মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের একের পর হামলায় ধ্বস্ত বাংলাদেশ (Bangladesh)। কুমিল্লার ঘটনার পর সেদেশ জুড়ে চলছে তীব্র চাপানউতোর। বাংলাদেশ সরকারের তরফে শান্তি ফিরিয়ে আনার সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে বলে খবর। তারপরও অসন্তোষ আটকানো যাচ্ছে না। এরমধ্যেই রংপুরে বেশ কয়েকটি হিন্দুর বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া ও লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে বলে সূত্রের খবর। এমন অবস্থায় এই সাম্প্রদায়িক অশান্তির আঁচ পশ্চিমবঙ্গেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন একাংশ। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে সমস্ত জেলাগুলিকে বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলির প্রশাসনকে সতর্ক করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, জেলা প্রশাসনের কাছে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে যে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে বাড়তি নিরাপত্তা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কোন প্রকার ভুয়ো খবর ছড়িয়ে যাতে না পড়ে সেদিকে নজর দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেশী দেশের সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনার আঁচ এরাজ্যেও পড়তে পারে। তৈরি হতে পারে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মতো পরিস্থিতি। তাই বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী জেলাগুলিকে আগেই সতর্ক করা হয়েছে। কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই প্রশাসনের তরফে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
সম্প্রতি বাংলাদেশে দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ঘটে যাওয়া ঘটনায় সেদেশে তীব্র চাপানউতোর তৈরি হয়েছে। অভিযোগ কুমিল্লার একটি পুজো মণ্ডপে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরান রাখার অভিযোগ। এই ঘটনায় বাংলাদেশে ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজন প্রাণ হারিয়েছেন। অনেক হিন্দুদের বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেদেশের সরকারের তরফে সংখ্যালঘুদের পাশে থাকার সব ধরণের চেষ্টা করা হচ্ছে। তারপরও পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সেদেশের প্রশাসনকে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকেই ইতিমধ্যেই বাড়তি চাপ আসতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গও বাংলাদেশের এই মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে।
এই মৌলবাদী দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে শুরু হয়েছে তীব্র প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলন। ঢাকার শাহবাগ মোড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ শুরু করেছেন। চট্টগ্রামের চেরাগি মোড়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন সেদেশের সংস্কৃতি কর্মীরা। এদিকে সেদেশে ২৩ অক্টোবর দেশজুড়ে অবস্থান ও অনশনের ডাক দিয়েছে 'হিন্দ বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ'। বাংলাদেশের প্রতিবাদ ঘিরে এরাজ্যেও তৈরি হয়েছে তীব্র প্রতিরোধ আন্দোলন। সব ধরণের মৌলবাদী হামলার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এরাজ্যের বেশকিছু মানুষ। আবুল বাশার, মীরাতুন নাহার, আফরোজা খাতুন-সহ প্রায় ৫৫ জনের স্বাক্ষর সম্বলিত একটি বার্তা জনমানসের সামনে তুলে ধরা হয়েছে। সোমবার কলকাতার একাডেমি অব ফাইন আর্টসের সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ভাষা ও চেতনা সমিতি-সহ একাধিক সংগঠন। সব ধরণের মৌলবাদী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন শুভবুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ।