আফগানিস্তানে জনপ্রিয় কৌতুকশিল্পী নজর মহম্মদের হত্যা, অভিযোগ তালিবানের দিকে
ভারতীয় তরুণ সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকির মৃত্যুর পর ফের এমন ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে আফগানিস্তানে
দিন কয়েক আগে ১৬ জুলাই ভোররাতে আফগান-তালিবান সংঘর্ষে নিহত হয়েছিলেন ভারতীয় তরুণ সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি। যা নিয়ে গোটা বিশ্বে তোলপাড় উঠেছিল। পুলিৎজার পুরস্কার-জয়ী এই সাংবাদিকের মৃত্যুতে আফগানিস্তানে (Afghanistan) তালিবানদের (Taliban) ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন একাংশ। এরপর সপ্তাহ ঘুরতে না ঘুরতেই ফের তালিবানদের হাতে প্রাণ গেল আর এক কৌতুকশিল্পীর বলে অভিযোগ করেছেন আফগানিস্তানে কর্মরত এক বিদেশি টিভি-সাংবাদিক। এই নৃশংস নারকীয় হত্যার ভিডিও স্যোসাল প্ল্যাটফর্মে ভাইরাল হতেই বিশ্ব জুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। যদিও তালিবান এই হত্যার দায়ভার গ্রহণ করেনি, তবুও আফগানিস্তানে তালিবানি শাসনের ভয়াবহতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বের শান্তিপ্রিয় মানুষ।
আফগানিস্তানের কৌতুকশিল্পী নজর মহম্মদ ওরফে খাসা জওয়ানের মৃত্যুর খবর এসেছে। দেখা গেছে মৃত্যুর আগে তাঁকে গাড়িতে করে নিয়ে যাওয়ার সময় অকথ্য অত্যাচার করা হয়। তারপর একটি গাছে দড়ি দিয়ে বেঁধে ঝুলিয়ে রাখা হয়। এরপর গলা কেটে ফেলে জঙ্গিরা। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরই বিশ্ব জুড়ে তালিবানদের প্রতি নিন্দার ঝড় ওঠে। তাজুদেন সারুশ নামে এক সাংবাদিকের পোস্ট করা এই ভিডিও ভাইরাল হতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। যদিও তালিবান এক বিবৃতি মারফত জানিয়েছে নজর মহম্মদের মৃত্যুর পেছনে তাদের কোন হাত নেই, যদিও আন্তর্জাতিক দুনিয়া সে কথা মানতে নারাজ।
উল্লেখ্য, আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই তালিবানি আগ্রাসন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। তালিবানরা ইতিমধ্যেই আফগানিস্তানের বিভিন্ন এলাকা নিজেদের অধীনে আনার চেষ্টা করে চলেছে। আফগানিস্তানের কান্দাহার এলাকায় এই তালিবানদের আগ্রাসন আরও ভয়াবহ। এই কান্দাহার এলাকায় ভারতীয় তরুণ সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি প্রাণ হারান। তদন্তের পর গোয়েন্দাদের হাতে যে রিপোর্ট এসেছে, তা এই রকম দানিশের দেহ নিজেদের হেফাজতে নিয়ে বিকৃত করার চেষ্টা করেছিল তালিবান। কান্দাহারের বাজার, বাড়িঘরে অবাধ লুটপাট চালাচ্ছে তারা। পাশাপাশি দিন কয়েক আগেই ফতোয়া জারি করেছে ১৫ বছরের ঊর্ধ্বে এবং ৪৫ বছরের কম বিধবা মহিলাদের বাধ্যতামূলক ভাবে তাদের সেনাদের সঙ্গে বিবাহ করতে হবে। অনেকে বিষয়টি সিরিয়ার যৌনদাসী প্রথার সঙ্গে তুলনা করেছেন। সব মিলিয়ে আফগানিস্তান থেকে আমেরিকার সেনা প্রত্যাহারের পর থেকেই সে দেশে তালিবানি আগ্রাসন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক একাংশ।