ইসলামি পরিবেশ তৈরি না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করল তালিবান (Taliban)। বুধবার কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনিযুক্ত উপাচার্য মহম্মদ আশরফ ঘইরত জারি করলেন এমনই এক ফতোয়া। দেশের অন্যতম বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের এ হেন কার্যকলাপের পর কার্যত সেদেশে নারী শিক্ষা ও স্বাধীনতার উপর শরিয়ত আইনের প্রভাবই পড়ল বলছেন ওয়াকিবহাল মহল। অনেকে বলছেন সেদেশে ধীরে ধীরে ফিরে আসছে গত বছর কুড়ি আগের তালিবানি 'কঠোর' শাসন। কেবল পড়ুয়া নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ে (University) ফিরতে পারবে না কোন শিক্ষিকা, মহিলা শিক্ষাকর্মীও।
উল্লেখ্য দিন কয়েক আগেই কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের পূর্বতন উপাচার্য মহম্মদ ওসমান বাবুরিকে সরিয়ে নতুন উপাচার্য করা হয়েছে তালিবানপন্থী মহম্মদ আশরফ ঘইরতকে। তার জেরে ৮০ জনের বেশি শিক্ষক ইস্তফা দিয়েছিলেন। এবার এই নবনিযুক্ত উপাচার্য জারি করলেন এমনই এক ফতোয়া। তিনি জানিয়েছেন, "যতদিন দেশে ইসলামি পরিবেশ তৈরি হচ্ছে না, ততদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমি মেয়েদের এখানে প্রবেশ করতে দিতে পারি না। আগে ইসলাম, পরে অন্য সব কিছু।" নয়া উপাচার্যের এই সিদ্ধান্তে সেদেশের নারী স্বাধীনতার উপর যে বড় প্রভাব পড়তে চলেছে, তা বলাই বাহুল্য।
ক্ষমতায় ফিরেই তালিবান জানিয়েছিল এ তালিবান আগের তালিবান দু'দশক আগের তালিবান নয়। গোটা বিশ্ব এক নতুন আফগানিস্তান দেখবে। তালিবানের তরফে মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ জানিয়েছিলেন, তালিবানের পূর্বতন জমানার ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটবে না। যদিও যত দিন যাচ্ছে দু'দশক আগের তালিবানের রূপই প্রকাশ পাচ্ছে। প্রথমে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা ক্লাসের কথা বলা হলেও বাস্তবে মহিলাদের যে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে তালিবান, তা কাবুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনায় ফের প্রমাণিত হল বলছেন ওয়াকিবহাল মহল।
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগেই আফগানিস্তানের নরসুন্দরদের উদ্দেশ্যে কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে, তাঁরা যাতে কারোর চুল, দাড়ি না কাটেন। সেখানে বলা হয়েছে আমেরিকানদের মতো দাড়ি ছাঁটা বা কাটা ইসলাম বিরোধী। তাছাড়া অপরাধ করলে হত্যা করে প্রকাশ্য শহরে দেহ ঝুলিয়ে রাখার মতো ঘটনা ঘটেছে। তালিবান বিরোধী কথা বললে চলছে ধড়পাকড়। এবার মহিলাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পথ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করল তালিবান, এমনটাই বলছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।