গুজরাটের বনাসকান্তের ভাদগাম তালুকের একটি ছোট্ট গ্রাম হাদিওল। পর্যটকদের নজরে না পড়লেও বেশ সুন্দর ও শান্তির আবাস এখানে। এই গ্রামের বিশেষত্ব হল গ্রামের হিন্দুরা তাদের মুসলিম ভাইদের সাথে একসাথে কোনো সমস্যা ছাড়াই বসবাস করেছে বছর বছর ধরে। তাদের মধ্যে নেই কোনো শত্রুতা বা খারাপ অনুভূতি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সেই প্রত্যন্ত মাটি সৌভ্রাতৃত্ব বহন করছে।
শুধু কি তাই, বর্তমানের রমজান মাসও কীভাবে তাঁরা একসঙ্গে পালন করেন, তা জানলে অবাক হয়ে যাবেন আপনি। সেই বিষয়ে জানাতে গিয়ে ভার্দাবীর মহারাজ মন্দিরের দলভাদা দেবস্থান ট্রাস্টের সেক্রেটারি রঞ্জিত হাদিওল বলেন, "যখন হিন্দু-মুসলিম বিভেদ চরমে ছিল, তখনও আমাদের গ্রাম ঐক্য এবং ধর্মীয় সহনশীলতার উদাহরণ তৈরি করেছিল। দশেরা, মহরম, দীপাবলি হোক বা ঈদ হোক না কেন, আমরা আমাদের উৎসবগুলি একসাথে উৎসাহের সাথে উদযাপন করি।"
হাদিওল এও জানান, গ্রামের বেশিরভাগ মুসলিম পরিবারের শিকড় পালানপুরের প্রাক্তন শাসকদের যারা নবাবদের বংশধর। ওই নবাবরাই মন্দির নির্মাণের জন্য জমি দান করেছিলেন। এই বছর গ্রামের সরপঞ্চ ভূপতসিংহ হাদিওল ইফতার পার্টির আয়োজন করেন এবং সন্ধ্যায় মন্দির চত্বরে সমস্ত মুসলিম ভাইদের তাদের রোজা উপবাস ভাঙতে আমন্ত্রণ করার প্রস্তাব দেন যা সমগ্র গ্রাম সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করে। সরপঞ্চ এও জানান, "আমরা আশেপাশের গ্রাম থেকেও মুসলিম বন্ধুদের আমন্ত্রণ জানিয়েছি এবং তাদের নামাজ পড়ার জন্য মন্দিরেই জায়গা দিয়েছি। এদিকে, মন্দিরে বীর মহারাজ যেমন নিয়মিত আরতি করেন তেমনই এখনো করেন।"