এবারে কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দি ভাষা নিয়ে চিঠি লেখার নির্দেশ দিল এই দেশের অন্যতম বড় বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর কাল্টিভেশন অফ সাইন্সকে। একটি নতুন বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে, এবার থেকে কেন্দ্রীয় সংস্থার যাবতীয় চিঠি লিখতে হবে হিন্দিতে। আর সেই নিয়েই শুরু বিতর্ক। সব মহল থেকেই প্রশ্নও, কলকাতার বুকে অবস্থিত একটি বিশ্বমানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কেনো হিন্দি ভাষা চালাতে হবে? এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিতর্ক চরমে। অনেকেই একে হিন্দি আগ্রাসন বলে আখ্যা দেওয়া শুরু করেছে। আবার, অনেকেই দাবি জানিয়েছেন, বাংলায় বাংলা ভাষাকেই গুরুত্ব দেওয়া বন্ধ করা হয়েছে।
এই নিয়ে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকরা তাজ্জব বনে গেছেন। প্রায় সকলের গলাতেই একই সুর। সকলেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মন্তব্য করা শুরু করেছেন। এর আগেও এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। IACS জানাচ্ছে, এই বিষয়টি তাদের রুটিনমাফিক এবং এর আগেও এই নিয়ে প্রসঙ্গ উঠেছে। ভোটের সময় এই ব্যাপারটি আরো বড়ো করে দেখা হচ্ছে বলেও তাদের মতামত। অন্যদিকে আবার বিজেপি নেতাদের বক্তব্য, এই সংস্থা স্বতন্ত্র সংস্থা, তাই সেটা নিয়ে বিজেপির কিছু বলার নেই। তবে তৃণমূল এই নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপিকে।
ব্রাত্য বসু বলেছেন, "এইভাবে বিজেপি ভারতের আঞ্চলিকতার ধ্বংস ডেকে আনছে। বিজেপির যে হিন্দি-হিন্দু-হিন্দুস্তান তত্ব আছে, সেই হিসাবে এখন আঞ্চলিক সব ভাষাকে মেরে ফেলতে চাইছে বিজেপি।" অবশ্য এই নিয়ে কেন্দ্রীয় এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জানাচ্ছে, সরকারি ভাষাকে মেনে নিয়ে তাদের কিছু কাজ করতে হয়। তাদের এই ফরমানে লেখা আছে, এই প্রতিষ্ঠানের সমস্ত চিঠিপত্রের ৫৫ শতাংশই হিন্দিতে লিখতে হবে। এমনকি, হিন্দিতে লেখা কোনও চিঠি পেলে, তার উত্তরও হিন্দীতেই দিতে হবে। নোট নিলে, তার ৩৩ শতাংশ করতে হবে হিন্দিতে। সমস্ত ফাইলের নাম হিন্দি এবং ইংরেজিতে থাকবে। ফাইলে প্রথমে হিন্দিতে, তার পর ইংরেজিতে সে নাম লিখতে হবে। সার্ভিস বুকে যা এন্ট্রি করা হবে, তার পুরোটাও হবে হিন্দিতে। এছাড়াও সব কাজকর্মে সই ওই ভাষাতেই করা বাধ্যতামূলক।
তবে এই প্রথম না, এর আগেও কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একাধিকবার সরব হয়েছেন অহিন্দি ভাষী রাজ্য। এর আগে তারা জানিয়েছেন, তাদের ওপরে জোর করে হিন্দি ভাষার 'বোঝা' চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও নোয়াপাড়া মেট্রোর সম্প্রসারণের কারণেও বিতর্ক দানা বাঁধে। এর আগে বরাহনগর এবং দক্ষিণেশ্বর স্টেশনের বোর্ডে স্টেশনের নাম হিন্দিতে বড় করে এবং বাংলায় ছোটো করে লেখা হয়। যদিও ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে পড়ে, পরে আবার এই বোর্ড পাল্টে দিয়েছিল রেল কর্তৃপক্ষ।