বন্ধুত্বের মিঠেল হাওয়ায় ভাসাতে আসছে পলাশ ও শফিকুল, নভেম্বরে বাংলায় মুক্তি 'দোস্তজী'র

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 30/10/2022   শেষ আপডেট: 30/10/2022 8:38 p.m.
instagram.com/prosenstar

তরুণ পরিচালক প্রসূন চ্যাটার্জীর প্রথম ছবিতেই কেল্লাফতে! বিদেশ ছুঁয়ে এবার বাংলার বুকে আসছে নির্ভেজাল বন্ধুত্বের গল্প

'বন্ধু', এমন এক ছোট্ট শব্দ, অথচ এই শব্দ জুড়েই জমাট বাঁধে পাহাড়প্রমান আবেগ! বন্ধুত্বের নির্দিষ্ট সঙ্গা হয় না, তবুও বন্ধু মানে, 'কত এলোমেলো পথ হেটেছি দুজন, হাত ছিল না তো হাতে, ছিল যে যার জীবনে দুটো মন, ছিল জড়াজড়ি একসাথে'। দেশ-কাল-জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে বন্ধুত্বের হাওয়া বিস্তৃত হয়ে ওঠে, আর সেই হাওয়া বড় আরামদায়ক! বসন্তের মত আগলে রাখা যেমন আছে, তেমন আছে গ্রীষ্মের মত তেজ, আবার বর্ষার মত দুর্যোগও যেমন আছে, তেমন আছে শীতের মত একে অপরের সঙ্গে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে থাকা। এমনই এক বন্ধুত্বের ছবি এঁকেছিলেন তরুণ পরিচালক প্রসূন চ্যাটার্জী (Prasun Chatterjee), তাঁর ছবি 'দোস্তজী' (Dostojee) ছবির ক্যানভাসে। দুই প্রান্তিক শিশু, তাঁদের সংগ্রাম, জীবন যাপন, সর্বোপরি ধর্মের ক্ষুদ্র মানসিকতাকে ছাপিয়ে গিয়ে তাঁদের একে অপরের প্রতি টান হয়ে উঠেছে ছবির উপজীব্য। পরিচালক হিসেবে নতুনের খাতায় নাম লেখালেও, এই ছবি পৌঁছেছে আন্তর্জাতিক মঞ্চে। চলতি নভেম্বরে বাংলার মানুষ ফের পলাশ এবং শফিকুলের হাত ধরে ফিরে যাবেন, সেই হারিয়ে যাওয়া দিনের এক চিলতে বারান্দায়।

গল্পের প্রেক্ষাপট মুর্শিদাবাদের এক প্রত্যন্ত গ্রামকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। সময়, বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুম্বই বিস্ফোরণের পরবর্তী। ফলস্বরূপ এই প্রত্যন্ত গ্রামটি মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ হওয়ার দরুন, তাঁদের সংখ্যা লঘু হিন্দুদের প্রতি দানা বেঁধেছে আক্রোশ। সারা বিশ্বের মত তোলপাড় হয়ে যাচ্ছে এই গ্রামেরও সম্প্রীতি। ব্রাহ্মণ বাড়ির ছেলে পলাশ, এবং মুসলিম বাড়ির শফিকুলের অমলিন বন্ধুত্বেও পড়তে শুরু করেছে ধর্মের অসহিষ্ণুতার আঁচ। কিন্তু তারা শিশু, তারা সরল। তারা উদার। কোনও রকম ধার্মিক সংকীর্ণতা তাদের আক্রান্ত করতে পারে না। তারা তো একে ওপরের 'দোস্তজী,' যেকোনও প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর মত শক্তিশালী তাদের বন্ধন। তাই বিপদের দিনেও তারা ধরে রেখেছিল তাদের কচি দুটো হাত।

শুধু প্রসূন নয়, এই ছবির সকল কলাকুশলীই নতুন। মুখ্য দুই অভিনেতা আশিক (Asik Shaikh) এবং আরিফ (Arif Shaikh) , তাঁরাও এক প্রত্যন্ত গ্রামের শিশু। ইতিমধ্যে ছবিটি ২২ টি দেশের চলচিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছে। পেয়েছে নানাবিধ আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তার মধ্যে সিফেজ (CIFEZ) অর্জনের কথা তো আলাদা করে বলতেই হয়। কারণ বাংলা ছবি হিসেবে প্রথম, এবং ভারতীয় ছবি হিসবের পঞ্চম যেটি ইউনেস্কো (UNESCO) স্বীকৃত এই সিফেজ পুরস্কারটি অর্জন করেছে। ধর্মীয় গোঁড়ামিকে অতিক্রম করে যাওয়া, দুই নিষ্পাপ শিশুর বন্ধুত্ব নিয়ে তৈরি ছবি 'দোস্তজী' বাংলার মানুষ খুব তাড়াতাড়ি বড় পর্দায় দেখতে চলেছেন। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ছবির ট্রেলার। সেখানেই স্পষ্ট, আগামী ১১ নভেম্বর বাংলার মানুষ ফিরে যাবেন, শুধুমাত্র সুখের স্মৃতি হয়ে ভরে থাকা শৈশবের পাতায়।