ছাঁটাই হতে পারেন সাড়ে তিন লক্ষ রেল–কর্মী

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 09/09/2020   শেষ আপডেট: 09/09/2020 6:15 p.m.
Smeet Chowdhury @Flickr

বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ কর্মচারী ও যাত্রীদের

কোটি কোটি সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা ভারতীয় রেল–কে বেসরকারি হাতে তুলে দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের তৎপরতা এখন তুঙ্গে। সম্প্রতি রেলের সাতটি কোচ ফ্যাক্টরিকে যুক্ত করে একটিই সংস্থা গঠনের কথা ঘোষণা করেছে তারা৷ পশ্চিমবঙ্গের চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস সহ অত্যন্ত লাভজনক এই সাতটি কারখানাকে বলা হয় ভারতীয় রেলের মণিমুক্তো৷ অথচ এগুলিকেও ব্যক্তিমালিকের হাতে তুলে দিয়ে মুনাফা লুটের সুযোগ করে দিতে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷

আগেই শুরু হয়েছে স্টেশনগুলি বেসরকারিকরণের প্রক্রিয়া৷ রেলের জমিগুলিকেও দীর্ঘমেয়াদি লিজে দেওয়া হবে পুঁজিমালিকদের৷ বেশ কিছু ট্রেনকে ইতিমধ্যেই বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে৷ রেলের শ্রমিক–কর্মচারী ও তাঁদের সংগঠনগুলির মতে, গরিব, খেটে–খাওয়া অসংখ্য মানুষকে স্বল্প মূল্যে পরিষেবা দিত যে রেলব্যবস্থা, বেসরকারি হাতে গেলে তা মহার্ঘ হয়ে উঠবে। সমস্যায় পড়বে মানুষ৷

এর চেয়েও মারাত্মক যে বিপদটির কথা বলছেন তাঁরা তা হল, বেসরকারি হাতে চলে গেলে ছাঁটাই হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে রেলের নিচুতলার সাড়ে তিন লক্ষ কিংবা তারও বেশি কর্মীর৷ কর্মী সংগঠনের নেতারা জানাচ্ছেন, এমনিতেই রেলদপ্তরে বহু পদ খালি পড়ে আছে৷ এর পরেও পঞ্চাশ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করতে চায় রেল, যার মারাত্মক প্রভাব পড়বে এর উপর নির্ভরশীল অন্যান্য ক্ষেত্রেই শুধু নয়, গোটা অর্থনীতিতে৷

ভারতীয় রেল প্রতি বছর প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব তুলে দেয় কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে৷ এই ক্ষেত্রটিতে কর্মরত প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ৷ পরোক্ষভাবে কয়েক কোটি মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে রেলের সঙ্গে। এ হেন ভারতীয় রেল–কে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ শ্রমিক–কর্মচারী, রেলযাত্রী সহ সাধারণ মানুষ। কয়েক বছর আগে আর্জেন্টিনায় রেল বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে দেশ জুড়ে বিক্ষোভের যে ঝড় উঠেছিল, সে কথা মনে করিয়ে সরকারকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন তাঁরা৷