আমেরিকান সৈন্যবাহিনী আনুষ্ঠানিকভাবে দেশ ছাড়ার পরেই আফগানিস্তানের দখল নিয়েছিল তালিবান। তবে বাকি সব প্রদেশই তালিবানি বশ্যতা স্বীকার করলেও জঙ্গিদের সামনে মাথা নোয়ায়নি পূর্ব আফগানিস্থানের পঞ্জশির প্রদেশ। এর মধ্যেই শুক্রবার তালিবানের তরফ থেকে দাবী করা হয়, তাদের একমাত্র প্রতিরোধকারী পঞ্জশির প্রদেশও এবার তাদের দখলে। আর এরপরেই উল্লাসে মেতে ওঠে তালিব যোদ্ধারা। রাতভর আকাশে গুলি ছুঁড়ে পঞ্জশির প্রদেশের উপর নিজেদের জয় উদযাপন করতে থাকে তারা। আর সেই ‘উদযাপনের’ই শিকার কমপক্ষে ১৭ জন নিরীহ আফগানবাসী। আহতের সংখ্যা ৪১। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে দুনিয়াভর।
শুক্রবার রাতে পঞ্জশির প্রদেশে জয়ের খবর শুনেই তালিবানি জঙ্গিরা বেরিয়ে পড়ে কাবুলের রাজপথে। বিজয়োৎসব উদযাপনের তালবানি প্রথা অনুযায়ী দিকবিদিক জ্ঞানশুন্য হয়ে গুলি ছুঁড়তে থাকে আকাশে। আর যার জেরে প্রান হারালেন বহু নিরীহ কাবুলবাসী। এদিকে বিজয়োল্লাসের কারন দেখিয়ে জনৈক তালিবানি কমান্ডার একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, সর্বশক্তিমান আল্লার দয়ায় তাঁরা সমগ্র আফগানিস্তান দখল করেছেন। বিদ্রোহীরা পরাজিত। তাঁদের শেষ প্রতিরোধ শক্তি পঞ্জশিরও এখন তাঁদের কব্জায়। যদিও ঘটনার পর কাবুলের এক এমারজেন্সি হাসপাতাল জানিয়েছে, এই ঘটনায় অন্তত ১৭ জনের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয়েছে। আহত ৪১ জন বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
তবে তালিবানের এই দাবী নস্যাৎ করেছেন খোদ আফগান উপরাষ্ট্রপতি আমরুল্লা সালেহ। তাঁর কথায়, পঞ্জশিরে প্রচণ্ড লড়াই চললেও এখনও পর্যন্ত সেখানে কব্জা জমাতে পারেনি তালিবান। তালিবানের পঞ্জশির দখলের খবর ছড়িয়ে সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর নর্দার্ন অ্যালায়েন্সের নেতা আহমেদ মাসুদও পাল্টা টুইট করে লিখেছেন, পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া পঞ্জশিরের খবরটি সম্পূর্ণ মিথ্যা। পঞ্জশিরে যেদিন ওরা জিতে যাবে সেটা হবে পঞ্জশিরে আমার শেষ দিন। যদিও এর পরিপ্রেক্ষিতে তালিবানের দাবী, আফগানিস্তান ছেড়ে পালিয়ে বর্তমানে তাজিকিস্তানে আশ্রয় নিয়েছেন আমরুল্লা সালেহ এবং আহমেদ মাসুদ।