেয়ে গিয়েছেন ব্যক্তি। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪৩২ নম্বর ধারার রেমিশন পেয়ে মুক্তি পেয়েছেন তিনি। তার আগে ১৫ বছর ৯ মাস ২৭ দিন জেলে থেকেছিলেন তিনি। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্ত যেকোনো আসামীই (কোর্টের তরফে বিশেষ কোনও নির্দেশ ছাড়া) ১৪ বছর জেল খাটার পর এই আবেদন করতে পারেন। সুরেশও তাই করেছিলেন এবং মুক্তি পেয়েছেন।

তাহলে এখন কি হবে? ফের কি কারাগারে বন্দী হতে হবে সুরেশকে? নাহ! দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দিয়েছেন, আসামীর আবেদন খারিজ করা হলেও রাজ্য সরকারের রেমিশন ক্ষমতা ব্যবহার করে মুক্তি পেয়েছেন সুরেশ। ফলে আবার তাঁকে ঢুকতে হবে না কারাগারে।