ডাক্তার ভগবানের আরেক রূপ! এই কথাটা আজ প্রমান করে দিল কলকাতার ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথের (Institute of Child Health) চিকিৎসকরা। তারা মাসিহার মত টাকা-পয়সার কথা না ভেবে প্রাণে বাঁচালো ১০ বছরের এক বাচ্চাকে। শহরের চিকিৎসকের এমন মানবিক প্রচেষ্টাকে সবাই কুর্নিশ জানিয়েছে। ঘটনাটি পয়েলা ফেব্রুয়ারির। সেদিন কাঁথির মারিশদা গ্রামের বাসিন্দা শুভ্রাংশু খেলার ছলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছিল। আসলে সকালবেলা শুভ্রাংশু এর বাবা-মা মাঠের কাছে গিয়েছিল এবং সে ঠাকুমার সাথে পুকুরে শাক তুলতে গিয়েছিল। সেখানে সে আপন মনে কাঠাল গাছে গলায় গামছা বেঁধে ফাঁসি ফাঁসি খেলা খেলছিল। কিন্তু তাতেই বাধে বিপত্তি। কোনরকমে গলায় লেগে যায় মরণ ফাঁস। সেটাকে খোলার চেষ্টা করলেও সে বিফল হয়। প্রায় ১০ মিনিট গলায় ফাঁস নিয়ে ঝোলার পর হঠাৎ করে তার ঠাকুমার চোখে ঘটনাটি পড়ে। সে চিৎকার করে আশপাশের বাসিন্দাদের ডাকলে তারা গাছ থেকে ফাঁস খুলে ছোট্ট শুভাংশু কে নিচে নিয়ে আসে।
প্রথমে শুভ্রাংশুকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকে তাকে কলকাতার রেফার করা হয়। তারপর কলকাতায় এসে তারা প্রায় মৃত বাচ্চাকে ইন্সটিউট অফ চাইল্ড হেলথে ভর্তি করে। সেখানকার শিশু বিশেষজ্ঞ ডা: প্রভাসপ্রসূন গিরি জানিয়েছেন, "প্রথমে শুভ্রাংশুকে দেখে বোঝা যাচ্ছিল না যে তার দেহে প্রাণ আছে। দীর্ঘক্ষন গলায় ফাঁস লেগে থাকায় তার গলার ধমনী ও শিরা চুপসে গিয়েছিল। এর ফলে মস্তিষ্কে রক্ত যাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সাথে ফুসফুসের অবস্থাও বেশ খারাপ ছিল। এই অবস্থায় আমরা টাকার কথা না ভেবে চিকিৎসা শুরু করি।"
চিকিৎসক সূত্রে জানা গিয়েছে, ভর্তির পর প্রথমেই এই বাচ্চাটির গলার জায়গাটিকে ইমোবিলাইজ করা হয়। তার মস্তিষ্কে তারপর অক্সিজেন পৌঁছায়। তারপর ধীরে ধীরে তার নিস্তেজ শরীর সারা দেয়। তারপর যমে চিকিৎসকের লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত জিতে যায় চিকিৎসকরা। গত মঙ্গলবার বিকেলে শুভ্রাংশু তার বাড়িতে ফেরে। এখন শুভাংশুর পরিবারের কাছে চিকিৎসকরা ভগবান।