পলাতক মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ মামলা প্রত্যাহার করল ডমিনিকা আদালত
১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণখেলাপ করে পালিয়েছিলেন মেহুল চোকসি
ভারতে পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক (Punjab National Bank) থেকে ১৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ঋণখেলাপ করে পালিয়েছিলেন মেহুল চোকসি। অ্যান্টিগার (Antigua) নাগরিকত্ব নিয়ে ছিলেন সেখানেই। সেখান থেকে বেমালুম গায়েব হয়ে যান এই হীরে ব্যবসায়ী। এর পর ডোমিনিকায় পাওয়া যায় তাঁকে। অ্যান্টিগুয়া পুলিশের কাছে মেহুল চোকসি (Mehul Choksi) দাবি করেছিলেন যে তিনি একজন অ্যান্টিগুয়ান নাগরিক এবং রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং (R&AW) এর এজেন্টরা তাকে জোর করে ডমিনিকাতে নিয়ে আসে।
সেই সময়কার এক সাক্ষাৎকারে মেহুল চোকসি দুজন ব্যক্তির ছবি শনাক্ত করে তাদের র এজেন্ট বলে দাবি করেছিলেন, তারা হলেন গুরমিত সিং এবং গুরজিৎ ভান্ডাল। এই দুই ব্যক্তির ছবি শনাক্ত করেছিলেন মেহুল চোকসি। এদের বিরুদ্ধে তাঁকে অপহরণের অভিযোগ তোলেন প্রথিতযশা এই ব্যবসায়ী। চোকসির কথায়, "আমি বিশ্বাস করেছিলাম যে তারা (গুরমিত সিং এবং গুরজিৎ ভান্ডাল) RAW এজেন্ট। এমনকি যখন আমি ডোমিনিকাতে পৌঁছেছিলাম, আমি RAW এজেন্টদের সম্পর্কে গল্প শুনেছিলাম এবং তারা কীভাবে সারা বিশ্বের দ্বীপ এবং স্থানগুলির আশেপাশে রয়েছে।" তাঁর সংযোজন, "তারা বলেছিল যে তারা RAW এর এজেন্ট এবং আমাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তবে তারা আমার সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করেছিল, এমনকি আমাকে মারধরও করা হয়েছিল।"
মেহুল জানান, ২৩ মে বারবারা জারাবিকার বাড়িতে ডিনারে তাঁর নেমন্তন্ন ছিল। সেই সূত্রে তিনি সেই বাড়িতে যান। চোকসির কথায়, "আমি তার বাড়িতে গিয়েছিলাম এবং সে আমাকে ভিতরে আমন্ত্রণ জানায়। আমার কিছু ভুল মনে হয়নি। আমি তার বাড়ির সামনে আমার গাড়ি পার্ক করে ভিতরে গেলাম। সে এক গ্লাস ওয়াইন খাচ্ছিল। তিনি আমাকে সোফায় বসিয়ে দিলেন এবং চার মিনিটের মধ্যেই দুই দিক থেকে একদল লোক ঢুকে পড়ল। তারা বলে, "আমরা জানি আপনি কে এবং আমরা আপনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যাচ্ছি।" তাদের মধ্যে দু'জন আমার হাত ধরে, দুজন আমার পা ধরেছিল এবং তাঁরা সম্পূর্ণ আমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখে।" তিনি বলেন, "করোনাকালে যখন (কোভিড -19) টিকা আসে (ভারত থেকে অ্যান্টিগায়), আমাকে বলা হয়েছিল যে সেগুলি আমার বিনিময়ে দেওয়া হয়েছে। আমি খুব ভালভাবে বুঝতে পারি যে এটি একটি চক্রান্ত ছিল।"
প্রসঙ্গত, ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থার অনুরোধে পলাতক মেহুল চোকসির বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে একটি রেড কর্নার নোটিশ জারি করা হয়েছে। আত্মসমর্পণ বা অনুরূপ আইনি পদক্ষেপের অপেক্ষায় থাকা একজন ব্যক্তিকে খুঁজে বের করতে এবং সাময়িকভাবে গ্রেপ্তার করার জন্য বিশ্বব্যাপী আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এটি মূলত একধরণের আন্তর্জাতিক গ্রেফতারি পরোয়ানা যা আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়ার প্রাথমিক ধাপ। তবে এবার ডোমিনিকা কর্তৃপক্ষ মেহুলের অবৈধ প্রবেশের যাবতীয় গ্রেপ্তারের পরোয়ানা তুলে দিল।