গত ২০ মে সোমলতা আচার্য্যর অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেল থেকে মুক্তি পেয়েছে "মিথ্যে প্রেমের গান।" সেই নিয়েই একান্ত আলাপচারিতায় সোমলতার মুখোমুখি আমাদের প্রতিনিধি সুকন্যা রায়।
সদ্য মুক্তিপ্রাপ্ত গান, কতখানি সাড়া পাচ্ছেন?
এই গানটি আগেই ব্যবহৃত হয়েছে পরিচালক মৈনাক ভৌমিকের "ব্রেক আপ স্টোরি"তে। আমার গাওয়া এই গান সকলের এতটাই পছন্দ হয়েছিল যে, আমি ভাবলাম এই গানটিকে আবার আমার চ্যানেল থেকে সকলের সামনে নিয়ে আসি। তাই, এ গানের জন্য সাড়া বলি বা ভালোবাসা, অনেক আগে থেকেই পাচ্ছি এবং আশার কথা, সেগুলো সবটাই ইতিবাচক।
মৈনাক দার সঙ্গে একাধিক কাজ করেছেন কিন্তু এই গানের গীতিকার বা কম্পোসিশন যাদের, সকলের সঙ্গেই প্রথম কাজ করেছেন, আপনার নিজের অভিজ্ঞতা কেমন?
মৈনাকের সঙ্গে কাজ করার ক্ষেত্রে যেটা হয়, আমি সবসময় একটা আন্তরিকতা পাই ওর মধ্যে, যেটা আমার খুব ভালো লাগে। আর সৈকতের লেখা তো অসাধারণ, গানের প্রতিটা কথাই হৃদয়স্পর্শী। অমিত আর ঈশানের সঙ্গেও কাজ করার অভিজ্ঞতা চমৎকার। ঈশানের গান ব্যক্তিগতভাবে আমার খুবই পছন্দের। আমি ঈশানকে একজন ভোকালিস্ট আর অমিতকে একজন মিউজিশিয়ান হিসেবেই চিনতাম, কিন্তু ওরা যে দুজনে একসঙ্গে কম্পোসিশনও করে, সেটা জানতাম না। এই প্রথম কাজ করে ওদের সক্কলের সঙ্গে আমি ভীষণই খুশি।
"মিথ্যে প্রেমের গান" মূলত "ব্রেক আপ স্টোরি"র একটা অংশ। এই "ব্রেক আপ" শব্দটা আধুনিক সময়ে পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত শব্দ। হৃদয় - ভাঙার সমার্থক রূপে ব্যবহৃত। আপনি যেহেতু সঙ্গীত জগতের পাশাপাশি শিক্ষকতার সঙ্গেও যুক্ত, এই ওয়েব সিরিজ আর গান সম্পর্কে যুবসমাজের প্রতিক্রিয়া কিরকম দেখতে পাচ্ছেন?
সত্যি বলতে কি, "ভাঙন" তো আমাদের জীবনেরই অংশ। সেটার মানে এমন নয় যে, শুধু প্রেমিক প্রেমিকার ভাঙন; তা নানা সম্পর্কে হতে পারে। এটা তো আসলে "হিউম্যান ইমোশন"। এই মন খারাপ বা ব্রেক আপ বা ভাঙন, যাই বলি না কেন ,এই জাতীয় ইমোশনের মধ্যে দিয়ে আমরা সবাই গেছি কমবেশি। তাই, এই গানের কথাগুলো যখন কারোর জীবনের গল্পের সঙ্গে মিশে যাচ্ছে, তখনই তারা বলছে, "গানটা শুনে বড্ড মন খারাপ করছিল।" এখানেই তো মিউজিকের সার্থকতা যে সে মানুষের মনকে ছুঁয়ে যেতে পারছে।
বর্তমান বাংলা মৌলিক ও স্বতন্ত্র মিউজিক বা গানের কাজ কতখানি হচ্ছে বলে আপনার মনে হয়? আর তার মান সম্পর্কে আপনার মতামত কী?
দেখো, কাজ তো অবশ্যই হচ্ছে। তবে, আমার ব্যক্তিগতভাবে মনে হয়, আধুনিক প্রজন্ম যতটা গান কভারের দিকে মনোযোগী, স্বতন্ত্র বা মৌলিক কাজে অতটা হয়তো নয়। আর একটা বিষয় আমি লক্ষ্য করছি, আজকের এই সোশ্যাল মিডিয়ার দুনিয়ায় চটজলদি জনপ্রিয়তা পাওয়ার অমোঘ আকর্ষণে অনেক কাজেরই কিন্তু মান থাকছে না। যেমন, আমরা ছোট থেকে যেমনটা জেনে এসেছি, সঙ্গীত চর্চায় ঠিক কতটা প্রশিক্ষণ, নিয়মানুবর্তিতা, চর্চা, রেওয়াজ, তালিম জরুরি, সেগুলো কিন্তু বর্তমানে ওই অল্পেই জনপ্রিয়তার নেশায় হারিয়ে যাচ্ছে বলে আমার মনে হয়।
আচ্ছা, রবীন্দ্র সংগীতের আধুনিকীকরণের বিষয়ে আপনার মতামত কী?
দেখো, এই বিষয়ে আমার যে মত, তা খুবই স্ট্রং। আমি মনে করি, "Change is the only constant ...", পরিবর্তন যদি ভালো কিছুর জন্য হয়, আমার তাতে আপত্তি নেই। কিন্তু, আজ রবি ঠাকুরের কোনো দুঃখের গানের ব্যকগ্রাউন্ড হিসেবে যদি আনন্দের মিউজিক জুড়ে দেওয়া হয়, সেটা কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। তবে, অর্থ, সময় সবকিছুর সামঞ্জস্য বজায় রেখে যদি আধুনিকীকরণ করা হয়, তবে তাকে আমি সাধুবাদ জানাই।
আগামী দিনে আর কী কী কাজ আসছে আপনার?
অনেকগুলো কাজই করলাম পরপর , স্বতন্ত্র মিউজিকের কাজ তো চলছেই। আমার ইউটিউব চ্যানেল থেকে বছরে চারটি করে গান তো প্রকাশ পায়ই। এছাড়া, চিনেবাদাম, Love Marriage, পাকা দেখা,মায়া—এইসব একাধিক চলচ্চিত্রে গান গেয়েছি। যেগুলো আসতে আসতে আসছে।
আগামী দিনের জন্য অনেক শুভ কামনা রইল পরিদর্শকের পক্ষ থেকে।