‘নাইটের’ বর্শায় ঘায়েল ‘রয়্যালস’, শেষ চারে কেকেআর

সৌম্যদীপ পন্ডিত
প্রকাশিত: 07/10/2021   শেষ আপডেট: 08/10/2021 12:04 a.m.
https://twitter.com/KKRiders

২০১৮ র পর আবারও প্লে অফে কলকাতা

মরন-বাঁচন ম্যাচে, ব্যাটে-বলে কামাল দেখাল মর্গান অ্যান্ড কোম্পানি। যার জেরে আইপিএলের শেষ চারে নিজেদের জায়গা পাকা করে নিল কলকাতা নাইট রাইডার্স। রাজস্থানের বিরুদ্ধে চোখধাঁধানো ব্যাটিং এবং অবিস্মরণীয় বোলিংয়ের সাক্ষী রইল কলকাতা, ভারত এবং সুদুর আরব আমিরশাহি। গিল-আইয়ারের ব্যাটিং এবং মাভি-ফার্গুসনের বোলিংয়ের সামনে ঠাণ্ডা পরে গেল রাজস্থানের বালুঝড়। আর বিশাল ব্যবধানে কলকাতার জেতার সাথে সাথেই রাজস্থানের সাথে প্রথম চারে যাওয়ার আশা শেষ হয়ে গেল রোহিত শর্মার মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সয়েরও।

এদিন টসে জিতে বোলিং বেছে নেয় রাজস্থান রয়্যালস। তবে ব্যাটিংয়ের শুরু থেকেই আজ মুল্যবান দু পয়েন্টের জন্যই যে খেলছিলেন কলকাতার খেলোয়াড়েরা, তা শুরুর ওভার থেকেই বোঝাতে শুরু করেন গিল এবং আইয়ার। আজকেও অনবদ্য একটি অর্ধশতরানের মাধ্যমে নিজের জাত চেনালেন শুভমান গিল। ৪৪ বলে করলেন মুল্যবান ৫৬ রান। তাঁর সাথে যোগ্য সঙ্গ দিলেন কলকাতার সুপারস্টার ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ারও। তিনিও করলেন ৩৮ রান। বাকিদের অবদানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য, রাহুল ত্রিপাঠির ১৪ বলে ২১ রান। সবমিলিয়ে এদিন নাইটদের ব্যাটিং ছিল অন্যান্য দিনগুলির তুলনায় যথেষ্ট পরিপক্ক এবং সমান্তরাল। ২০ ওভারের শেষে ৪ উইকেট খুইয়ে কলকাতা তোলে ১৭১ রান। রাজস্থানের তরফে একটি করে উইকেট তোলেন ক্রিস মরিস, সাকারিয়া, তেওয়াটিয়া এবং ফিলিপ্স।

দ্বিতীয় ইনিংসের শুরু থেকেই নিজেদের জাত চেনাতে শুরু করেন কলকাতার বোলাররা। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই যশস্বী জয়সওয়ালের (০) উইকেট তুলে নেন শাকিব। দ্বিতীয় ওভারে সঞ্জু স্যামসনের উইকেট খোয়ায় রাজস্থান রয়্যালস। ৪ বলে মাত্র ১ রান করে শিভম মাভির বলে মর্গানের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হন তিনি। প্রথম দুই ওভারেই মুল্যবান দুটি উইকেট পেয়ে যাওয়ায় কলকাতার আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে উঠে যায়। ফলস্বরূপ চতুর্থ ওভারের দ্বিতীয় বলেই তাঁরা তুলে নেন আরও একটি উইকেট। মাত্র ৬ রান করেই লোকি ফার্গুসনের বলে আউট হয়ে যান লিভিংস্টোন। সেই ওভারের চতুর্থ বলে আরও একটি উইকেট খোয়ায় রয়্যালস। খাতা না খুলেই ঘরে প্যাভিলিওনে ফিরে যান অনুজ রাওয়াত। দলের মাত্র ১৩ রানের মধ্যে ৪ টি উইকেট খুইয়ে ফেলে রাজস্থান। অষ্টম ওভারের তৃতীয় বলে ৮ রানে আউট হন গ্লেন ফিলিপ্স। বোলার সেই মাভি। সেই ওভারের শেষ বলে শিভম দুবেরও (১৮) উইকেট তুলে নেন তিনি। বরুন চক্রবর্তীর বলে খাতা না খুলেই আউট হয়ে ঘরে ফেরেন আইপিএলের সবথেকে দামি খেলোয়াড় ক্রিস মরিস। তবে শেষ পর্যন্ত দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে যান রাহুল তেওয়াটিয়া (৪৪)। যদিও খাদের কিনারায় পৌঁছে যাওয়া রাজস্থান রয়্যালসকে জেতাতে একা তেওয়াটিয়ার যোগদান যথেষ্ট ছিল না। শেষমেশ ১৬.১ ওভারে মাত্র ৮৫ রানেই থেমে যায় রাজস্থানের ‘ধুলোঝড়’। ৮৬ রানে জিত হাসিল করে নেয় কলকাতা নাইট রাইডার্স। কলকাতার তরফ থেকে চারটি উইকেট তুলে নেন শিভম মাভি। তিনটি উইকেট নেন ফার্গুসন। একটি করে উইকেট নেন বরুন চক্রবর্তী এবং শাকিব-আল-হাসান।

এদিনের ম্যাচের পর কলকাতার পয়েন্ট গিয়ে পৌঁছাল ১৪ ম্যাচে ১৪ তে। শেষ ম্যাচে মুম্বাই জিতলেও তাদের পয়েন্ট হবে ১৪। তবে নেট রান রেটের বিচারে একপ্রকার ধরাছোঁয়ার বাইরে মর্গানের দল। ফলে একথা বলাই যায়, দিল্লি, চেন্নাই, ব্যাঙ্গালোরের পর আইপিএল ২০২১ এর চতুর্থ দল হিসাবে প্লে অফে জায়গা করে নিতে চলেছে কেকেয়ার। সামনেই পুজো। বাঙালীর সবথেকে বড় উৎসব। আর তার আগে কলকাতা নাইট রাইডার্সের এই উপহার যে বাঙালি ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ‘কেকের উপর আইসিং’, তা বলার বোধহয় অবকাশ রাখে না।