প্রেম করার পর একসঙ্গে জীবন কাটাতে চাওয়া অপরাধের নয় : ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 07/01/2021   শেষ আপডেট: 07/01/2021 10:59 p.m.
-

প্রেমে পড়ার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না, এটি অপরাধের অন্যতম ভয়াবহ রূপ : নেতৃত্বাধীন শীর্ষ বেঞ্চ

ফের ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের। এদিন এক মামলার শুনানির রায়ে জানানো হল, প্রেমে পড়ে কারওর সঙ্গে জীবন কাটাতে চাওয়া অপরাধ নয়৷ তাই এরকম কোনও ব্যক্তিকে শাস্তি দেওয়া অন্যায়।

শুধু তাই নয়, শীর্ষ আদালতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে এটি জঘন্যতম অপরাধগুলির মধ্যে অন্যতম।  একটি মামলার শুনানিতে এ কথাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।

তবে কোন ঘটনার প্রেক্ষিতে এই শুনানি? এবিষয়ে জানা গেছে, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ১১জন ব্যক্তির জামিন মঞ্জুরের একটি আবেদনের শুনানি হয়। যারা ‘খাপ’ পঞ্চায়েতের সদস্য। প্রেমে পড়া এক জোড়া যুগল সহ তিন জনকে ফাঁসির আদেশ দেয় ওই খাপ পঞ্চায়েত। সূত্রে খবর, ১৯৯১সালের ২৭ মার্চ মাসে উত্তরপ্রদেশের মথুরা জেলায় এই ঘটনাটি ঘটে। ২০১৬ সালের মে মাসে এলাহাবাদ হাইকোর্ট এই অপরাধের জন্য ৩৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।এছাড়াও ছেলে-মেয়েগুলি ছিল জাটব সম্প্রদায়ভুক্ত। যেখানে খাপ পঞ্চায়েত গঠিত হয়েছিল মূলত জাট সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে।

এছাড়াও সংবাদমাধ্যম সূত্রের খবর, মেয়েটি তাঁর পছন্দের একটি ছেলে এবং তাদের সাহায্য করেছেন এমন এক যুবকের সঙ্গে পালিয়ে যায়। এরপরেই খাপ পঞ্চায়েতের তরফ থেকে ডেকে পাঠানো হলে, ওই যুবতী বলেন, সে ছেলেটির সঙ্গেই থাকতে চায়। আর এই ধরনের আচরণে অচলায়তনের সংস্করাচ্ছন্ন প্রবীণরা ক্ষিপ্ত হন৷ পঞ্চায়েত ওই তিন জনের বাবা-মাকে নিজের হাতে তাঁদের সন্তানকে ঝুলিয়ে রাখতে বাধ্য করে। এখানেই শেষ নয়, দু’টি ছেলেকেই মারধর ও নির্যাতন করা হয় এবং ফাঁসির আগে তাদের গোপনাঙ্গ পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই জঘন্য ঘটনার প্রেক্ষিতেই ভারতের প্রধান বিচারপতি এসএ বোবদের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ বেঞ্চ জানান, 'এই অপরাধগুলি এতটাই গুরুতর যে সামাজিক গঠনকে বিঘ্নিত করতে পারে। প্রেমে পড়ার জন্য কাউকে শাস্তি দেওয়া যায় না৷ এটি অপরাধের অন্যতম ভয়াবহ রূপ।'