সাধারন রান্নাকে অসাধারণ বানিয়ে জনপ্রিয়তার শিখরে বারুইপুরের জয়দীপ দাস

শ্রেয়া সাহা
প্রকাশিত: 15/02/2023   শেষ আপডেট: 15/02/2023 11:08 a.m.
instagram.com/realflavoursofbengal

জয়দীপ এবং তাঁর মা চম্পা দাস মিলে শুরু করতে চলেছেন তাঁদের নতুন পথচলা "মা ছেলের হেঁশেল"

'মাছে ভাতে বাঙালি' কিংবা 'ভোজনরসিক বাঙালি'! আপনি যে বিশেষণই ব্যবহার করুন না কেন, বাঙালিদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত খাওয়া-দাওয়া। কাজেই এর ইতিহাসও বহুদূর। সে সব আলোচনা করতে বসলে, শুরু হবে নানান তর্ক-বিতর্ক, যুক্তি। তাই সে সব সরিয়ে নজর থাকুক স্রেফ খাবারে। আর আপনি যদি হন ভোজনপ্রিয়, তাহলে চোখ মেলে ঢুঁ মারতেই হবে "Real Flavours Of Bengal" নামক পেজে। ইনস্টাগ্রাম কিংবা ফেসবুক, সমহিমায় 'কোয়ালিটি কনটেন্ট' নিয়ে এগিয়ে চলেছে বারুইপুরের যুবক জয়দীপ দাস।

ইংলিশে অনার্স নিয়ে স্নাতক হন জয়দীপ। এরপর বাড়ি ছেড়ে মেস নিয়ে চাকরির জন্য পড়াশোনা শুরু। তবে দশটা-পাঁচটার চাকরির বদলে জয়দীপ এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল নিজের প্যাশনকেই। তথাকথিত লক্ষাধিক টাকা খরচ করে কোনো হোটেল ম্যানেজমেন্ট কোর্স বা ইনস্টিটিউটে না পড়েই দু'টো ক্যাফের রান্নার দায়িত্ব সামলেছেন জয়দীপ। তাঁর কথায়, "রান্না করতে করতেই রান্না শিখেছি। ভুল হলে শুধরেছি। রান্নাটা আমার করতে ভালোলাগে। আলাদাই প্যাশন কাজ করে। আমার মাও অসাধারণ রান্না করেন।"

একা থাকার দৌলতে, ২৩ বছর বয়সে জয়দীপের রান্নায় হাতেখড়ি। প্রথম বানিয়েছিলেন ডিমের ঝোল। তবে সেই ঝোল সে সময় অল্প পুড়ে গেলেও, বর্তমানে একের পর এক 'ইউনিক' রান্নার ভিডিও আপলোড করে তাক লাগিয়ে চলেছেন জয়দীপ।

'Flavours Of Bengal' থেকে নাম বদলে হয়েছে 'Real Flavours Of Bengal', প্রথম দিকে জয়দীপ নিজের পেজে খাবারের নানান ছবি, তার রেসিপি এবং খাবারের ইতিহাস নিয়ে লেখালিখি করলেও। 'রিলস' এবং 'শর্টস'-এর দৌলতে বর্তমানে নানান রেসিপি ভিডিও আপলোড করতে শুরু করেছেন জয়দীপ। নিজেই রান্না করেন, নিজেই করেন ভিডিও এডিট। সাহায্য করেন মা-ভাইও। অবদান রয়েছে জয়দীপের আর এক ভাই প্রতীকেরও। জয়দীপের বানানো রান্নার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভাবে মানুষের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে 'ধাবা স্টাইল আন্ডা তাওয়া মাসালা', 'মালাই চিকেন কাটলেট', 'রাবড়ি', 'চিকেন টিক্কা কালিমিরচ পাকোড়া' সহ ইত্যাদি।

'রান্না যে করে, সে খাওয়াতেও পছন্দ করে- জয়দীপের ক্ষেত্রে একথা কতখানি প্রযোজ্য?' এ প্রশ্নের উত্তরে পরিদর্শককে জয়দীপ বলেন, "এটা ধ্রুব সত্য। আমার ক্ষেত্রেও খুব ভালোই প্রযোজ্য। আমি যখন কোনও কিছু রান্না করি, আমি দেখি যে আগে সবাই খাক। পরে কিছু থাকলে আমি খাব। সকলের থেকে জিজ্ঞেস করি কেমন হয়েছে খেতে। যদি কোনও ভুল থাকে, তা শুধরে নেওয়ার চেষ্টা করি।'

বর্তমানে জয়দীপের বয়স ৩০, পরিবারে মা-বাবা ছাড়াও রয়েছে ছোট ভাই। প্রত্যেকের অবিরাম সাপোর্ট এবং সাধারন রেসিপিকে অসাধারণ বানানোর 'নিনজা টেকনিক'কে সম্বল করেই আজ হাজার হাজার ফলোওয়ার্স নিয়ে সগৌরবে চলছে জয়দীপের 'Real Flavours Of Bengal'। ইতিমধ্যেই জয়দীপ এবং তাঁর মা চম্পা দাস মিলে শুরু করতে চলেছেন তাঁদের নতুন পথচলা "মা ছেলের হেঁশেল"।