বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ। ফেনিতে শনিবার বিকেলে মৌলবাদী দুষ্কৃতীরা বাড়িঘর ভাঙচুর সহ এক দফা হামলা চালিয়েছে। যার জেরে অন্তত ১৩ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার কুমিল্লায় মৌলবাদীরা ভাঙচুর করার পরদিনই ভারতের বিদেশ মন্ত্রক উদ্বেগ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ তো থামেইনি, উপরন্তু বাংলাদেশের অন্তত এক ডজন জেলায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, শনিবার রাতে বাংলাদেশের শাসক দল আওয়ামি লিগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী এই বিষয়ে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন।
যদিও এই সমস্ত মৌলবাদী হামলা ও হিংসার ঘটনাকে একেবারেই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে জানিয়েছে দিল্লি,তবে ভারতের স্বার্থ যে এর সঙ্গে যুক্ত, মানছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কারণ, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলা ও দুর্গাপূজায় হিংসার ঘটনা যেমন ভারতীয়দের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করছে, পাশাপাশি সংখ্যালঘুদের একাংশ ভারতে আশ্রয় নেওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছেনা। দোরাইস্বামীর সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী এবং তাঁর উদ্বেগ তিনি প্রকাশ করেন।
ওদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আশ্বাস সত্ত্বেও প্রতিদিনই যে ভাবে বাংলাদেশের কোথাও না-কোথাও হামলা হচ্ছে, সে বার্তা শাসক দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতার কাছে পৌঁছে দেন দোরাইস্বামী। ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, কেন্দ্র সরকারকে বিপাকে ফেলতে বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি ও মৌলবাদীরা মিলে এই চক্রান্ত করেছে যা কঠোরভাবে দমন করা প্রয়োজন। এই লাগাতার হামলার পিছনে পাকিস্তান যোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন না বাংলাদেশি গোয়েন্দারা। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র দফতরের এক উচ্চপদস্থ ব্যক্তি জানান, তালিবান জঙ্গিরা কাবুল দখলের পরে ঢাকাতেও সক্রিয়তা বেড়েছে পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই এবং তাদের দলবল।হেফাজতে ইসলামির একাংশ এবং জামাতে ইসলামির মতো কয়েকটি মৌলবাদী সংগঠনকে ব্যবহার করে আইএসআই এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে বলে সন্দেহ করছেন গোয়েন্দারা। এমনকি পুলিশের নিচুস্তরেও আইএসআই অনুপ্রবেশ থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। এদিকে ভারতের কিছু রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনও দিল্লির কাছে শক্ত অবস্থান গ্রহণ করার দাবি জানায়।