অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে দেশের মানুষের 'ভ্রান্ত' ধারণা দূর করল সরকার, দেখুন কী বলল স্বরাষ্ট্র দফতর

নিজস্ব প্রতিনিধি
প্রকাশিত: 18/06/2022   শেষ আপডেট: 18/06/2022 9:45 a.m.
https://twitter.com/rajnathsingh

বৃহস্পতিবার এই অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে বিবৃতি জারি করে সাধারণ মানুষের কিছু 'ভ্রান্ত' ধারণা দূর করার চেষ্টা করা হয়েছে

অগ্নিপথ প্রকল্প (Agnipath Scheme) নিয়ে সারাদেশে নানারকম সমস্যা শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। জায়গায় জায়গায় হচ্ছে বিক্ষোভ, ট্রেন জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে বিহারের বেশ কিছু জায়গায়। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছেন প্রার্থী যুবকরা। এরইমধ্যে ভারত সরকারের তরফ থেকে এবার অগ্নিপথ প্রকল্প নিয়ে জানিয়ে দেওয়া হলো তাদের কিছু বিশেষ মতামত এবং অগ্নিপথ প্রকল্পের বেশ কিছু দিকের ব্যাপারে। ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফ থেকে বৃহস্পতিবার একটি অন্তর্বর্তী ঘোষণার মাধ্যমে অগ্নিপথ প্রকল্পের ব্যাপারে সাধারণ মানুষের ধোঁয়াশা দূর করার জন্য বেশ কিছু ঘোষণা করা হল। চলুন দেখে নেওয়া যাক, সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের এই বিশেষ প্রকল্পের ব্যাপারে কি জানাচ্ছে ভারতীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

প্রথমত, সারা ভারতের ইতিমধ্যে বলা হচ্ছিল অগ্নিপথ প্রকল্পে নিয়োজিত যুবকদের কাজ শেষ হয়ে গেলেই তাঁদেরকে সেনাবাহিনী থেকে বিতাড়িত করবে ভারত সরকার। পাশাপাশি তাঁদের ভবিষ্যৎ নিয়েও কোন রকম কোন চিন্তা করবে না ভারত সরকার। আজকের ঘোষণার মাধ্যমে স্বরাষ্ট্র দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, যাঁরা যাঁরা অগ্নিপথ প্রকল্পের মাধ্যমে ভারতীয় সেনাবাহিনীতে যোগদান করবেন, তাঁদের সকলের ভবিষ্যতের ব্যাপারে দায়িত্ব গ্রহণ করতে প্রস্তুত ভারত সরকার। পাশাপাশি, তাঁদেরকে বিভিন্ন আর্থিক প্যাকেজ দেওয়ার মাধ্যমে সাহায্য করবে ভারত সরকার। সঙ্গেই তাঁরা যদি চান তাহলে তাঁরা নিজেদের চেষ্টায় ব্যবসা তৈরি করতে পারেন, সে ক্ষেত্রে ভারত সরকার কোন ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না। অন্যদিকে, তাঁরা যদি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কিছু দফতরে চাকরি গ্রহণ করতে চায়, তাহলে তাঁদের আবেদনপত্র বেশি গুরুত্ব সহকারে দেখবে সেই দফতর।

দ্বিতীয়ত, ভারতীয় জনতার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, ভারতের অগ্নিবীর যুবকেরা পরবর্তীতে যদি কোন জঙ্গি সংগঠনে যোগদান করে, তাহলে ভারতের জন্য সমূহ বিপদ ডেকে আনবে তাঁরা। ভারত সরকারের তরফ থেকে এই সমস্ত সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে এবং জানানো হয়েছে ভবিষ্যতে কখনোই এই যুবকেরা ভারতীয় সেনার ঐতিহ্য এবং গরিমাকে বিস্মৃত হতে দেবে না এবং তাঁরা চিরকাল ভারতীয় সেনার নীতি এবং মান রক্ষার্থে কাজ করবে। চার বছর পরে যখন তারা আবার নিজেদের সাধারণ জীবনে ফিরে যাবে, তখনো তাঁরা ভারতের সুরক্ষার জন্য সমর্পিত থাকবে।

তৃতীয়ত, ভারতের জনসাধারণের মনে এই অগ্নিপথ নিয়ে সবথেকে বড় প্রশ্ন জেগেছিল এটাই, ২১ বছরের ছেলেরা যদি এইভাবে ভারতীয় সেনাতে অংশগ্রহণ করে, তাহলে ভারতীয় সেনার মান ক্ষুন্ন হবে না তো? এই সম্ভাবনাকে সম্পূর্ণরূপে উড়িয়ে দিয়ে ভারত সরকার জানিয়েছে, এই মুহূর্তে বিশ্বের বিভিন্ন উন্নতশীল দেশের সেনাবাহিনীতে যুব সমাজের যোগদান থাকে উল্লেখযোগ্য। ভারতীয় সেনাতেও যদি ভারতের যুব সমাজ অংশগ্রহণ করে তাহলে ভারতীয় সেনা আরো শক্তিশালী হয়ে উঠবে ভবিষ্যতে। তার পাশাপাশি, ভারতীয় সেনার মাত্র ৩ শতাংশ অংশে থাকবে এই অগ্নিবীর সেনারা। বাকি ভারতীয় সেনা হবে পুরোটাই অভিজ্ঞ। এই অগ্নিবীর সেনারা যদি পরবর্তীতে ভারতীয় সেনায় অংশগ্রহণ করতে চায়, তাহলে তাঁদেরকে আবারও পরীক্ষা দিতে হবে এবং সেক্ষেত্রে কিন্তু পরীক্ষা গ্রহণ করবে খোদ ভারতীয় সেনা নিজে। সেই পরীক্ষায় যদি সঠিকভাবে উত্তীর্ণ হতে পারে তাহলেই সেই অগ্নিবীর জওয়ান ভারতীয় সেনায় সঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।