এবারের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল বনাম বিজেপির দ্বন্দ্বে সরগরম পশ্চিমবঙ্গ। উত্তেজনায় ফুটছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহল। এ রাজ্যে ২৭ মার্চ শুরু হয়ে আট দফার ভোট শেষ হবে ২৯ এপ্রিল। কোন দল জিতবে তা নিশ্চিতভাবে জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ২ মে ফলাফল প্রকাশের দিন পর্যন্ত। কিন্তু তার আগেই কয়েকটি সংস্থার করা সমীক্ষায় ফুটে উঠেছে আগামী দিনের সম্ভাব্য ছবি। দেখা যাচ্ছে, সবগুলি সমীক্ষাতেই এগিয়ে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস, পিছিয়ে বিজেপি।
জনমত সমীক্ষার একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে টাইমস নাও-সি ভোটার, গত ৮ মার্চ। এই সমীক্ষায় উঠে এসেছে ১৫৭টি আসনে জিতে তৃণমূল কংগ্রেসের ফের ক্ষমতায় ফেরার সম্ভাবনা। ২৯৪ আসনের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে কমপক্ষে ১৪৮টি আসনে জিততে হবে। সমীক্ষা বলছে সেই ‘ম্যাজিক আসনসংখ্যা'র চেয়ে এবার ৯টি বেশি আসন জিততে পারে তৃণমূল কংগ্রেস। এদের মতে ২০১৬ সালের তুলনায় বাড়তে পারে বিজেপির ১০৪টি আসন। এবার তারা পেতে পারে ১০৭টি আসন। আর বাম-কংগ্রেস-আব্বাস সিদ্দিকি জোটের জেতার সম্ভাবনা রয়েছে ৩৩টি আসনে।
যদিও এই সমীক্ষার মতে, ৮৯টি আসনে শাসক দল তৃণমূল ও প্রধান বিরোধী বিজেপির পাওয়া ভোটের পার্থক্য খুবই কম হওয়ার সম্ভাবনা। এই আসনগুলিতে মাত্র ১.৫ শতাংশ ভোটের এদিক-ওদিক হলেই পাল্টে যেতে পারে ফলাফল। এই ৮৯টির মধ্যে তৃণমূল কংগ্রেসকে ৪২টিতে, বিজেপিকে ৩৬টিতে এবং বাম-কংগ্রেস-সিদ্দিকি জোটকে ১১টি আসনে এগিয়ে রাখছে সমীক্ষা। এমনই একটি সমীক্ষা চালিয়েছে সিএনএক্স-এবিপি আনন্দ। মোট ১১৭টি আসন বেছে নিয়ে ৯ হাজার ৩৬০ জন মানুষের মতামতের ভিত্তিতে রিপোর্ট তৈরি করেছে তারা, ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে। সেখানেও প্রায় একই ছবি দেখা যাচ্ছে। এই সমীক্ষা অনুযায়ী, ১৫৪ থেকে ১৬৪টি আসনে জিতে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূলের। বিজেপি পেতে পারে ১০২ থেকে ১১২টি আসন। বাম-কংগ্রেস-সিদ্দিকি জোটের জন্য এই সমীক্ষা বরাদ্দ করেছে ২২টি থেকে ৩০টি আসন। বাকিদের ১ থেকে ৩টি আসন পাওয়ার সম্ভাবনা।
নির্বাচনী প্রার্থী
পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনী ফলাফল নিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকে আরও একটি সমীক্ষা করেছিল সিএনএক্স। সেখানে বলা হয়েছিল, তৃণমূল পেতে পারে ১৪৬ থেকে ১৫৬টি আসন। বিজেপির ১১৩ থেকে ১২১টিতে জেতার সম্ভাবনা। স্পষ্টতই, তাদের সাম্প্রতিক সমীক্ষায় তৃণমূলের আসনসংখ্যা বাড়ার এবং বিজেপির কমার সম্ভাবনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
আসনসংখ্যা বাড়লেও এই সংস্থার দুটি সমীক্ষাতেই তৃণমূলের ভোট শতাংশ একই– ৪২ শতাংশ। বিজেপির ভোট শতাংশ ৩৭ থেকে কমে ৩৪ হওয়ার ইঙ্গিত রয়েছে এবারের সমীক্ষায়। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে ভোট হতে চলেছে আসাম, তামিলনাড়ূ, কেরালা ও পুদুচেরিতেও। টাইমস নাও-সি ভোটার-এর সমীক্ষা রিপোর্ট বলছে, আসামে অল্প ব্যবধানে হলেও বিজেপিরই জয় ধরে রাখার সম্ভাবনা। কেরালায় ফিরতে পারে বামেরা। তামিলনাড়ূতে ডিএমকে নেতৃত্বাধীন জোটের ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা। অন্যদিকে পুদুচেরিতে জয়ী হতে পারে বিজেপি-জোট।
সমীক্ষার সম্ভাব্য ফলাফল বাস্তবের কতটা কাছাকাছি যায়, তা দেখারই অপেক্ষা এখন।