এই করোনা পরিস্থিতিতেও রোজ বাড়ছে সোনার দাম
কিভাবে ইনভেস্ট করবেন সোনায়?
করোনা পরিস্থিতিতে দেখা যাচ্ছে রোজ প্রায় একটু একটু করে বাড়ছে সোনার দাম। কিন্তু আমাদের সাধারণ অভিজ্ঞতা থেকে আমরা জানি বিয়ের সিজন বা অনুষ্ঠানের সিজনে যখন সোনার গহনার চাহিদা বেশি তখন বাড়ে দাম। কিন্তু এখন তো সেই সবকিছু বন্ধ। তাহলে? কেনো বাড়ছে দাম? এই দাম বাড়ার হাওয়ায় থেকে কি কিছু ইনভেস্ট করা যায় সোনায়?
গোল্ড ইনভেস্টমেন্ট কি?
কিছু বাড়তি রিটার্ন পাওয়ার আশায় নিজের টাকাকে অন্য কোথাও রাখাটাই ইনভেস্টমেন্ট। সেটা হতে পারে ব্যাঙ্কে, হতে পারে শেয়ার বাজারে আবার কখনও বা কোনো অ্যাসেট কিনে রেখে। আর সহজভাবে বলতে গেলে দীর্ঘ সময়ের জন্য সোনা কিনে রাখাই হলো গোল্ড ইনভেস্টমেন্ট। এখন গোল্ড ইনভেস্টমেন্ট দুরকম হয়।
- নিজের টাকায় কিছু সোনার গহনা কিনে নিজের কাছে বা ব্যাংক লকারে রেখে দেওয়া।
- ভার্চুয়াল সোনা কেনা। আর সেটা নিয়ে ট্রেডিং করা।
এখন ভার্চুয়াল সোনা জিনিসটা কি সেটা জানা জরুরী। ভার্চুয়াল সোনা রিজার্ভ ব্যাংক থেকে দেওয়া হয়, এটার বিশেষত্ব এটা আপনার ব্যাংকে থাকা টাকার মতোই নম্বর হিসাবে থাকে। আর যতো টাকার সোনা সেই টাকার উপর আপনি সুদ পাবেন। আর চাইলে আপনি যেখানে ইচ্ছে ওই সোনা নিয়ে ট্রেড করতে পারেন বাড়িতে বসেই। এখন চাইলে ভার্চুয়াল সোনা হাতেও পাওয়া যায়। আর আপনি হাতে নিয়ে নেওয়ার পর সেটা উপরে লেখা ১ নম্বর পর্যায়ে পরে যায়।
উপরে লেখা গোল্ড ইনভেস্টমেন্টের দুটো রকমের মধ্যে সহজেই বোঝা যাচ্ছে যে প্রথমটিতে সোনা কেনা বেচায় বিক্রেতা বা ক্রেতার কাছে আপনার শারীরিক উপস্থিতি দরকার। আর তাই এখন ভার্চুয়াল সোনা নিয়ে মানুষ বেশি উৎসাহী।
আগে একটু দেখে নিই এইবছর কেমন হারে বেড়েছে সোনার দাম।
এর মধ্যে ৬ আগস্ট তারিখে ৫৭,৯৫০ টাকা ছিল এই সময়কালে সোনার সবথেকে বেশি দাম। আসলে বিশ্বের অর্থনৈতিক ইতিহাস বলছে যখনই মুদ্রাস্ফীতি হয়েছে, যখনই টাকার দাম অনেকটা কমেছে তখনই দাম বেড়েছে সোনার। ইনভেস্ট করার যেসমস্ত ক্ষেত্র মানুষের কাছে খোলা আছে সবকিছুই ঝুঁকিপূর্ণ কিংবা তাতে ভালো রিটার্ন নেই। কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনা হলো কিন্তু এখন এতো কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষণা হয়ে যাচ্ছে করোনার চাপে ফলে সঠিক ভরসা পাওয়া যাচ্ছে না। আবার ব্যাংকে ইন্টারেস্ট রেট কমছে প্রতি মুহূর্তে। তাই ব্যাংকে আর বাড়িতে টাকা রাখা প্রায় একই হয়ে যাচ্ছে। ফলে অনেকেই সোনায় ইনভেস্ট করার কথা ভাবছেন।
দাম কি বাড়তেই থাকবে? কি মত বিশেষজ্ঞদের?
আগেই বলা হয়েছে ইনভেস্ট করার সেফ জায়গা সোনা। কারণ আপনি সোনা কিনে রাখলে পরে দাম কমুক বাড়ুক আপনার হাতে সোনা থাকবে। আবার মুদ্রাস্ফীতির সময় কিংবা অথনৈতিক মন্দার সময় সরকার চায় বাজারে কিছু লিকুইডিটি বাড়াতে। খুব কঠিন সময়ে টাকা ছাপতে বাধ্য হয় সরকার। এখন টাকা ছাপতে চাইলেই তো আর ছাপা যায় না! তার জন্য সেই টাকার পরিবর্তে সোনা জমা রাখতে হয় সরকারকে। আর সেই জন্যই বাজার অর্থনীতির সাথে সোনার দামের এই সরাসরি সম্পর্ক। ফলে সোনার দামে খুব আমূল পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা এই মুহূর্তে নেই।
আমাদের দেখা সময়ে অর্থনৈতিক মন্দা হয়েছে ২০০৯ সালে, এখন যদি ২০০৭ থেকে ২০১০ সালের মধ্যে সোনার দামের পরিবর্তন দেখি তাহলে আন্দাজ পাওয়া যাবে এখন চলা মন্দার সময় কাটিয়ে কি হবে সোনার দামে। ৩১ মার্চ, ২০০৭ সালে সোনার দাম ছিল ৯৩৯৫ টাকা আর ৩১ মার্চ ২০১০ সালে সেই দাম গিয়ে দাঁড়ায় ১৬,৩২০ তে। ফলে ইতিহাস দেখে বর্তমান বিশ্লেষণ করে বিশেষজ্ঞরা একমত যে গোল্ড ইনভেস্টমেন্ট এখন একটা ভালো পথ ইনভেস্টমেন্টের।