করোনা অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ে সংক্রমণ রুখতে দেশজুড়ে বাতিল করা হয়েছে দশম ও দ্বাদশের ফাইনাল পরীক্ষা। অন্যান্য রাজ্য সরকারের পাশাপাশি সিবিএসই আগেই তাদের পরীক্ষা বাতিলের কথা ঘোষণা করেছিল। কিছুটা বিলম্বিত হলেও বিশেষ এক্সপার্ট কমিটির সিদ্ধান্ত এবং শেষে আমজনতার মতামতের প্রসঙ্গ এলে বঙ্গবাসীর নেতিবাচক ইমেলসমূহের দৌলতে পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তই গৃহীত হয়। এমতাবস্থায় মূল্যায়ণ কীভাবে হবে সে প্রশ্নই কার্যত ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যত নিশ্চয়তার প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে, যার উত্তর এখনো পর্যন্ত বিশ বাঁও জলে।
বিশ্ব মানচিত্রে বিশ্বভারতীর অবস্থান এই ভারতে এই বাংলার বীরভূম নামক একটি জেলার অন্দরে। সন্দেহাতীতভাবে বলা যায় যে করোনার করালথাবা থেকে এই স্থানও বঞ্চিত নয়। এবং একইভাবে বাংলার অন্যান্য প্রান্তের মতো এই প্রান্তেও সাড়ম্বরে 'ভয়ঙ্কর খেলা'র আমেজে ভোটপুজো উদযাপিত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে উপাচার্য থেকে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ - শিরোনামে এসেছেন বারংবার। আরও একবার সামনে এল বিশ্বভারতী। না, কোনো বিতর্ক উস্কে দিয়ে নয়, বরং দূরদর্শিতার প্রশ্নে কেন্দ্র তথা রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে নিঃশব্দে কিছু প্রশ্নের মুখে দাঁড় করিয়ে। হ্যাঁ, এখানে দশম ও দ্বাদশের পরীক্ষা হচ্ছে এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করেই তা হচ্ছে। আগামী ৫ই জুলাই থেকে ২০২১-এর পাঠভবন এবং শিক্ষাসত্রের প্রি ডিগ্রি পরীক্ষা শুরু হবে যা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সমতুল। লিখিত পরীক্ষা নেওয়া সম্ভবপর না হওয়ায় অনলাইনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মৌখিক পরীক্ষা সংঘটিত হতে চলেছে। মূল্যায়ণের জন্য নূন্যতম পরীক্ষাটুকু নেওয়া আবশ্যক মনে করেছে কর্তৃপক্ষ।
করোনা সংক্রমণ রুখতে চিরায়ত বসন্ত উৎসব ও ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা বাতিল হলেও ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবনের মূল্যায়ণ থেকে বঞ্চিত রাখতে শেখায়নি বিশ্বমানবতার রবিচ্ছটা - বিশ্বভারতী। ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে বিশ্বভারতীর এই উদ্যোগকে রেষারেষি বা রোষানলের উৎস নয়, বরং এক প্রকার শিক্ষা মনে করে রাজ্য তথা কেন্দ্র তাদের আগামী দিনের পদক্ষেপগুলির স্বচ্ছ্বতা ও দূরদর্শিতার বিষয়ে আরও ওয়াকিবহাল হবে, আশা রাখা যায়।