সাধারণের কাছে পরিচিত হাবিব তালুকদার (Habib Talukdar) নামে। অতি সাদামাটা জীবন। সুন্দরবনের সাধারণ মধু শিকারি। সেখান থেকেই হয়ে উঠেছেন 'টাইগার হাবিব' (Tiger Habib)। সুন্দরবন অঞ্চলের 'মোস্ট ওয়ান্টেড' চোরাশিকারি। গত ২০ বছরে অন্তত ৭০ টি বাঘ হত্যা করেছেন বলে অভিযোগ। এবার পুলিশের জালে এই চোরাশিকারি।
কিন্তু এ ঘটনা একদিনে সম্ভব হয়নি। প্রথম অবস্থায় ছিলেন সাধারণ মধু শিকারি। আর চার-পাঁচটা মধু শিকারির মতো ছিল তাঁর জীবন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বরাবর সুন্দরবন অঞ্চলে চলত তাঁর অবাধ শিকার। জঙ্গলের কাছাকাছি ছিল তাঁর আস্তানা। পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে নিমেষে উধাও হয়ে যেত টাইগার হাবিব। সুন্দরবন ছিল তাঁর হাতের তালুর মধ্যে। ফলে পুলিশের চোখ এড়িয়ে গত ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলছিল তাঁর অবাধ ব্যবসা। শুধু বাঘ হত্যা নয়, সেগুলোর চামড়া, নখ এমনকী মাংস চড়া দামে বিক্রি চলত চিনের বাজারে। পুলিশের বহু চেষ্টার পরও তাঁর নাগাল পাওয়া যায়নি। অবশেষে পুলিশ হেফাজতে সুন্দরবনের টাইগার হাবিব ওরফে হাবিব তালুকদার।
সূত্রের খবর, ঘুমন্ত অবস্থায় তাঁকে গ্রেফতার করে শরণখোলা থানার পুলিশ। বাংলাদেশের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় হাবিবকে। স্থানীয় এক মধু সংগ্রাহকের কথায়, "ধীরে ধীরে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে হাবিব তালুকদার। আমরা তাঁকে ভয় পেতাম, আবার শ্রদ্ধাও করতাম। জঙ্গলে একাই বাঘের সঙ্গে লড়ে যেত।" উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে সুন্দরবনে ক্রমশ বাঘের সংখ্যা কমে যাওয়ায় চিন্তিত ছিল বন দফতর। বাংলাদেশ বন দফতর জানিয়েছে, বাঘের সংখ্যা ক্রমেই কমছিল। ২০০৪-এ যেখানে ৪৪০টি বাঘ ছিল, সেখানে ২০১৫-য় সেই সংখ্যা দাঁড়ায় ১০৬-এ। ২০১৯-এ সামান্য বেড়ে ১১৪ হয়। কারণ ওই এলাকায় চোরাশিকার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল বন দফতরের তৎপরতায়। তবে সুন্দরবনের ত্রাস টাইগার হাবিব পুলিশের জালে ধরা পড়ায় চোরা শিকার বন্ধ হবে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।